ইসলামে দোয়া একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। সাহাবি নোমান বিন বাশির (রা.) এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (আবু দাউদ: ১৪৮১) নবীজি আরও ইরশাদ করেছেন, ‘মহান আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে অধিক সম্মানিত কোনো কিছু নেই’ (ইবনে মাজাহ: ৩৮২৯)
তাই বান্দার দায়িত্ব হলো— যেকোনো প্রয়োজনে দয়াবান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ (সুরা গাফির: ৬০)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: বান্দার একটি দোয়াও বিফলে যায় না
দোয়ার বেশকিছু আদব রয়েছে। যেমন- দোয়ার আগে অজু করা (বুখারি: ৪৩২৩), কেবলামুখী হয়ে দোয়া করা (বুখারি: ১০০৫), হাত তুলে দোয়া করা (বুখারি: ২৮৮৪), দোয়ার শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা ও নবীজি (স.)-এর প্রতি দরুদ-সালাম পাঠ করা (সহিহুল-জামি: ৩৯৮৮), নীরবে দোয়া করা (সুরা আরাফ: ৫৫), নিজের গুনাহ স্বীকার করা (সহিহুল জামি: ১৬৫৩), কায়মনবাক্যে কাকুতি-মিনতির সাথে দোয়া করা (মুসলিম: ২১৮৯), আল্লাহর সিফাতি নাম ধরে দোয়া করা (নাসায়ি: ১৩০০), দোয়ার শেষে ‘আমিন’ বলা (বুখারি: ৭৮১), দোয়ার পর দুই হাত মুখে নিয়ে মাসেহ করা (ইবনে মাজাহ: ৩৮৬৬) ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছাকৃত সব গুনাহ থেকে ক্ষমা পাওয়ার দোয়া
উল্লেখিত সবগুলো আদব মেনে দোয়া করা উত্তম। প্রশ্ন হলো- দোয়ার সময় হাত কতটা উপরে উঠানো উত্তম? এ সম্পর্কে আলেমদের বক্তব্য হলো- রাসুলুল্লাহ (স.) দোয়ার সময় সাধারণত বুক পর্যন্ত হাত তুলতেন। তবে বিশেষ কোনো দোয়ার সময় আরেকটু উপরেও উঠাতেন। তাই দোয়া করার সময় হাত বুক বা কাঁধ বরাবর উঠানো উত্তম। তবে, যদি নিজের আবেগ ও দীনতা প্রকাশে আরো উপরে উঠে যায়, তাতেও সমস্যা নেই। আর হাত ফাঁকা রাখা উত্তম। তবে মিলিয়ে রাখলেও তেমন সমস্যা নেই। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক: ৩৩৪৩; আবু দাউদ: ১৪৮৯; সহিহ বুখারি: ৬৩৮৩; রদ্দুল মুহতার: ২/২১৫)
বিজ্ঞাপন
অনর্থক বেশি উপরে হাত উঠানো এবং কপাল পর্যন্ত তোলা অপছন্দনীয়। (ফতোয়ায়ে বানুরি অনলাইন, ১৪৪১১১২০১৭৩৬) আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যেকোনো প্রয়োজনে আল্লাহ তাআলার কাছে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রত্যেকের দোয়া কবুল করুন। আমিন।

