কোরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কোরবানি হলো ইসলামের একটি শিয়ার বা মহান নিদর্শন। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন- ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন’ (সুরা কাউসার: ২)।
তাই নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানির নেসাব জাকাতের মতো সারাবছর জমা থাকা আবশ্যক নয়, বরং কোরবানির দিনগুলোতে অর্থাৎ ‘১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যদি কোনো সুস্থ মস্তিষ্ক, প্রাপ্তবয়স্ক, মুসলিম নর-নারী ঋণমুক্ত থাকা অবস্থায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তবে তার কোরবানি করা ওয়াজিব।’ (রদ্দুল মুখতার: ৬/৩১২)
বিজ্ঞাপন
কোরবানির নেসাব হলো- স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত ভরি। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা। আর অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্যের সম্পদ (টাকার অঙ্কে আনুমানিক ৫৫ হাজার টাকা)।
কোরবানির পশু চুরি হয়ে গেলে বা মরে গেলে করণীয় কী— এ প্রসঙ্গে ফতোয়ার কিতাবে উল্লেখ আছে, ‘কোরবানির পশু যদি চুরি হয়ে যায় বা মরে যায় আর কোরবানিদাতার ওপর পূর্ব থেকে কোরবানি ওয়াজিব থাকে, তাহলে আরেকটি পশু কোরবানি করতে হবে। গরিব হলে (যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়) তার জন্য আরেকটি পশু কোরবানি করা ওয়াজিব নয়। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২১৬; খুলাসাতুল ফতোয়া: ৪/৩১৯)
উল্লেখ্য, কোরবানির প্রাণশক্তি হচ্ছে তাকওয়া ও ত্যাগ, যার ভিত্তি হচ্ছে আল্লাহপ্রেম। যেই কোরবানিতে লৌকিকতা রয়েছে, গোশত খাওয়ার নিয়ত রয়েছে সেই কোরবানি আল্লাহর কাছে কবুল হবে না। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন ‘আল্লাহর কাছে কোরবানির গোশত ও রক্ত পৌঁছে না, পৌঁছে কেবল তোমাদের তাকওয়া।’ (সুরা হজ: ৩৭)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সঠিক নিয়তে সহিহ সুন্নাহ মোতাবেক কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।