ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের রাত আমাদের দেশে চাঁদরাত হিসেবে পরিচিত। এই রাতে সাধারণত আমরা অযথা আড্ডা, ঘোরাঘুরি, বিনোদন কিংবা ঘুমিয়ে সময় কাটিয়ে দিই। অথচ ইসলামে এই রাতে ইবাদতের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। এই রাতকে বলা হয়ে থাকে পুরস্কারের রাত। হাদিসে এসেছে, চাঁদরাতের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, অর্ধ শাবানের রাত এবং দুই ঈদের রাত—এই পাঁচ রাতে কোনো দোয়া করে; তার কোনো আবেদনই ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৭৯২৭)
বিজ্ঞাপন
হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) বর্ণিত হাদিসে নবী (স.) বলেন, যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত (ইবাদতের মাধ্যমে) জাগ্রত থাকবে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। যিলহজ মাসের ৮ ও ৯ তারিখের রাত, ঈদুল আজহার রাত, ইদুল ফিতরের রাত এবং ১৫ শাবানের রাত। (আত তারগিব ওয়াত তারহিব লিল মুনজেরি: ২/৯৮, হাদিস: ১৬৫৬)
আরও পড়ুন
ঈদের নামাজের তাকবির ও নিয়ম
ঈদের নামাজ আংশিক ছুটে গেলে করণীয়
ঈদের দিনে করণীয় ও বর্জনীয়
ঈদের রাতে ইবাদতকারীর আরেকটি বিশেষ ফজিলত হলো- তার অন্তর কেয়ামতের দিন মরবে না। হজরত আবু উমামা বাহেলি (রা.) বর্ণনা করেন, নবী (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে আল্লাহর কাছে সওয়াবপ্রাপ্তির নিয়তে ইবাদত করবে, তার হৃদয় সেদিনও জীবিত থাকবে, যেদিন সকল হৃদয়ের মৃত্যু ঘটবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৭৮২)
হজরত উবাদা ইবনে সামেত (রা.) বর্ণিত অন্য হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার রাতকে (ইবাদতের মাধ্যমে) জীবিত রাখবে তার অন্তর ওই দিন মরবে না, যেদিন অন্যদের অন্তর মরে যাবে। (আল মুজামুল আওসাত ১/৫৭, হাদিস: ১৫৯)
বিজ্ঞাপন
অতএব, বরকতময় ঈদের রাত বা চাঁদরাতে অযথা কথা-কাজে লিপ্ত হওয়া, বাজারে-মার্কেটে ঘোরাঘুরি করার পরিবর্তে এশা এবং ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা জরুরি। সেইসঙ্গে অন্যান্য নেক আমল যেমন সাধ্যানুযায়ী নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, ইস্তেগফার ও দোয়া-মুনাজাতে মশগুল থাকা বাঞ্ছনীয়। আসুন আমরা নিজেদের সবসময় সর্বক্ষেত্রে দ্বীনের পথে সম্পৃক্ত রাখি। আমিন।

