শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সামর্থ্য থাকার পরও বিয়ে না করায় নবীজির যে কথা শুনতে হয়েছিল সাহাবিকে

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৪ পিএম

শেয়ার করুন:

সামর্থ্য থাকার পরও বিয়ে না করায় নবীজির যে কথা শুনতে হয়েছিল সাহাবিকে

সামর্থ্য ছিল, কিন্তু তখনও বিয়ে করেননি সাহাবি হজরত আক্কাফ (রা.)। বিষয়টি অবগত হয়ে নবীজি তাঁকে এমন কিছু কথা বললেন, যা থেকে উম্মতে মুহাম্মদির শিক্ষা নেওয়া জরুরি। আসলে বিয়ে হলো চরিত্র রক্ষার হাতিয়ার। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে অসংখ্য ফেতনা, ক্ষয়-ক্ষতি, নানা অসুখ-বিসুখ ও সমস্যা থেকেও মুক্তি দান করেন বিয়ের কারণে। তাই সক্ষমতা থাকলে দ্রুত বিয়ে করা আবশ্যক। 

আসুন হাদিস থেকে জেনে নিই- সামার্থ্য থাকার পরও বিয়ে না করায় সাহাবি আক্কাফ (রা.)-কে নবীজি যে কথাগুলো শুনিয়ে দিয়েছিলেন।


বিজ্ঞাপন


হজরত আবুজর গিফারি (রা.) থেকে একটি দীর্ঘ হাদিসে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) আক্কাফ রা.-কে বলেন, হে আক্কাফ! তোমার স্ত্রী আছে? তিনি বললেন, না। রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন, তোমার কি সম্পদ ও সচ্ছলতা আছে? তিনি বললেন, আমার সম্পদ ও সচ্ছলতা আছে। রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন, তুমি এখন শয়তানের ভাইদের দলভুক্ত। যদি তুমি খ্রিস্টান হতে তবে তাদের রাহেব (পাদ্রী) হতে। নিঃসন্দেহে বিয়ে করা আমাদের রীতি। তোমাদের মধ্যে সবথেকে নিকৃষ্ট ওই ব্যক্তি যে অবিবাহিত। মৃতব্যক্তিদের মধ্যে নিকৃষ্ট ব্যক্তি যে অবিবাহিত। তোমরা কি শয়তানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাও? শয়তানের কাছে নারীর চেয়ে ভয়ঙ্কর কোনও অস্ত্র নেই। যা ধর্মভীরু মানুষের ওপরও কার্যকর। তারাও নারীসংক্রান্ত ফেতনায় জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু যারা বিয়ে করেছে তারা নারীর ফেতনা থেকে পবিত্র। নোংরামি থেকে মু্ক্ত। (মুসনাদে আহমাদ, জামেউল ফাওয়ায়েদ, ইমদাদুল ফতোয়া, খণ্ড :২, ২৫৯)

আরও পড়ুন: কত বছর বয়সে বিয়ে করা ‍সুন্নত

আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, তিন জনের একটি দল নবী (স.)-এর ইবাদত সম্পর্কে জানার পর বললেন, আল্লাহর রাসুলের সঙ্গে আমাদের ইবাদতের পরিমাণ একেবারে কম এবং নবী (স.)-এর সঙ্গে আমাদের তুলনা হতে পারে না। কারণ, তাঁর আগের ও পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি সারাজীবন রাতভর সালাত আদায় করতে থাকব। অপর একজন বলল, আমি সব সময় সওম পালন করব এবং কক্ষনো বাদ দিব না। অপরজন বলল, আমি নারী সংসর্গ ত্যাগ করব, কখনও বিয়ে করব না। রাসুলুল্লাহ (স.) তাদের কাছে এলেন এবং বললেন, ’তোমরা কি এই কথাগুলো বলেছ? এরপর নবীজি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তার প্রতি বেশি অনুগত; অথচ আমি সওম পালন করি, আবার তা থেকে বিরতও থাকি। সালাত আদায় করি এবং নিদ্রা যাই ও মেয়েদেরকে বিয়েও করি  সুতরাং যারা আমার সুন্নতের অনুসরণ করবে না, তারা আমার দলভুক্ত নয়। (মুসলিম: ১৪০১, আহমদ: ১৩৫৩৪)

উল্লেখিত হাদিস থেকে জানা যাচ্ছে, বেশি ইবাদত করার জন্য বিয়ে না করার মধ্যে কল্যাণ নেই। বরং সামর্থ্য থাকলেই বিয়ে করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কারণ, বিয়ে চক্ষুকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যে ব্যক্তি তাতে অক্ষম, সে যেন রোজা রাখে, কেনা তা যৌন শক্তিকে হ্রাস করে।’ (বুখারি: ৫০৬৬; মুসলিম: ১৪০০, মেশকাত: ৩০৮০)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: বিয়ে ছাড়াই জীবন কাটিয়ে দিলে কি জান্নাত হারাম?

তাছাড়া বিয়ের কারণে দ্বীন পালন সহজ হয়ে যায়। এমনকি বিয়েকে নবীজি দ্বীনের অর্ধেক বলেছেন। এ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন বান্দা বিয়ে করে, তখন সে তার দ্বীনের অর্ধেক পূরণ করে। অতএব, বাকি অর্ধেকাংশে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে।’ (সহিহ আল-জামিউস সাগির ওয়া জিয়াদাতুহু: ৬১৪৮; তাবারানি: ৯৭২; মুসতাদরাক হাকিম: ২৭২৮)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম অবিবাহিত যুবক-যুবতীদের যথাসময়ে বিয়ে করার তাওফিক দান করুন। আমিন। 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর