মহান আল্লাহর দয়া অসীম। তিনি তাঁর অবাধ্য বান্দাদেরও রহম করেন। তবে, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ভালোবাসার নজির স্থাপন করেছেন, পরকালীন শাস্তির ভয়ে কাতর ছিলেন, পরিপূর্ণ ঈমানের সঙ্গে নেক আমলের প্রতি সচেষ্ট ছিলেন, তাদেরকে আল্লাহ অনেক ভালোবাসেন এবং তাদের কল্যাণের ইচ্ছা করেন। হাদিসে এসেছে, তিনি কোনো কোনো বান্দাকে মৃত্যুর আগে যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে পবিত্র করে নেন। কিন্তু কীভাবে পবিত্র করেন? এর উত্তর নিচের হাদিস থেকে জেনে নিই।
রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো বান্দার কল্যাণের ইচ্ছা করেন, তাকে মৃত্যুর আগে পবিত্র করেন। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, পবিত্র করেন কীভাবে? তিনি বললেন, মৃত্যুর আগে তাকে নেক আমলের তাওফিক দেন। অতঃপর তার উপর তার মৃত্যু ঘটান’। (সহিহুল জামে: ৩০৬)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে ‘আল্লাহ যখন কোনো বান্দার কল্যাণ চান, সেই বান্দাকে সুমিষ্ট করেন। জিজ্ঞেস করা হলো সুমিষ্ট কী? তিনি বললেন, মৃত্যুর আগে ভালো কাজ তার জন্য উন্মুক্ত করে দেন। অতঃপর এর উপরই তার মৃত্যু হয়’। (আহমদ: ১৭৮১৯; সহিহ ইবনে হিববান: ৩৪২; সহিহাহ: ১১১৪)
আনাস (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা যখন তাঁর বান্দা সম্পর্কে কল্যাণের ইচ্ছা করেন, তখন তাকে আমল করতে দেন। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল (স.)! কীভাবে তিনি আমল করতে দেন? তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে তিনি তাকে নেক আমলের তাওফিক দান করেন’। (তিরমিজি: ২১৪২; মেশকাত: ৫২৮৮)
পবিত্র করার আরেকটি অর্থ হতে পারে তওবা-ইস্তেগফারের সুযোগ দেওয়া। অর্থাৎ আল্লাহ যার কল্যাণ চান সে ব্যক্তি তওবার সুযোগ পায়। আর তিনি তওবা কবুলকারী। মহান আল্লাহ বলেন, وَاللهُ يُرِيدُ أَنْ يَتُوبَ عَلَيْكُمْ ‘আর আল্লাহ চান তোমাদের তওবা কবুল করতে।’ (নিসা: ২৭)
কোনো কোনো বর্ণনায় দেখা যায়, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা যার কল্যাণ চান, তাকে দীনের প্রজ্ঞা দান করেন। আল্লাহই দানকারী আর আমি বণ্টনকারী।’ (বুখারি: ৭১; মুসলিম: ১০৩৭; মেশকাত: ২০০)
বিজ্ঞাপন
উপরোক্ত কোনো বর্ণনাতে আসলে বৈপরীত্য নেই। নেক আমলের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে তওবা-ইস্তেগফার আর দীনের জ্ঞান জড়িত। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে দীনের সঠিক জ্ঞান অর্জন ও নেক আমলের মাধ্যমে তাঁর ভাগ্যবান বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আমিন।