রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মদিনায় নবীজির (স.) আগমন ও প্রথম জুমা

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৫৩ পিএম

শেয়ার করুন:

মদিনায় নবীজির (স.) আগমন ও প্রথম জুমা
প্রতীকী ছবি

ইসলামের ইতিহাসে প্রথম হিজরির ৮ রবিউল আউয়াল (২৩ সেপ্টেম্বর, ৬২২ খ্রি.) দিনটি এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক। এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনার উপকণ্ঠ কুবায় পৌঁছান। তাঁর আগমনের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে মদিনাবাসীরা তাঁকে বরণ করে নেন। আনন্দের জোয়ারে পুরো শহর মুখরিত হয়ে ওঠে। বনু আমর বিন আউফ গোত্রের লোকজন তাঁকে তাকবির ধ্বনির মাধ্যমে স্বাগত জানান।

নবীজি (স.) কুবায় কুলসুম বিন হিদাম (রা.)-এর ঘরে অবস্থান করেন এবং এখানেই ইসলামের প্রথম মসজিদ, ‘মসজিদে কুবা’, ভিত্তি স্থাপন করেন। এই মসজিদটি ছিল তাকওয়ার ভিত্তিতে নির্মিত।


বিজ্ঞাপন


কুবা পল্লীতে কয়েক দিন অবস্থানের পর তিনি শুক্রবারের দিন মদিনার উদ্দেশে যাত্রা করেন। পথে যখন তিনি বনু সালিম গোত্রের উপত্যকায় পৌঁছান, তখন জোহরের সময় হয়। সেখানেই তিনি জোহরের পরিবর্তে জুমার সালাত আদায় করেন। এটি ছিল ইসলামের ইতিহাসে প্রথম জুমার সালাত। পরবর্তীতে সেই স্থানে একটি মসজিদ নির্মিত হয়, যার নাম ‘মসজিদে জুমা’ বা ঐতিহাসিকভাবে ‘মসজিদে আতিকা’।

আরও পড়ুন: জুমার খুতবা কি দুই রাকাত নামাজের সমতুল্য?

প্রথম জুমার খুতবা

ওই দিন মহানবী (স.) যে খুতবা দেন, সেটিই ছিল ইসলামের ইতিহাসের প্রথম জুমার খুতবা। ইসলামি শরিয়তে জুমার নামাজের জন্য খুতবা একটি অপরিহার্য শর্ত। খুতবার সময় কথা বলা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘জুমার দিন খুতবার সময় যদি তুমি তোমার সঙ্গীকে বলো, ‘চুপ করো’, তবে তুমি অনর্থক কথা বললে।’ (সহিহ বুখারি, ১/১২৮)


বিজ্ঞাপন


ঐতিহাসিক সেই খুতবায় নবীজি (স.) বলেন

‘সব মহিমা ও প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য। আমরা তাঁরই প্রশংসা করি, তাঁর কাছে সাহায্য চাই, তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি... আমি তোমাদের তাকওয়ার উপদেশ দিচ্ছি। এটাই সর্বোত্তম উপদেশ। তাকওয়া হলো পরকালের জন্য সর্বোত্তম প্রস্তুতি।’ (সূত্র: আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া: ৩/২১৩)

তিনি তাঁর ভাষণে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের গুরুত্ব, তাকওয়ার অপরিহার্যতা এবং পরকালের জন্য প্রস্তুতির ওপর জোর দেন।

মদিনায় নবীজির (স.) এই ঐতিহাসিক আগমন এবং প্রথম জুমার খুতবা মুসলিম উম্মাহর জন্য ঐক্য, তাকওয়া ও নৈতিকতার এক মজবুত ভিত্তি স্থাপন করে। এখান থেকেই মদিনা একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামি সভ্যতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর