কোরবানি ও আকিকা আলাদা বিষয়। তাই একটিকে অপরটির স্থলাভিষিক্ত না করা উত্তম। তবে, একত্রে করলেও তা আদায় হয়ে যাবে। কারণ আকিকাও এক ধরনের কোরবানি। হাদিসে আকিকার ওপরও ‘নুসুক’ শব্দের প্রয়োগ হয়েছে। আর ‘নুসুক’ অর্থ কোরবানি।
আকিকাও যেহেতু ‘নুসুক’ বা কোরবানি তাই এ মূলনীতিতে কোরবানির পশুতে সন্তানের আকিকা দেওয়া দোষণীয় নয়। এতে কোরবানি ও আকিকা দুইটিই শুদ্ধ হবে। ফতোয়ায়ে শামিসহ ফতোয়ার কিতাবাদিতে বলা হয়েছে যে, কোরবানির সাথে আকিকা শুদ্ধ। (রদ্দুল মুখতার: ৬/৩২৬; হাশিয়াতুত তহতাভি আলাদ্দুর: ৪/১১৬)
কোরবানির গরু, মহিষ ও উটে আকিকার নিয়তে শরিক হলে ছেলের আকিকার জন্য দুই অংশ আর মেয়ের জন্য এক অংশ দিতে হবে। (ইলাউস সুনান: ১৭/১২৬)
সন্তান জন্মের পর আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায়ের উদ্দেশে জন্মের সপ্তম দিনে পশু জবাই করাকে আকিকা বলে। আকিকা করা মোস্তাহাব। হাদিসে আকিকার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসুল (স.)-কে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সন্তানের আকিকা করার ইচ্ছা করে, সে যেন তা পালন করে। ছেলের জন্য সমমানের দুইটি ছাগল। আর মেয়ের জন্য একটি। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৭৯৬১)
‘শৈশবে আকিকা করা না হলে বড় হওয়ার পরও আকিকা করা যাবে। যার আকিকা সে এবং তার মা-বাবাও আকিকার গোশত খেতে পারবে।’ (ইলাউস সুনান: ১৭/১২৬)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আকিকার গোশত নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে এবং কিছু সদকা করবে। (মুসতাদরাকে হাকেম: ৭৬৬৯)
বিজ্ঞাপন
অন্য হাদিসে আছে, সন্তানের সঙ্গে আকিকার বিধান রয়েছে। তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (অর্থাৎ পশু জবাই করো) এবং সন্তানের শরীর থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করে দাও। (বুখারি: ৫৪৭২)
মনে রাখতে হবে, সাতজনে মিলে কোরবানি করলে— সবার অংশ সমান হতে হবে এবং কারও অংশ এক সপ্তমাংশের কম হতে পারবে না। যেমন কারও আধা ভাগ হলে কোনো শরিকের কোরবানিই শুদ্ধ হবে না। (বাদায়িউস সানায়ে: ৪/২০৭)
উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ। (সহিহ মুসলিম: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরবানি ও আকিকা সুন্নাহ মেনে যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।