মহানবী (স.) চোখ খোলা রেখে নামাজ আদায় করেছেন। তাই সুন্নত অনুসরণে নামাজে চোখ খোলা রাখা চাই। অনেকে মনে করেন, চোখ বন্ধ করলে ইবাদতে মনোযোগ ঠিক রাখা যায়। এটি সঠিক চিন্তা নয়, বরং খেয়ালের ভুল। হতে পারে শয়তানের প্ররোচনা। কারণ, খিনজাব নামের শয়তান নামাজেও বিঘ্ন ঘটাতে পারে, সংশয় তৈরি করতে পারে।
মনে রাখতে হবে, গভীর মনোযোগের জন্য যদি চোখ বন্ধ করার প্রয়োজন থাকত, তাহলে রাসুল (স.) বলতেন যে, তোমরা চোখ বন্ধ করে সালাত আদায় করো। বরং তিনি যখন নামাজে দাঁড়াতেন, আল্লাহর সামনে গভীর বিনয়ে মাথা নিচু রাখতেন আর দৃষ্টি সেজদার স্থানে রাখতেন।
বিজ্ঞাপন
ইবনুল কাইয়িম (রহ) বলেন, যখন কেউ তার ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে দেখা করে তখন তার ভালোবাসার একটি বহিঃপ্রকাশ হলো সে লজ্জা আর শ্রদ্ধায় মাথা নিচু রাখে এবং আমাদেরও ঠিক এই রকম হতে হবে। রাসুল (স.) বলেন—
فإذا صليتم فلا تلتفتوا فإن الله ينصب وجهه لوجه عبده في صلاته ما لم يلتفت যখন কেউ নামাজে দাঁড়াবে, সে যেন এদিক সেদিক না তাকায়, কারণ আল্লাহ তখন তার দিকে দৃষ্টি দিয়ে রাখেন যতক্ষণ না সে এদিক সেদিক তাকায়। (তিরমিজি)
ইবরাহিম নাখায়ি (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি দৃষ্টি সেজদার স্থান অতিক্রম করে না যাওয়া পছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৬৫৬৩)
মুজাহিদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি নামাজে চোখ বন্ধ করে রাখা অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৬৫৬৫)
অবশ্য যদি প্রয়োজন পড়ে; যেমন সামনে এমন কিছু আসে, যা নামাজে মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক, যেমন কারুকার্য, নকশা, ফুল বা এমন কোনো জিনিস থাকে, যা দৃষ্টি আকর্ষণ করে অথবা মনোযোগ কেড়ে নেয় অথবা কেরাত ভুলিয়ে দেয় এবং তা দূর করা সম্ভব না হয়, তাহলে চোখ বন্ধ করায় দোষ নেই। বিনা প্রয়োজনে নামাজে চোখ বন্ধ করে রাখা বা নিয়মিত চোখ বন্ধ রেখে নামাজ পড়া মাকরুহ।
(তথ্যসূত্র: বাদায়েউস সানায়ে: ১/৫০৭; হালবাতুল মুজাল্লি: ২/২৫৪; ফতোয়ায়ে শামি: ১/৬৪৫; আলমুগনি: ২/৩০; আলবাহরুর রায়েক: ২/২৫; আদ্দুররুল মুখতার: ১/৬৪৫)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত সহিহ সুন্নাহ অনুসরণে যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

