শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

রোজা শরীরের জাকাত

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

রমজানে অবহেলাকারীসহ ৩ ব্যক্তির ধ্বংস চাইলেন জিবরাইল, নবীজি বললেন আমিন

সম্পদের জাকাতের মতো শরীরেরও জাকাত রয়েছে। সম্পদের জাকাতে সম্পদ পবিত্র হয়, আর দেহের জাকাতে দেহের পবিত্রতা লাভ হয়। শরীরের জাকাত প্রসঙ্গে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক বস্তুর জাকাত আছে। রোজা হলো শরীরের জাকাত।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৭৪৫)

মূলত রোজা এমন এক শারীরিক ইবাদত, যায় সঙ্গে অন্যকোনো ইবাদতের তুলনা হয় না। রোজার সওয়াব এত বেশি যে, যেকোনো নেক আমলের সওয়াব ৭০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার পরও স্বয়ং আল্লাহ তাআলা রোজাদারকে বিশেষ পুরস্কার দেবেন। মহানবী (স.) বলেছেন, আদমসন্তানের প্রতিটি নেক আমলের বিনিময় ১০ গুণ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয় এবং ফেরেশতার মাধ্যমে তা প্রদান করা হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তবে রোজা এর ব্যতিক্রম। কেননা রোজা একমাত্র আমার জন্যই রাখা হয়, আর আমিই এর প্রতিদান প্রদান করব।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত: ১৮৬৩)


বিজ্ঞাপন


রমজান রহমতের মাস, নাজাতের মাস, ক্ষমা লাভের মাস। রমজান পেয়েও যারা ক্ষমা পেল না, তাদের মতো হতভাগা আর কেউ নেই। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘ওই ব্যক্তির নাক ধুলাধূসরিত হোক যে রমজান পেল এবং তার গুনাহ মাফ করার আগেই তা বিদায় নিল।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৫৪৫)

আরও পড়ুন: যাদের রোজা কোনো কাজে আসে না

রমজানের একটি রোজা মিস হওয়া মানে জীবনে বড় একটি দাগ লেগে যাওয়া, যে দাগ কখনও মুছে যাবে না। হাদিস শরিফে এসেছে ‘যে ব্যক্তি কোনো ওজর বা অসুস্থতা ব্যতিরেকে রমজানের একটি রোজা পরিত্যাগ করবে সে যদি ওই রোজার পরিবর্তে আজীবন রোজা রাখে তবুও ওই এক রোজার ক্ষতি পূরণ হবে না।’ (জামে তিরমিজি: ৭২৩)

রমজানের রোজার মূল উদ্দেশ্য আল্লাহভীতির গুণ অর্জন করা। কারণ এই গুণ ছাড়া সফলতার আশা করা যায় না। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজার বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া (আল্লাহভীরুতা) অবলম্বন করতে পারো। (সুরা বাকারা: ১৮৩)


বিজ্ঞাপন


তাই রোজা রেখে অযথা কথা-কাজ, গিবত, বিভিন্ন পাপাচার, মিথ্যা কথা, নাচ-গান করা, ধোঁকা দেওয়া, ব্যবসায় অধিক মুনাফা অর্জনের চেষ্টা, অপরের সম্পদ হরণের চেষ্টা, আল্লাহ ও বান্দার হক নষ্ট করা, হারাম উপার্জন, অপচয়-অপব্যয়, মা-বাবার সঙ্গে অসদাচরণ, প্রতিবেশীর খোঁজ না রাখা ইত্যাদি তাকওয়া পরিপন্থী কাজ। এসব থেকে দূরে থাকতে হবে। রাসুলুল্লাহ (স.) সতর্ক করে বলেন, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে যে, তাদের রোজা থেকে উপোস ছাড়া আর কিছুই অর্জিত হয় না। আর অনেক রাত জেগে ইবাদতকারী এমন আছে যে, তাদের সে ইবাদত থেকে রাত জাগরণ ছাড়া আর কিছুই থাকে না।’ (মেশকাত: ১১৭)

তাই রোজা পালনের সময়টি সতর্কতার সঙ্গে অতিবাহিত করতে হবে। রোজার হকগুলো যথাযথভাবে আদায় করতে হবে এবং অশ্লীলতা ও পাপাচার থেকে দূরে থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সিয়াম সাধনের মাসে নিজেকে শুধরানোর তাওফিক দান করুন। রমজানের সবগুলো রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। শরীরের হক যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর