শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ঢাকা

শবে বরাতের সঙ্গে হালুয়া-রুটির সম্পর্ক কী

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

শবে বরাতের সঙ্গে হালুয়া-রুটির সম্পর্ক কী

শবে বরাত ইসলামে একটি মর্যাদাপূর্ণ রাত—এতে কোনো সন্দেহ নেই। এই রাতের ফজিলত সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘অর্ধ শাবানের রাতে অর্থাৎ শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে আল্লাহ তাআলা সমগ্র সৃষ্টিকুলের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও হিংসুক লোক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৩৯০; সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫)

হাদিসবিশারদদের মতে, হাদিসটির মান সহিহ তথা বিশুদ্ধ। এজন্যই ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ.) তাঁর প্রসিদ্ধ হাদিসের কিতাব ‘কিতাবুস সহিহ’-এ সেটি উল্লেখ করেছেন।


বিজ্ঞাপন


শবে বরাতের বিশুদ্ধ আমলগুলোর মধ্যে রয়েছে তেলাওয়াত, দরুদ, জিকির, নফল নামাজ, নফল রোজা ইত্যাদি। রোজার ক্ষেত্রে দুয়েকটি রোজা মিলিয়ে রাখা উত্তম। যদিও শবে বরাতের পরদিন একটি রাখলেও অনেকের মতে সমস্যা নেই। তবে, আইয়ামে বিজের তিনটি রোজা (শাবানের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) রাখা সর্বোত্তম। এছাড়া এই রাতে একাকী কবর জিয়ারত, মৃত ব্যক্তিদের মাগফেরাত কামনা করা, দীর্ঘ সেজদায় নামাজ পড়া প্রমাণিত আমল। ইমাম শাফেয়ি বলেন, এই রাত দোয়া কবুলের উপযুক্ত। (শুআবুল ঈমান, বায়হাকি: ৩/৩৮২-৩৮৩; তাবরানি: ১৯৪; তিরমিজি: ৭৩৯; কিতাবুল উম্ম-১/২৬৪)

আরও পড়ুন: শবে বরাতে যেসব আমল বিদআত নয়

কিন্তু শবে বরাতে হালুয়া-রুটি বানাতে হবে—এমন কিছুর অস্তিত্ব কোথাও পাওয়া যায় না। কাউকে বলতে শোনা যায়, ‘শবে বরাতে হালুয়া-রুটি বানালে আরশের নিচে ছায়া পাওয়া যাবে।’ এটিকে হাদিস বলতে চায় তারা। অথচ রাসুলুল্লাহ (স.)-এর হাদিসের সঙ্গে এর দূরতম সম্পর্ক নেই। এমনকি জাল হাদিসের ওপর লেখা কিতাবাদিতেও এর খোঁজ পাওয়া যায় না।

আবার কাউকে বলতে শোনা যায়, ওহুদ যুদ্ধে নাকি নবীজির দানদান মোবারক শহীদ হয়েছিল, তখন কিছুদিন তিনি শক্ত খাবার খেতে পারেননি। সেই ঘটনার প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এই দিনে ঘটা করে হালুয়া রুটি খাওয়া হয়। কিন্তু ওহুদ যুদ্ধ তো শাবান মাসের ১৫ তারিখে হয়নি, তা হয়েছে শাওয়ালের ৭ তারিখে। সুতরাং যদি সে কেন্দ্রিক কোনো বিষয় থাকত তাহলে তা শাওয়াল মাসের ৭ তারিখে হওয়ার কথা, শাবানের ১৫ তারিখে নয়।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: শাবান মাসে যে ৩ রোজা বেশি ফজিলতপূর্ণ

মূল কথা হলো- শবে বরাতে প্রমাণিত আমলে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। রসম-রেওয়াজের পেছনে পড়ে মূল ফজিলত থেকে বঞ্চিত হওয়া ঠিক নয়। তাছাড়া ভিত্তিহীন কথাকে রাসুলের হাদিস বলা মারাত্মক গুনাহের কাজ। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। দ্বীনের সকল বিষয়ে সহিহ কথা ও বিশুদ্ধ আমলে মনোযোগ দেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর