সন্তান প্রসবের কারণে কোনো স্ত্রীলোক মারা গেলে সে শহীদের মর্যাদা লাভ করবে। হাদিস শরিফে এসেছে, সফওয়ান ইবনে উমাইয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন- الطَّاعُونُ شَهَادَةٌ، وَالْغَرَقُ شَهَادَةٌ، وَالْبَطْنُ شَهَادَةٌ، وَالنُّفَسَاءُ شَهَادَةٌ ‘প্লেগে যে মারা যায়, সে শহীদ; পানিতে ডুবে যে মারা যায়, সে শহীদ; পেটের পীড়ায় যে মৃত্যুবরণ করে, সে শহীদ এবং যে স্ত্রীলোক সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মারা যায়, সেও শহীদ।’ (মুসনাদে আহমদ: ১৫৩০৭)
ইমাম ইবনে হাজার (রহ) বলেন- قال ابن التين: هذه كلها ميتات فيها شدة، تفضل الله على أمة محمد صلى الله عليه وسلم بأن جعلها تمحيصا لذنوبهم وزيادة في أجورهم، يبلغهم بها مراتب الشهداء ‘ইবনুত তীন (রহ) বলেন, এগুলো অনেক কষ্টের মৃত্যু। আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মদির ওপর অনুগ্রহ করে এগুলোকে তাদের জন্য গুনাহ মাফ ও সওয়াব বৃদ্ধির মাধ্যম বনিয়েছেন এবং এর মাধ্যমেই আল্লাহ তাআলা তাদেরকে শহীদের মর্যাদায় উন্নীত করবেন। (ফাতহুল বারি: ৬/৫২)
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য যে, তারা শুধু সওয়াব ও মর্যাদার দিক থেকে শহীদের মতো। তাদের গোসল ও কাফন সাধারণ মৃতদের মতোই হবে। (ফাতহুল কাদির: ২/১০৩; আদ্দুররুল মুখতার: ২/২৫২)
গর্ভবতী কষ্টের কারণে অফুরন্ত সওয়াব লাভ করেন। রাসুল (স.) নারী সাহাবি সালামা (রা.)-কে বলেছেন, তোমাদের কেউ কি এতে খুশি নয় যে সে এখন স্বামী কর্তৃক গর্ভবতী হয় এবং স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্টও থাকে? তখন (এই গর্ভকালীন) সে আল্লাহর পথে সর্বদা রোজা পালনকারী ও সারারাত নফল ইবাদতকারীর মতো সওয়াব পাবে। তার যখন প্রসবব্যথা শুরু হয়, তখন তার জন্য নয়ন শীতলকারী কী কী নিয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়, তা আসমান-জমিনের কোনো অধিবাসী জানে না। সে যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার পরিবর্তে একটি করে নেকি দেওয়া হয়। এই সন্তান যদি কোনো রাতে তাকে জাগিয়ে রাখে (অসুখ ইত্যাদির কারণে বিরক্ত করে মাকে ঘুমাতে না দেয়) তাহলে সে আল্লাহর পথে নিখুঁত ৭০টি দাস আজাদ করার সওয়াব পাবে। (তাবরানি: ৬৯০৮, আবু নুআইম: ৭০৮৯)
গর্ভাবস্থায় নারীদের গুনাহমুক্ত জীবন যাপন করা উচিত। আল্লাহর ওপর সন্তুষ্ট ও ধৈর্যধারণ করা উচিত। আল্লাহ তাআলা সব নারীকে ধৈর্যধারণের তাওফিক দান করুন। ইসলামি নির্দেশনা অনুযায়ী জীবনযাপনের করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

