মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

আশুরার রোজাসহ ৪ সুন্নত নবীজি কখনও ছাড়তেন না

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

আশুরার রোজাসহ ৪ সুন্নত নবীজি কখনও ছাড়তেন না

ফরজ ওয়াজিবের পরে সুন্নতে মুয়াক্কাদা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল। এর পরে সুন্নতে জায়েদা বা নফল। সব সুন্নতের মধ্যে আবার খুবই মর্যাদাপূর্ণ কিছু আমল রয়েছে, যেগুলো প্রিয়নবী (স.) কখনও ছাড়তেন না। উম্মত হিসেবে আমাদেরও সেই আমলগুলোর ব্যাপারে সচেতন হওয়া এবং গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করা উচিত। নিচে গুরুত্ব ও মর্যাদার দিক বিবেচনায় এমন চারটি সুন্নত আমল তুলে ধরা হলো—যেগুলো নবীজি (স.) কখনও পরিত্যাগ করতেন না।

উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, চারটি জিনিস এমন আছে যা নবী (স.) ছাড়তেন না। ১. আশুরার রোজা ২. জিলহজ মাসের প্রথম নয় দিনের রোজা। ৩. প্রতি মাসের তিনদিন তথা আইয়ামে বিজের রোজা ৪. ফজরের আগে দু’রাকাত সুন্নত নামাজ। (নাসায়ি, মেশকাত: ২০৭০)


বিজ্ঞাপন


১. আশুরার রোজা
মহররম মাসের দশম দিনকে আশুরার দিন বলা হয়। এ দিনের রোজার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। হাদিসে এসেছে, ‘আশুরার এক দিনের সাওম বিগত এক বছরের গুনাহর কাফফারা হিসেবে গৃহীত হয়।’ (মুসলিম: ১১৬২) 

রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) আমাদের (রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে) আশুরার রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং এর প্রতি উৎসাহিত করতেন। আর এ বিষয়ে তিনি নিয়মিত আমাদের খবরাখবর নিতেন। যখন রমজানের রোজা ফরজ করা হলো তখন আশুরার রোজার ব্যাপারে তিনি আমাদের নির্দেশও দিতেন না, নিষেধও করতেন না। আর এ বিষয়ে তিনি আমাদের খবরাখবরও নিতেন না।’ (মুসলিম: ১১২৮) ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) আশুরা ও রমজানের রোজা সম্পর্কে যেরূপ গুরুত্বারোপ করতেন, অন্যকোনো রোজা সম্পর্কে রাসুল (স.)-কে সেরূপ গুরুত্ব প্রদান করতে দেখিনি।’ (বুখারি: ২০০৬, মুসলিম: ১১৩২)

আরও পড়ুন: আশুরার রোজা কোন দুই দিন রাখতে হবে?

২. জিলহজ মাসের প্রথম ৯ দিনের রোজা
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, আল্লাহর কাছে অন্যকোনো দিনের ইবাদত অতটা বেশি পছন্দনীয় নয়, যতটা বেশি পছন্দনীয় জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের ইবাদত। এর প্রত্যেক দিনের রোজা এক বছর রোজার সমতুল্য আর এর প্রত্যেক রাতের ইবাদত কদরের রাতের ইবাদতের সমতুল্য। (তিরমিজি: ৭৫৮)


বিজ্ঞাপন


জিলহজ মাসের নবম দিন হলো আরাফার দিন। সেদিনের রোজার ফজিলত আরো বেশি। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আরাফার দিনের (৯ তারিখের) রোজার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে তিনি এর দ্বারা বিগত এক বছর ও আগামী বছরের গুনাহ মাফ করবেন। (সহিহ মুসলিম: ১১৬২; আবু দাউদ: ২৪২৫)

আরও পড়ুন: রাতে যে সুরা পড়লে দারিদ্র্য কাছে ঘেঁষতে পারবে না

৩. আইয়ামে বিজের রোজা
আবু জার গিফারি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘হে আবু জার, যদি তুমি প্রতি মাসে তিনদিন সিয়াম পালন করতে চাও, তাহলে (প্রতি চাঁদের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে তা পালন করো।’ (তিরমিজি: ৭৬১) রাসুল (স.) মাসের এই তিনদিন নিয়মিত রোজা রাখতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (স.) বাড়িতে থাকাবস্থায় বা সফরে থাকাবস্থায় কখনোই আইয়ামে বিদের রোজা ছাড়তেন না। (নাসায়ি, রিয়াজুস সালেহিন: ১২৬৪)

৪. ফজরের আগের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম।’ (মুসলিম: ৭২৫) আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘শত্রুবাহিনী তোমাদের তাড়া করলেও তোমরা এই দুই রাকাত কখনো ত্যাগ করো না।’ (আবু দাউদ: ১২৫৮)

আল্লাহ তাআলা আমাদের উল্লেখিত আমলগুলো বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর