সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘কোরআন-সুন্নাহর দীক্ষা পেলে কেউ মাদকাসক্ত হবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৫০ পিএম

শেয়ার করুন:

‘কোরআন-সুন্নাহর দীক্ষা পেলে কেউ মাদকাসক্ত হবে না’

সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ ও নৈতিক অবক্ষয় রোধ করতে মাদক নির্মূল করতে হবে বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্ট আলেম-উলামা ও ইসলামি চিন্তাবিদরা। তারা বলছেন, মাদক হলো সব অপরাধের মূল। ইসলামে মাদক নিষিদ্ধ। বাংলাদেশ থেকে মাদক নির্মূল করতে পারলে দেশের অন্যান্য সব অপরাধ কমে যাবে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও মাদকাসক্তি দূরীকরণে প্রতিটি মানুষের জন্য ইসলামি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরীনের সম্মেলনে ‘মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নৈতিক অবক্ষয় রোধে করণীয়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলামা আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা অধ্যাপক নূরুল আমীনের পরিচালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ। সম্মেলনে প্রধান আলোচকের বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আল্লামা সাইয়্যেদ কামাল উদ্দীন আব্দুল্লাহ জাফরী। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, মাওলানা মোশতাক ফয়েজী, মাওলানা ফজলুল করিম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, কোরআন ও সুন্নাহর সহিহ দীক্ষা পেলে সমাজে কোনো মানুষ খুন বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবে না। মাদকের ঘৃণ্য থাবায় নষ্ট হবে না যুবকদের সুন্দর জীবন। দেশের শ্রদ্ধাভাজন আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখ থেকে শুরু করে মসজিদের ইমাম-খতিবরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান নিয়ে সমাজে শান্তি রক্ষার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন। জঙ্গিবাদের সঙ্গে ইসলাম ধর্মের ন্যূনতম কোনো সম্পর্ক নেই। কোথাও বোমা মেরে, কিছু লোককে হত্যা করে কোনো উগ্রপন্থী ইসলামের নামে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে ফেলবে এমন নির্দেশনা ইসলামের কোথাও নেই। তারপরও জঙ্গিবাদ দমনে রাষ্ট্র, সমাজ ও ব্যক্তিপর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, সমাজের অবক্ষয়ের যে ধারা চলছে তা দেশবরেণ্য আলেম-উলামারা তাদের বক্তব্যে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। ১৯ শতকে শক্রকে মারার জন্য অস্ত্র তৈরি হলো আর মানুষের বিবেককে ধ্বংস করার জন্য মাদককে ছড়িয়ে দেওয়া হলো। যাতে করে মাদকাসক্ত ব্যক্তি দিয়ে সহজে বিকেক নষ্ট করে অস্ত্রের অপব্যবহার করা যায়। আজকাল সম্পদশালীদের সম্পদ আদান-প্রদানের মাধ্যম হচ্ছে মাদক। আমাদের আমাদের সন্তান ও সমাজকে মাদক মুক্ত থাকার জন্য সর্তক ও সাবধান হতে হবে। মাদকের কুফল সম্পর্কে সমাজের মানুষের কাজে তুলে ধরতে হবে। ইসলাম সার্বজনীন ধর্ম, ইসলামের সাথে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো সম্পর্ক নাই এবং সমর্থনও করে না কারণ ইসলামে মাদক ও অন্যায়ভাবে হত্যা নিষিদ্ধ। ইসলাম মানুষের কল্যাণে এসেছে।

আল্লামা সাইয়্যেদ কামাল উদ্দীন জাফরী বলেন, দেশের আলেমরা কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ঐক্যমত হয়েছে, এটাকে সাধুবাদ জানাই। ইসলাম মাধ্যমপন্থার ধর্ম। মানুষকে আল্লাহ পথে ডাকতে হবে কৌশল ও হিকমাত সহকারে। ইসলাম চরমপন্থা সমর্থন করে না। কোনো মুসলিম চরমপন্থা অবলম্বন করতে পারে না।


বিজ্ঞাপন


অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন বলেন, ধর্মীয় আচার মেনে চললে দেশে মাদক ও সন্ত্রাস হ্রাস পাবে। মাদক ও সন্ত্রাস রোধে ইসলামি আইনের বিকল্প নেই। মাদকবিরোধী আইনের নামে মাদককে আস্কারা দিলে দেশ ধ্বংসের অতল গহবরে তলিয়ে যাবে। মাদকাসক্ত ব্যক্তি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার পথ। এভাবে অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ মাদকের কবলে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মাদকের থাবায় নাস্তানাবুদ একটি প্রজন্ম। শহর থেকে গ্রাম, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্রই মাদক পাওয়া যাচ্ছে হাতের নাগালে।

মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, মাদক এক নীরব ঘাতক। ধর্ষণ, খুন, চুরি, ছিনতাই, বিবাহবিচ্ছেদের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার মূলে রয়েছে মাদক। পাড়া-মহল্লায় উঠতি বয়সের কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলো যে অপরাধমূলক কাজ করছে তার পেছনেও রয়েছে এই মাদক। সমাজে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বেড়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে মাদক। ইসলামে মাদক নিষিদ্ধ। বর্তমানে শুধু ছেলেরাই মাদক সেবন করছে তেমনটি নয়। গবেষণা বলছে, মাদকসেবীদের ১৬ শতাংশ নারী।

টিএই/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর