সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

কোন দোয়ায় কেবলামুখী হবেন?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ জুন ২০২২, ০৮:৪৪ এএম

শেয়ার করুন:

কোন দোয়ায় কেবলামুখী হবেন?

দোয়া আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের সহজ মাধ্যম। দোয়া না করলে আল্লাহ তাআলা তার ওপর অসন্তুষ্ট হন। দোয়ার মাধ্যমে শুধু সমস্যার সমাধানই নয়, অগণিত সওয়াবও অর্জিত হয়। দাঁড়ানো, শোয়া ও বসা অবস্থায়, অজুহীন অবস্থায়ও দোয়া-জিকির করার অবকাশ আছে। তবে কেবলার দিকে মুখ করে দোয়া করা উত্তম। 

হাদিসে কেবলামুখী হয়ে দোয়া করার অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে এবং রাসুলুল্লাহ (স.) বিভিন্ন সময় দোয়া করার জন্য কেবলামুখী হয়েছেন বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। যুদ্ধের ময়দানে আল্লাহর সাহায্যের জন্য, বৃষ্টির জন্য, আরাফা, মুজদালিফা ও অন্যান্য স্থানে দোয়ার সময়, বিশেষ আবেগ ও বেদনার সময়, কোনো সাহাবির জন্য দোয়া করার সময় রাসুলুল্লাহ (স.) ঘুরে কেবলামুখী হয়ে দোয়া করেছেন। (মুসলিম: ২/৬১১, হাদিস: ৮৯৪; মুসতাদরাক হাকিম: ৩/৫৭১; বায়হাকি, আস-সুনানুল কুবরা: ৩/৩৫০;  আবু দাউদ: ১/৩০৩; নাসায়ি: ৫/২১৩; মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবা: ৬/৪৯; আহমদ: ১/৩০, ২/২৩৪)


বিজ্ঞাপন


সাধারণত সর্বাবস্থায় কেবলামুখী হয়ে দোয়া করার জন্য হাদিসে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক বিষয়ের নেতা আছে, বসার নেতা কেবলামুখী হওয়া।’ (তাবারানি, আল মু’জামুল আউসাত: ৩/২৫; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ৮/৫৯, হাদিসটি হাসান।)

সুতরাং সাধারণ অবস্থায় যেকোনো দোয়া কেবলামুখী হয়ে করা মোস্তাহাব। এটি দোয়ার আদব ও শিষ্টাচারের অন্তর্ভুক্ত।

তবে, যেকোনো ফজিলতের হাদিস আমল করার ক্ষেত্রে সালাফগণ কীভাবে আমল করেছেন তার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অন্যথায় ভুল হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। নবীজি (স.) কোনো কোনো দোয়ার ক্ষেত্রে ইচ্ছাপূর্বক কেবলা থেকে ঘুরে বসেছেন, সালাফরাও সেসব দোয়ায় কেবলামুখী হতেন না। সুতরাং সঠিক সুন্নাহ আদায়ের জন্য বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।

নবীজি (স.) নামাজের সালাম ফেরানোর পরে কেবলা থেকে ঘুরে জিকির ও দোয়া করতেন। এজন্য ইমাম আবু হানিফা (রহ) সালাম ফেরানোর পরে ইমামের কেবলামুখী হয়ে দোয়া করাকে মাকরুহ বলেছেন। (ইমাম মুহাম্মদ, আল-মাসবুত: ১/১৭-১৮)

এছাড়াও হানাফি মাজহারে অন্যতম ফকিহ আল্লামা সারাখসি লিখেছেন, যদিও শ্রেষ্ঠতম বসা হচ্ছে কেবলামুখী হয়ে বসা বা সকল বৈঠকের নেতা, কিন্তু নামাজের সালাম ফেরানোর পরে কেবলামুখী হয়ে বসা ইমামের জন্য মাকরুহ, কারণ সাহাবি-তাবেয়িগণ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, ইমামের জন্য সালাম ফেরানোর পরে কেবলামুখী হয়ে বসে থাকা বেদআত। (সারাখসি, আল-মাসবুত: ১/৩৮)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দোয়া-জিকিরসহ প্রত্যেক ইবাদতে এমনকি প্রত্যেক বিষয়ে সঠিক সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর