বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

জাকাত অস্বীকারকারীর ভয়াবহ শাস্তি

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০২২, ০৬:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

জাকাত অস্বীকারকারীর ভয়াবহ শাস্তি

জাকাত ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। জাকাত ইসলামের ফরজ বিধান—এ কথা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে—

وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ

‘আর তোমরা সালাত কায়েম করো ও জাকাত দাও।’ (সুরা বাকারা: ১১০)

রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘ইসলামের স্তম্ভ হচ্ছে পাঁচটি। ১) আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মদ (স.) আল্লাহর রাসুল-এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া। ২) নামাজ কায়েম করা। ৩) জাকাত আদায় করা। ৪) হজ সম্পাদন করা এবং ৫) রমজানের সিয়ামব্রত পালন করা।’ (মেশকাত: ৮ সহিহ বুখারি: ৮; মুসলিম: ১৬)

সুতরাং কোনো ব্যক্তি যদি জাকাতের এ ফরজিয়্যাতকে অস্বীকার করবে, তার ঈমান থাকবে না। তার মানে, ওই ব্যক্তির ঈমান চলে গেছে। তাকে অতিসত্ত্বর তার ঈমান নবায়ন করে নিতে হবে। (ফাতহুল বারি: ৩/৩০৯)

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যারা সোনা ও রুপা জমা করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, আপনি তাদের বেদনাদায়ক আজাবের সুসংবাদ দিন, যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দিয়ে তাদের কপালে, পার্শ্বদেশে ও পিঠে সেঁক দেওয়া হবে। (আর বলা হবে) এটা তা-ই, যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ করো। ’ (সুরা তাওবা: ৩৪-৩৫)

এই আয়াতে জমা করা সোনা ও রুপাকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করে ললাট, পার্শ্বদেশ ও পৃষ্ঠদেশ দগ্ধ করে কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে অবৈধভাবে অর্থ-সম্পদ অর্জন করে জমা করা কিংবা বৈধ পন্থায় জমা করেও জাকাত আদায় না করা বা পরিপূর্ণভাবে সব সম্পদের জাকাত আদায় না করাও আজাবের কারণ হিসেবে ধর্তব্য হবে।

হাদিসে এসেছে, ‘যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু সে এর জাকাত আদায় করেনি, কেয়ামতের দিন তার সম্পদকে টাক (বিষের তীব্রতার কারণে) মাথাবিশিষ্ট বিষধর সাপের আকৃতি দিয়ে তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। সাপটি তার মুখের দুই পাশ কামড়ে ধরে বলবে, আমি তোমার সম্পদ, আমি তোমার জমাকৃত সম্পদ।’ (বুখারি: ১৪০৩)

রাসুলুল্লাহ (স.)-এর ওফাতের পরে কুরাইশরা জাকাত আদায়ে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলে আবু বকর (রা.) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। হাদিসে এসেছে—

আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু বকর (রা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কসম! যদি তারা একটি মেষ শাবক জাকাত দিতেও অস্বীকৃতি জানায়, যা আল্লাহর রাসুল (স.)-এর কাছে তারা দিত, তাহলে জাকাত না দেওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আমি অবশ্যই যুদ্ধ করব’। ( বুখারি: ১৪০০, ‘জাকাত’ অধ্যায়, বঙ্গানুবাদ বুখারি (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) ২/৭৮ পৃ.; মেশকাত হা/১৭৯০)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথ নিয়মে যাকাত আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর