সন্তানের কাছে সবচেয়ে প্রিয়জন তার বাবা-মা। তাদের নিঃস্বার্থ যত্ন ও ভালোবাসায় সন্তান বড় হয়। পৃথিবীর কোনো পরিমাপক যন্ত্র দিয়ে এই ভালোবাসা নির্ণয় করা সম্ভব না। নিজে ভালোমতো না খেয়ে, ভালো পোশাক পরিধান না করে সন্তানের কল্যাণে ছায়ার মতো লেগে থাকেন মা-বাবা। এমন দরদিরা যখন চিরদিনের জন্য বিদায় নেন, তাদের জন্য অনেক কিছুই করার থাকে সন্তানের। কবরে তাদের প্রশান্তির জন্য, মাগফিরাতের জন্য স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। যেমন—
رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
‘রাব্বির হামহুমা কামা রব্বায়ানি সগীরা’
অর্থাৎ “হে আমার রব, তাদের উভয়ের প্রতি রহম করো, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন’। (সুরা বনি ইসরাইল: ২৪)
পবিত্র কুরআনে আরো বর্ণিত হয়েছে—
رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ
‘রাব্বানাগ ফিরলী ওয়াল ওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মু’মিনীনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব’
অর্থাৎ ‘হে আমাদের রব, রোজ কেয়ামতে আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সকল মুমিনকে ক্ষমা করে দিন’। (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
বিজ্ঞাপন
এছাড়া আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মা-বাবার জন্য দোয়া করার বিশেষ নিয়ম শিক্ষা দিতে গিয়ে বলেন-
رَبِّ اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيْتِيَ مُؤْمِنًا وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَلَا تَزِدِ الظَّالِمِينَ إِلَّا تَبَارًا
‘রাব্বিগফিরলী ওয়াল ওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মু’মিনান ওয়ালিল মু’মিনীনা ওয়াল মু’মিনাতি ওয়ালা তাঝিদিজ জোয়ালিমীনা ইল্লা তাবারা’
অর্থাৎ ‘হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন এবং ধ্বংস ছাড়া আপনি জালেমদের আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না’। (সুরা নূহ: ২৮)
মা-বাবার দায়িত্ব
যারা কোরআন অনুযায়ী আমল করে না, ইসলামকেই মানতে চায় না—ওসব হতভাগারা না করবে নিজের জন্য নেক আমল, না জানবে মা-বাবার জন্য দোয়া করার নিয়ম। তাই প্রত্যেক মা-বাবার উচিত- সন্তানকে সুসন্তান হিসেবে গড়ে তোলা। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে ৩টি আমল বন্ধ হয় না- ১. সদকায়ে জারিয়া ২. এমন জ্ঞান-যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় ৩. এমন নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে। (সহিহ মুসলিম: ৪৩১০)
মা-বাবার জন্য সদকা করা
আয়েশা (রা.) বলেন- ‘এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে এসে বললেন—
হে আল্লাহর রাসুল! আমার মা হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেছেন। কোনো অছিয়ত করতে পারেননি। আমার ধারণা তিনি যদি কথা বলার সুযোগ পেতেন, তাহলে দান-সদকা করতেন। আমি তাঁর পক্ষ থেকে সদকা করলে তিনি কি এর সওয়াব পাবেন? রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন হ্যাঁ, অবশ্যই পাবেন।” (মুসলিম: ২৩৭৩)
তবে উত্তম হবে, সদকায়ে জারিয়া বা চলমান সদকা করা। যেমন- নলকূপ বসানো, দ্বিনি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা, কোরআন শিক্ষার জন্য মক্তব ও প্রতিষ্ঠান তৈরি, স্থায়ী জনকল্যাণমূলক কাজ করা ইত্যাদি।
রোজা রাখা
সন্তান মা-বাবার কাজা রোজা রাখলে, তাদের পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায়। আয়েশা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন- ‘যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করল এমন অবস্থায় যে, তার উপর রোজা ওয়াজিব ছিল। তাহলে তার পক্ষ থেকে তার ওয়ারিশগণ রোজা রাখবে’। (বুখারি: ১৯৫২)
ওমরা করা
মা-বাবার পক্ষ থেকে ওমরা করলেও তারা উপকৃত হবেন। এ প্রসঙ্গে ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে—
‘জুহাইনা গোত্রের এক মহিলা রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে আগমণ করে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার মা হজ করার মানত করেছিলেন, কিন্তু তিনি হজ সম্পাদন না করেই মারা গেছেন। এখন আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ আদায় করতে পারি? রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন, 'তুমি তোমার মায়ের পক্ষ থেকে হজ কর। তুমি কি মনে কর যে, তোমার মায়ের উপর ঋণ থাকলে, তুমি তা আদায় করতে না? সুতরাং আল্লাহর হক আদায় করে দাও। কেননা আল্লাহর হকই সবচেয়ে বেশি আদায়যোগ্য। (বুখারি: ১৮৫২)
তবে মা-বাবার পক্ষ থেকে যে হজ বা ওমরা করতে চায়, তার জন্য শর্ত হলো—আগে নিজের হজ-ওমরা শেষ করা।
কোরবানি করে সওয়াব পাঠানো যায়
আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) এমন একটি শিংযুক্ত দুম্বা উপস্থিত করতে নির্দেশ দিলেন, যার পা কালো, চোখের চতুর্দিক কালো এবং পেট কালো। অতঃপর তা কোরবানির জন্য আনা হলো। তখন রাসুলুল্লাহ (স.) আয়েশাকে (রা.) বললেন, হে আয়েশা! ছুরি নিয়ে আস, তারপর বললেন, তুমি একটি পাথর নিয়ে এটাকে ধারালো করো। তিনি তাই করলেন। তারপর রাসুলুল্লাহ (স.) ছুরি হাতে নিয়ে দুম্বাটিকে শুইয়ে দিলেন। পশুটি জবাই করার সময় বললেন, বিসমিল্লাহ, হে আল্লাহ তুমি এটি মুহাম্মদ, তাঁর বংশধর এবং সকল উম্মতে মুহাম্মাদির পক্ষ থেকে কবুল করো”। ( সহিহ মুসলিম: ৫২০৩)
মা-বাবার ঋণ পরিশোধ করা
এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কোনো ঋণ থাকলে, তা দ্রুত পরিশোধ করা সন্তানদের ওপর বিশেষভাবে কর্তব্য। রাসুলুল্লাহ (স.) ঋণ পরিশোধ করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘মুমিন ব্যক্তির আত্মা তার ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে যায়, যতক্ষণ তা তার পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হয়”। (ইবনে মাজাহ: ৪১৩)
ঋণ পরিশোধ না করার কারণে জান্নাতে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ‘যতক্ষণ পর্যন্ত বান্দার ঋণ পরিশোধ না করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। (নাসায়ি: ৭/৩১৪; তাবরানী ফিল কাবীর ১৯/২৪৮; মুস্তাদরাকে হাকিম ২/২৯)
শপথের কাফফারা
মা-বাবার শপথের, ভুলকৃত হত্যাসহ কোনো কাফফারা বাকি থাকলে সন্তান তা পূরণ করবে। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি ভুলক্রমে কোনো মুমিনকে হত্যা করবে, তাহলে একজন মুমিন দাসকে মুক্ত করতে হবে এবং দিয়াত (রক্তপণ দিতে হবে) যা হস্তান্তর করা হবে তার পরিজনদের কাছে। তবে তারা যদি সদকা (মাফ) করে দেয়, (তাহলে তা ভিন্ন কথা)। (সুরা আন-নিসা: ৯২)
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি শপথ করার পর তার চেয়ে উত্তম কিছু করলেও কাফফারা অদায় হয়ে যাবে’। (সহিহ মুসলিম: ৪৩৬০)
এ বিধান জীবিত ও মৃত সবার ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য। দুনিয়ার বুকে কেউ অন্যায় করলে, তার কাফফারা দিতে হবে। অনুরূপভাবে কেউ অন্যায় করে মারা গেলে, তার পরিবার-পরিজন মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কাফফারা প্রদান করবেন।
ওয়াদা করে গেলে বাস্তবায়ন করা
মা-বাবা কারো সঙ্গে কোনো ভালো কাজের ওয়াদা করে গেলে বা এমন ওয়াদা যা তারা বেঁচে থাকলে করে যেতেন, সন্তান যথাসম্ভব তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে। কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে, আর তোমরা অঙ্গীকার পূর্ণ কর, নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (সুরা বনি ইসরাঈল: ৩৪)
ক্ষমা প্রার্থনা করা
সন্তান মা-বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘মানুষের মৃত্যুর পর তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। তখন সে বলে, হে প্ৰভু! এটা কী জিনিস? তাকে বলা হয়, তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছে’। (আল-আদাবুল মুফরাদ: ৩৬)
মানত পূরণ করা
মা-বাবা কোনো মানত করে গেলে, সন্তান তার পক্ষ থেকে পূরণ করবে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে—
‘কোনো মহিলা রোজা রাখার মানত করেছিল, কিন্তু সে তা পূরণ করার আগেই মৃত্যুবরণ করল। এরপর তার ভাই এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর নিকট আসলে তিনি বললেন, তার পক্ষ থেকে সিয়াম পালন করো। (সহিহ ইবনে হিববান: ২৮০)
নফল নামাজ আদায় করা
সন্তান মৃত মা-বাবার জন্য নফল নামাজও আদায় করতে পারে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! জীবদ্দশায় আমি আমার মা-বাবার আনুগত্য করি। তাঁদের মৃত্যুর পর আমি তাঁদের আনুগত্য কীভাবে করব? তিনি বলেন, মৃত্যুর পর তাদের আনুগত্য হলো, তুমি নামাজ পড়ার সময় তাদের জন্য নামাজ পড়বে এবং তুমি রোজা রাখার সময় তাদের জন্য রোজা রাখবে। ’ (আওজাজুল মাসালিক ইলা মুয়াত্তা মালিক: পৃষ্ঠা ২৬৭)
কবর জিয়ারত করা
রাসুলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত মদিনার ‘বাকি’ কবরস্থান জিয়ারত করতেন। মৃত আপনজন, আত্মীয়-স্বজন ও সাহাবিদের জন্য দোয়া করতেন। চলার পথে কোনো কবর বা কবরস্থান পড়লেও মৃত ব্যক্তিদের জন্য দোয়া করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (স.) মদিনার একটি কবরস্থান অতিক্রম করার সময় তার দিকে ফিরে বলেন—
‘হে কবরবাসী! তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের মাফ করে দিন। তোমরা আমাদের অগ্রগামী, আমরা তোমাদের পদাঙ্ক অনুসারী। ’ (সুনানে তিরমিজি: ১০৫৩)
মা-বাবার কবর জিয়ারতে সন্তান ও মা-বাবা দু’পক্ষই উপকৃত হবে। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আমি তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, অতঃপর মুহাম্মদের মায়ের কবর জিয়ারতের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এখন তোমরা কবর জিয়রাত করো, কেননা তা আখিরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয় (তিরমিজি: ১০৫৪)।
কবর জিয়ারতের জন্য কোনো দিনকে নির্দিষ্ট করার বিধান নেই। বরং যখন খুশি, তখন করা যাবে। কবর জিয়ারতের সময় হাদিসে বর্ণিত এ দোয়া পড়বে-
- اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَ الْمُسْلِمِيْنَ وَ اِنَّا اِنْ شَاءَ اللهُ بِكُمْ لَلَاحِقُوْنَ
‘আসসালামু আলাইকুম দারা ক্বাওমিম মুমিনিনা ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লাহিকুন।’
অর্থাৎ ‘কবরবাসী মুমিন-মুসলিম আপনাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। নিশ্চয় আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলিত হবো। (সহিহ মুসলিম, ইবনে মাজাহ: ১৫৪৭)
এছাড়া দরুদ শরিফ, সুরা ফাতিহা, সুরা ইখলাস ও আয়াতুল কুরসি পড়ে দোয়া করা উত্তম।
মা-বাবার ভালো কাজগুলো জারি রাখা
তারা যেসব ভালো কাজ অর্থাৎ মসজিদ-মাদরাসা তৈরি করা, দ্বিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরিসহ যে কাজগুলো করে গেছেন, সন্তান হিসেবে তা যাতে অব্যাহত থাকে, তার ব্যবস্থা করা। কেননা এসব ভালো কাজের সওয়াব তাদের আমলনামায় যুক্ত হতে থাকে। হাদিসে এসেছে, ‘ভালো কাজের পথপ্রদর্শনকারী এ কাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ সাওয়াব পাবে’ (তিরমিজি: ২৬৭০)। অন্য বর্ণনায় এসেছে—
যে ব্যক্তি ইসলামের ভালো কাজ শুরু করল, সে এ কাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ সাওয়াব পাবে, তাদের সওয়াব থেকে কোনো কমতি হবে না’। (সহিহ মুসলিম: ২৩৯৮)
মা-বাবার গুনাহের কাজগুলো বন্ধ করা
কোনো গুনাহের কাজ করে গেলে তা বন্ধ করতে হবে সন্তানদের। মা-বাবা বেঁচে থাকতে কোনো গুনাহের কাজের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে তা বন্ধ করবে বা শরিয়তসম্মতভাবে সংশোধন করে দেবে। কেননা, আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লহ (স.) বলেছেন, ..এবং যে মানুষকে গুনাহের দিকে আহ্বান করবে, এ কাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ গুনাহ তার আমলনামায় যুক্ত হতে থাকবে। অথচ তাদের গুনাহ থেকে কোনো কমতি হবে না। (সহিহ মুসলিম: ৬৯৮০)
জুলুম করে গেলে মা-বাবার পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা
মা-বাবা বেঁচে থাকতে কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ বা কারো ওপর জুলুম করে থাকলে, মা-বাবার পক্ষ থেকে তার কাছ থেকে মাফ চেয়ে নেবে অথবা ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবে। কেননা রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন—
তোমরা কি জানো নিঃস্ব ব্যক্তি কে? সাহাবীগণ বললেন, আমাদের মধ্যে যার সম্পদ নেই, সে হলো গরিব লোক। তখন তিনি বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে সে হলো গরিব, যে কেয়ামতের দিন নামাজ, রোজা ও জাকাত নিয়ে আসবে, অথচ সে অমুককে গালি দিয়েছে, অমুককে অপবাদ দিয়েছে, অন্যায়ভাবে লোকের মাল খেয়েছে, লোকের রক্ত প্রবাহিত করেছে এবং কাউকে প্রহার করেছে। কাজেই এসব নির্যাতিতদেরকে সেদিন তার নেক আমলনামা দিয়ে দেয়া হবে এবং তাকে জাহান্নামে নিপে করা হবে। (তিরমিজি: ২৪২৮)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেককে মা-বাবার খেদমত করে তাদের চক্ষু শীতল করার তাওফিক দিন। মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের জন্য সুন্নাহভিত্তিক আমলগুলো করার তাওফিক দান করুন। আমিন।