রান্না সবসময় ভালো হবে কথা নেই। অনেকে স্ত্রীর রান্নার ভালো-মন্দ বিচার করে থাকেন। আবার কেউ দাওয়াত খেয়ে রান্না ভালো হয়নি বলে অনীহা প্রকাশ করেন। এসব নবীজির সুন্নতের বিপরীত। প্রিয়নবীজি কখনও স্ত্রী বা অন্যকারো রান্না কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে খাবার খেয়ে খাবারের ভালো-মন্দ বিচার করতেন না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি কখনও রাসুলুল্লাহ (স.)-কে কোনো খাদ্যের দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করতে দেখিনি। (সহিহ মুসলিম: ৫২৭৮)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে আরও এসেছে, ‘কোনো খাদ্য প্রিয় হলে নবীজি খেয়েছেন, পছন্দ না হলে ছেড়ে দিয়েছেন। কখনও কোনো খাদ্যকে তিনি মন্দ বলেননি।’ (সহিহ মুসলিম: ৫২৭৫)
বিজ্ঞাপন
মূলত নবীজি (স.) ইবাদতের শক্তি অর্জনে খাবার গ্রহণ করতেন। রান্নার ভালো-মন্দ নিয়ে বেহুদা চিন্তা করতেন না। তাই উম্মতের জন্যও হালাল খাবার খাওয়াই জরুরি; খাবারের দোষ-ত্রুটি খোঁজা নয়।
মনে রাখা উচিত, রান্না-বান্না বা গার্হস্থ্য যেকোনো কাজ স্ত্রীর জন্য কেবল সুন্নত; ফরজ বা জরুরি নয়। শরিয়ত অনুযায়ী স্ত্রীর দায়িত্ব হলো- স্বামীর কর্তৃত্ব ও অধীনতা মেনে নেওয়া, স্বামী যে ঘরে তাকে রাখে সেখানে অবস্থান করা, স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাইরে না যাওয়া, স্বামীর সন্তান ও সম্পদ রক্ষা করা, নিজের সতীত্ব রক্ষা করা এবং স্বামীর যৌন চাহিদা পূরণ করা। এর বাইরে কোনো কাজই তার চাপের কারণ যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর সঙ্গে যেভাবে প্রেমময় সম্পর্ক গড়তে বলে ইসলাম
বরং তাদের কাজে সহযোগিতা করা নবীজির সুন্নত। প্রিয়নবীজি সারাদিনের ব্যস্ততার মধ্যেও স্ত্রীদের গার্হস্থ্য কাজে সহযোগিতা করতেন। স্ত্রীদের কোনো কাজ ত্রুটিপূর্ণ হলে সেগুলোর জন্য কখনও তিনি তাদের দোষারোপ করতেন না। এক্ষেত্রে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ সহযোগী ও সহনশীল।
বিজ্ঞাপন
প্রিয়নবী (স.) স্ত্রীদের অধিকার সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন ছিলেন। বিভিন্ন হাদিসের ভাষ্যমতে, স্ত্রীদের ছোট ছোট আবেগ-অনুভূতিরও মূল্যায়ন করতেন তিনি। এটাই মুমিনের আদর্শ হওয়া উচিত। প্রিয়নবীজি ঘোষণা করেছেন ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম হলো সে ব্যক্তি, যে তার পরিবারের কাছে উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের কাছে উত্তম। তোমাদের এ সঙ্গী (অর্থাৎ আমি) যখন মারা যাবে, তার জন্য তোমরা দোয়া করবে। (জামে তিরমিজি: ৩৮৯৫)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রে মহানবী (স.)-এর আদর্শ অনুসরণের তাওফিক দান করুন। আমিন।

