মসজিদ হলো পৃথিবীতে সর্বাধিক পবিত্র স্থান, যেখানে মুমিন বান্দারা সমবেত হয়ে তাদের প্রভুর সামনে নতজানু হয়, তাঁর মহিমা কীর্তন করে এবং তাঁর অফুরন্ত রহমত লাভ করে। রাসুল (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় স্থান হলো মসজিদসমূহ এবং সর্বাধিক অপছন্দনীয় স্থান হলো বাজারসমূহ।’ (মুসলিম: ১৪১৪)
মসজিদের এই মহিমাই আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের সর্বদা আকর্ষণ করে। তাদের হৃদয় সদা মসজিদের দিকে ধাবমান হয়, প্রত্যেক নামাজের জন্য তারা অধীর আগ্রহে মুয়াজ্জিনের ডাকের প্রতীক্ষায় থাকেন। মসজিদেই তারা খুঁজে পান প্রকৃত প্রশান্তি। আল্লাহর ঘরে প্রবেশ করামাত্র তাদের চিত্ত প্রফুল্ল হয়ে ওঠে, যা তাদের ইবাদতের একাগ্রতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
বিজ্ঞাপন
কেয়ামতের দিন বিশেষ মর্যাদা
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যেদিন আল্লাহর (আরশের) ছায়া ছাড়া কোনো ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ তাঁর ছায়ায় আশ্রয় দেবেন... (তাদের মধ্যে একজন হলেন) সেই ব্যক্তি, যার হৃদয় সর্বদা মসজিদের সাথে লেগে থাকে।’ (বুখারি: ৬৬০)
আরও পড়ুন: কেয়ামতের দিনটি কেমন হবে
মসজিদ নির্মাণকারীর জন্য জান্নাতের প্রাসাদ
মসজিদ নির্মাণের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের ঘোষণাও দিয়েছেন রাসুল (স.)। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ একটি প্রাসাদ তৈরি করেন।’ (ইবনে মাজাহ: ৭৩৬)
প্রতিদিনের যাতায়াতের অফুরন্ত সওয়াব
প্রতিদিন মসজিদে যাওয়া-আসার প্রতিটি পদক্ষেপের মধ্যেও লুকিয়ে আছে অশেষ সওয়াব। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পবিত্র অবস্থায় (ওজু করে) ফরজ নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে রওনা হয়, তার প্রতিটি কদমে একটি করে গুনাহ মোচন হয় এবং একটি করে নেকি বৃদ্ধি পায়।’ (মুসলিম: ১৪০৭)
আরও পড়ুন: দিনশেষে আল্লাহর তালিকায় শ্রেষ্ঠ যারা
আল্লাহর বিশেষ সন্তুষ্টি
মসজিদে অবস্থান ও ইবাদত-বন্দেগিতে রত থাকা আল্লাহর দরবারে অত্যন্ত প্রিয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য একটি হাদিসে নবীজি (স.) বলেন, ‘যতক্ষণ কোনো মুসলিম নামাজ ও জিকিরের মাধ্যমে মসজিদে অবস্থান করে, ততক্ষণ আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন; যেমন কোনো প্রবাসী তার পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরলে তারা আনন্দিত হয়।’ (ইবনে মাজাহ: ৮০০)
হে আল্লাহ! আমাদের হৃদয়ে মসজিদের জন্য অগাধ ভালোবাসা ও টান সৃষ্টি করে দিন। কেয়ামতের ভয়াবহ দিনে যাদেরকে আপনি আপনার আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন, আমাদেরকে তাদের দলভুক্ত করুন। আমিন।

