মহান আল্লাহর প্রশংসামূলক বাক্য যেমন- সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ—এসব পড়ার অনেক ফজিলত রয়েছে। এক হাদিসে নবীজি (স.) বলেছেন, ‘সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার পাঠ করা যা কিছুর উপর সূর্য উদিত হয়েছে সবকিছু থেকে আমার নিকট অধিক প্রিয়।’ (মুসলিম: ২৬৯৫)
সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম এই বাক্য দুটির ব্যাপারে রাসুল (স.) বলেছেন, ‘..যা মুখে উচ্চারণ করা অতি সহজ, পাল্লায় অতি ভারী, আর আল্লাহর নিকট অতি প্রিয়।’ (বুখারি: ৬৪০৬)
বিজ্ঞাপন
তাসবিহ আঙ্গুলে গুণে পাঠ করা উত্তম। হজরত আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন- رَأَيْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَعْقِدُ التَّسْبِيحَ قَالَ ابْنُ قُدَامَةَ بِيَمِينِهِ ‘আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে আঙ্গুলে গুনে গুণে তাসবিহ পাঠ করতে দেখেছি। ইবনু কুদামাহ (রহ) বলেন, ডান হাতের আঙ্গুল দ্বারা। (আবু দাউদ: ১৫০২)
আরও পড়ুন: নবীজি প্রতিরাতে যেসব সুরা পড়ে ঘুমাতেন
হজরত ইয়ুসাইরাহ (রা.) বলেন- أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ أَمَرَهُنَّ أَنْ يُرَاعِينَ بِالتَّكْبِيرِ وَالتَّقْدِيسِ وَالتَّهْلِيلِ وَأَنْ يَعْقِدْنَ بِالْأَنَامِلِ فَإِنَّهُنَّ مَسْئُولَاتٌ مُسْتَنْطَقَاتٌ ‘রাসুলুল্লাহ (স.) তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা তাকবির, তাকদিস এবং তাহলিল এগুলো খুব ভালোভাবে স্মরণে রাখবে এবং এগুলোকে আঙ্গুলে গুণে রাখবে। কেননা আঙ্গুলগুলোকে জিজ্ঞাসা করা হবে এবং এগুলোও সেদিন অর্থাৎ কেয়ামতের দিন কথা বলবে। (মুসনাদে আহমদ: ২৫৮৪১; আবু দাউদ: ১৫০১)
অতএব, আঙ্গুলে গুণে তাসবিহ পাঠ করা উচিত, যাতে কেয়ামতের দিন কাজে আসে। তবে, তাসবিহদানা, পাথরকুচি, খেজুরদানা ইত্যাদি দিয়েও তাসবিহ গণনা করা জায়েজ। একদিন রাসুলে কারিম (স.) এক মহিলার গৃহে প্রবেশ করে দেখলেন, তার সামনে কিছু পাথরকুচি অথবা খেজুরের বিচি রয়েছে। সে তা দিয়ে তাসবিহ জপছে। নবীজি তাকে বললেন, আমি কি তোমাকে এর চেয়ে সহজ কোনো পন্থা বলব? এরপর তিনি তাকে ফজিলতপূর্ণ একটি দোয়া শিখিয়ে দিলেন। (জামে তিরমিজি: ২/১৯৭)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: সারাদিন ৬ জিকিরের অবিশ্বাস্য ফজিলত
এই হাদিসে তাসবিহ দানা ব্যবহারের সমর্থন পাওয়া যায়। কারণ ওই মহিলাকে নবীজি নিষেধ করেননি। তাই তাসবিহদানা ব্যবহারকে বিদআত মনে করা ভুল। সাহাবিদের আমল থেকেও ভিন্ন বস্তু দ্বারা তাসবিহ গণনার প্রমাণ রয়েছে। সায়াদ ইবনে আবি ওক্কাস (রা.) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তিনি খেজুরের বিচি ও পাথরকুচি দ্বারা তাসবিহ জপতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ২/২৮২)
তবে, উত্তম পন্থা হলো- আঙ্গুল দিয়ে তাসবিহ গণনা করা। যা পূর্বেই দলিলাদির আলোকে স্পষ্ট করা হয়েছে। আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘অঙ্গুলি দ্বারা তাসবিহ গণনা করা সুন্নত। আর খেজুরদানা এবং পাথর টুকরো বা এ জাতীয় বস্ত্ত দ্বারা গণনা করা ভালো। সাহাবিদের কেউ কেউ এমন করতেন।’ (মাজমুউল ফতোয়া: ২২/৫০৬)