সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

কোরবানি করতে ইচ্ছুকরা নখ-চুল কাটার সময় পাচ্ছেন কতক্ষণ?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২২, ১১:০১ এএম

শেয়ার করুন:

কোরবানি করতে ইচ্ছুকরা নখ-চুল কাটার সময় পাচ্ছেন কতক্ষণ?

জিলহজ মাস শুরু হওয়ার আগে নখ, চুল, গোঁফ, বোগল-নাভির পশম ইত্যাদি কেটে নেওয়া উচিত। কেননা জিলহজ শুরু হলে এসব কাটা থেকে বিরত থাকা সুন্নত ও মোস্তাহাব আমল।  বিশেষ করে যারা কোরবানি করার সংকল্প করেছেন, তাদের উদ্দেশ্য করে নবীজি (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির কাছে কোরবানির পশু আছে সে যেন জিলহজের নতুন চাঁদ দেখার পর থেকে কোরবানি করা পর্যন্ত তার চুল ও নখ না কাটে।’ (মুসলিম: ৪৯৫৯, আবু দাউদ: ২৭৮২) 

এক দল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, এ কাজটি ওয়াজিব। তবে রাসুল (স.)-এর নির্দেশনা থেকে বোঝা যায় যে, কাজটি গুরুত্বপূর্ণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সুতরাং, যারা কোরবানি করবেন তাদের জন্য উত্তম হলো তারা চুল, দাড়ি, গোঁফ এবং নখ কোরবানি হওয়ার আগ পর্যন্ত কাটবেন না। কোরবানি হওয়ার পর এগুলো কাটা জায়েজ রয়েছে।


বিজ্ঞাপন


মধ্যপ্রাচ্যে বুধবার (২৯ জুন) জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। বাংলাদেশের আকাশে যদি বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) চাঁদ দেখা যায়, তাহলে মাগরিবের সময় হলেই নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কাটার সময় শেষ হয়ে যাবে। 

যারা কোরবানি করতে সক্ষম নয় তারাও এই আমল পালন করতে পারে। অর্থাৎ নিজের চুল, নখ, গোঁফ ইত্যাদি কাটা থেকে বিরত থাকবে। কেননা কোনো অসচ্ছল লোক যদি এ দিনগুলোতে চুল, নখ, গোঁফ ইত্যাদি না কেটে ঈদের দিন কাটে, তবে তাদের পূর্ণ কোরবানির সওয়াব দেওয়া হবে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, আমি কোরবানির দিন সম্পর্কে আদিষ্ট হয়েছি। আল্লাহ তাআলা তা এই উম্মতের জন্য ঈদ হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। এক ব্যক্তি আরজ করল, হে আল্লাহর রাসুল, যদি আমার কাছে শুধু একটি মানিহা থাকে অর্থাৎ যা শুধু দুধপানের জন্য দেওয়া হয়েছে? আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, না; বরং সেদিন তুমি তোমার চুল কাটবে, নখ কাটবে, গোঁফ ও নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করবে। এটিই আল্লাহর কাছে তোমার পূর্ণ কোরবানি বলে গণ্য হবে। (মুসনাদে আহমদ: ৬৫৭৫)

উক্ত হাদিসে রাসুল (স.) কোরবানি করতে অক্ষম ব্যক্তিরাও যেন সচ্ছল মুসলমানদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ও খুশি উদ্‌যাপনে অংশীদার হতে পারে, সেই রাস্তা বাতলে দিয়েছেন। তারা এই ছোট্ট আমলটির মাধ্যমেও পরিপূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে। অনুরূপভাবে হাজিদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী হিসেবে গণ্য হবে। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, মহান আল্লাহ ঈদের দিনে তাঁর কোনো বান্দাকেই নৈরাশ করেননি।


বিজ্ঞাপন


তবে, যারা কোরবানি করবে না, তাদেরকে নখ, চুল ইত্যাদি কাটতে নিষেধ করা হয়নি। এ প্রসঙ্গে শাইখ বিন বায (রহ) বলেন, আলেমগণের বিশুদ্ধ মতানুযায়ী, ‘তারা চুল কাটা ও নখ কাটার নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই। হুকুমটি কোরবানিকারীর জন্য খাস, যিনি তার সম্পদ থেকে কোরবানির পশুটি ক্রয় করেছেন।’ (ফতোয়ায়ে ইসলামিয়্যা: ২/৩১৬)

বি:দ্র: বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় সভায় বসবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। এদিন ১৪৪৩ হিজরি সনের চাঁদ দেখা গেলে শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে জিলহজ মাস গণনা শুরু হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে আগামী ১০ জুলাই (১০ জিলহজ) ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে পারে। আর চাঁদ দেখা না গেলে শুক্রবার জিলকদ মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে এবং শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে জিলহজ মাস গণনা শুরু হবে। সেক্ষেত্রে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে ১১ জুলাই।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর