আজান শুনে দোয়া পড়া অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। আজানের দোয়া পড়লে অসংখ্য নেকিলাভের পাশাপাশি নবীজির শাফায়াত পর্যন্ত অবধারিত হয়ে যায়। কিন্তু সেজন্য নবীজি কোন দোয়াটি পড়তে বলেছেন, তা আমরা অনেকেই জনি না। আজ আমরা জেনে নেব- আজানের কোন দোয়া হাদিসের আলোকে বিশুদ্ধ এবং বিশেষ ফজিলত লাভের উপায়।
সহিহ হাদিসের আলোকে আজানের দোয়া
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺭَﺏَّ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺪَّﻋْﻮَﺓِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺔِ، ﻭَﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺍﻟْﻘَﺎﺋِﻤَﺔِ، ﺁﺕِ ﻣُﺤَﻤَّﺪﺍً ﺍﻟْﻮَﺳِﻴﻠَﺔَ ﻭَﺍﻟْﻔَﻀِﻴﻠَﺔَ، ﻭَﺍﺑْﻌَﺜْﻪُ ﻣَﻘَﺎﻣَﺎً ﻣَﺤﻤُﻮﺩﺍً ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻪُ উচ্চারণ: ‘আল্লা-হুম্মা রাব্বা হা-জিহিদ দা‘ওয়াতিত তা-ম্মাতি ওয়াস সালা-তিল ক্বা-য়িমাতি, আ-তি মুহাম্মাদান আল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাদীলাতা, ওয়াব‘আসহু মাকা-মাম মাহমূদানিল্লাযী ওয়াআদতাহ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বান এবং প্রতিষ্ঠিত সালাতের তুমিই প্রভু! মুহাম্মদ (স.)-কে অসিলা তথা জান্নাতের একটি স্তর এবং ফজিলত তথা সকল সৃষ্টির উপর অতিরিক্ত মর্যাদা দান করুন। আর তাঁকে মাকামে মাহমূদে (প্রশংসিত স্থানে) পৌঁছে দিন, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাঁকে দিয়েছেন।’ জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আজান শুনে এই দোয়াটি করে কেয়ামতের দিন সে আমার শাফায়াত লাভের অধিকারী হবে। (সহিহ বুখারি: ৬১৪; মেশকাত: ৬৫৯)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: দরুদ ও সালামের অবিশ্বাস্য ফজিলত
আজানের দোয়ার মধ্য থেকে ‘ওয়াদদারাজাতার রাফীয়াহ’ এবং ‘ইন্নাকা লা তুখলিফুল মীআ-দ’ দুটি সহিহ সনদে বর্ণিত নয়। (বায়হাকি আস-সুনানুল কুবরা: ১/৪১০, ৬০৩/৬০৪) ‘ওয়াদ-দারাজাতার রাফীয়াহ’ বাক্যকে একেবারেই বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলেছেন বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে হাজার আসকালানি, সাখাবি, যারকানি, আলি কারি প্রমুখ। তাঁদের মতে, ‘মাসনুন দোয়ার মধ্যে ভিত্তিহীন বাক্য বৃদ্ধি করা সুন্নতবিরোধী ও অন্যায়।’ (তালখিসুল হাবির: ১/২১১; আল মাকাসিদ: পৃ-২২২-২২৩; মুখতাসারুল মাকাসিদ: পৃ-১০৭; আল মাসনূ: পৃ-৭০-৭১)
উল্লেখ্য, আজানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচটি সুন্নত আমল রয়েছে। যেগুলোর ফজিলত অনেক। যেমন- মুয়াজ্জিনের আজানের জবাব দেওয়া। (বুখারি: ৫৮৪), দোয়া করা। (সহিহ মুসলিম: ৭৩৫), নবীজির ওপর দরুদ পাঠ করা। (মুসলিম: ৭৩৫), তাওহিদের সাক্ষ্য দেওয়া। (মুসলিম: ৭৩৭) এবং সর্বশেষ নিজের জন্য কল্যাণের দোয়া করা। হাদিসে এসেছে, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে কৃত দোয়া কখনোই প্রত্যাখ্যাত হয় না। (আবু দাউদ: ৫২১)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পাঁচ ওয়াক্ত আজানের সময় মুয়াজ্জিনের সঙ্গে আজানের বাক্যগুলো পুনরুক্তি করার এবং দরুদ ও হাদিসে উল্লেখিত দোয়া পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

