নবীজির প্রতি দরুদ অনেক বরকতময় একটি আমল। যা সবসময় সর্বাবস্থায় করা যায়। তবে, বিশেষ কিছু সময়ে দরুদ পড়তে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে হাদিসে। যেমন- দোয়ার শুরুতে, জুমার দিন, আজানের পর, মসজিদে প্রবেশের সময় এবং বের হওয়ার সময়, নবীজির নাম শুনলে, নবীজির নাম লেখার সময় সাথে দরুদও লেখা, অজুর পরে দরুদ, তাওবা-ইস্তেগফারের পরে দরুদ ইত্যাদি। হাদিসে বর্ণিত দরুদ ও সালামের শব্দ-বাক্যের প্রতি যত্নশীল হওয়া আমাদের কর্তব্য। এখানে হাদিসের আলোকে ছোট আকারের দশটি দরুদ তুলে ধরা হলো।
হাদিসে বর্ণিত ছোট দরুদ শরিফ
১. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ،وَّأَنْزِلْهُ الْمَقْعَدَ الْمُقَرَّبَ عِنْدَكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আনজিলহুল মাক্বআদাল মুক্বাররাবা ঈনদাকা ইয়াওমাল ক্বিয়ামাহ।’ অর্থ: হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (স.)-এর প্রতি রহমত বর্ষণ করুন এবং কেয়ামত দিবসে তাঁকে সমাসীন করুন আপনার নৈকট্যপ্রাপ্ত আসনে।’ (আলমুজামুল কাবির, তবারানি: ৪৪৮০; মুসনাদে আহমদ: ১৬৯৯১; ফাদলুস সালাত: ৫৫; মুসনাদে বাজজার: ২৩১৫; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১৭২৫৯)
২. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ، وَصَلِّ عَلٰى الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ،وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন আবদিকা ওয়া রাসূলিকা, ওয়াসাল্লি আলাল মু’মিনীনা ওয়াল মু’মিনাত ওয়াল মুসলিমীনা ওয়াল মুসলিমাত।’ অর্থ: হে আল্লাহ! রহমত বর্ষণ করুন আপনার বান্দা ও রাসুল মুহাম্মদ (স.)-এর প্রতি এবং সকল মুমিন ও মুসলিম নর-নারীর প্রতি।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৯০৩; আলআদাবুল মুফরাদ: ৬৪০; মুসতাদরাকে হাকেম: ৭৩৫২)
আরও পড়ুন: দরুদ ও সালামের ৯টি বিস্ময়কর উপকার
৩. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّسَلِّمْ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়াসাল্লিম।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (স.)-এর ওপর রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুন।’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাজজাক: ১৬৬৪; মুসনাদে আহমদ: ২৬৪১৬; জামে তিরমিজি: ৩১৪)
বিজ্ঞাপন
৪. اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ উচ্চারণ: ‘আসসালামু আলাইকা আয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।’ অর্থ: ‘আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক হে নবী! এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত।’ (সহিহ বুখারি: ৮৩১)
৫. صَلَّى اللهُ عَلَى النَّبِيِّ مُحَمَّدٍ উচ্চারণ: ‘সাল্লাল্লাহু আলান্নাবিয়্যি মুহাম্মাদিন।’ অর্থ: ‘আল্লাহ রহমত বর্ষণ করুন নবী মুহাম্মদ (স.)-এর প্রতি। (সুনানে নাসায়ি: ১৭৪৬)
৬. اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ صَلَوَاتِكَ وَبَرَكَاتِكَ عَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا جَعَلْتَهَا عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মাজআল সালাতিকা ওয়াবারাকাতিকা আলা আ-লে মুহাম্মাদিন কামা জাআলতাহা আলা আ-লে ইবরাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।’ অর্থ: হে আল্লাহ! আপনার রহমত ও বরকত দান করুন মুহাম্মদ (স.)-এর পরিবারবর্গকে, যেরকম দান করেছেন ইবরাহিম (আ.)-এর পরিবারবর্গকে। আপনি নিঃসন্দেহে অতি প্রশংসিত, মহিয়ান।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা: ৮৭২৬; ফাদলুস সালাত: ৬৫)
আরও পড়ুন: জুমার দিন দরুদ পড়ার ফজিলত
৭. اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি ওয়াসাল্লিম আলা মুহাম্মাদিন ওয়াআলা আ-লে মুহাম্মাদ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি রহমত ও প্রশান্তি অবতীর্ণ করুন মুহাম্মদ (স.)-এর উপর এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর।’ (আলআযকার নাববি, পৃ. ১৭৭; আলকাউলুল বাদি’, পৃ. ৪০০,সালিহ লিলআমাল)
৮. صَلّى اللهُ عَلٰى النَّبِيِّ وَسَلَّمَ উচ্চারণ: ‘সাল্লাল্লাহু আলান্নাবিয়্যি ওয়াসাল্লাম।’ অর্থ: ‘রহমত ও শান্তি অবতীর্ণ হোক নবীজির ওপর।’ (নাতাইজুল আফকার, ইবনে হাজার: ১/২৮৩, সহিহ)
৯. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহীম, আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইবরাহীম।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ (স.)-এর উপর রহমত নাজিল করুন, যেমন রহমত নাজিল করেছেন ইবরাহিম (আ.)-এর পরিবারবর্গের উপর।’ (সুনানে কুবরা, নাসায়ি: ৯৭৯৬; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ১০২ (১১১) (সহিহ)
১০. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি উম্মী নবী মুহাম্মদ (স.)-এর উপর রহমত বর্ষণ করুন।’ (আততারগিব ওয়াত তারহিব, কিওয়ামুস সুন্নাহ: ১৬৫৪; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ৮৮ (৮২); আলকাউলুল বাদি’, পৃ. ৩৭৯ (সহিহ)