শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

স্ত্রীর খুশির জন্য দাড়ি কাটা যাবে?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২২, ০৩:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

স্ত্রীর খুশির জন্য দাড়ি কাটা যাবে?

দাড়ি রাখা ইসলামের শিআর বা নিদর্শন। এটি সকল নবীর সুন্নাত। আল্লাহ তাআলা পুরুষকে দাড়ি দিয়ে নারী জাতি থেকে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছেন। দাড়ি যথাযথভাবে রেখে এবং তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার সুযোগ রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশ সমূহকে সম্মান করে, নিশ্চয়ই সেটি হৃদয় নিঃসৃত আল্লাহভীতির প্রকাশ।’(সুরা হজ: ৩২)

‘রাসুলুল্লাহ (স.) গোঁফ খাটো এবং দাড়ি লম্বা করার নির্দেশ দিতেন (সহিহ মুসলিম: ১/১২৯, ২৫৯)

ইবনে ওমর রা. বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘মোচ উত্তমরূপে কাটো এবং দাড়ি লম্বা করো।’ (বুখারি: ২/৮৭৫)

রাসুলুল্লাহ (স.) ইহুদি, নাসারা, মুশরিক ও অগ্নিপূজকদের সাদৃশ্য অবলম্বন করতে নিষেধ করেছেন। দাড়ি রাখার মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধাচরণ করতে বলেছেন। কারণ তারা দাড়ি রাখে না। সাথে মুসলমানদের নির্দেশ দিলেন, তারা যেন অবশ্যই দাড়ি রাখে। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘গোঁফ কাটো এবং দাড়ি ঝুলিয়ে দাও, অগ্নি পূজারীদের বিরোধিতা করো।’ (মুসলিম: ১/১২৯)

কোনো বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর নির্দেশ সেই বিধানটি ওয়াজিব হওয়ার দলিল। এ ব্যাপারে হানাফি, শাফেয়ি, মালেকি ও হাম্বলি মাজহাবের সকল ইমামের ঐকমত্য রয়েছে যে, দাড়ি রাখা ওয়াজিব এবং দাড়ি মুণ্ডন করা বা শেভ করা হারাম।

তাই দাড়ি এমন কোনো সুন্নত নয়, যা রাখা-না রাখার স্বাধীনতা রয়েছে। বরং এটি ‘সুন্নতে ওয়াজিবা’। অর্থাৎ সুন্নতে মুয়াক্কাদা থেকেও এর গুরুত্ব বেশি।

সুতরাং স্ত্রীকে খুশি করার জন্য অথবা সমাজের বাঁকা দৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য দাড়ি কাটা, ছাটা বা মুণ্ডণ করা নাজায়েজ। কোরআন হাদিস কিংবা ফিকহের কিতাবে কোথাও এধরণের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। বরং দাড়ি রাখাই হচ্ছে ঈমানের দাবি ও আবশ্যকতা। আলেমদের নাসিহা হচ্ছে, দাঁড়ি রাখতে হবে এবং বর্তমান সমাজে দ্বীন নিয়ে বেঁচে থাকতে হলে সকল ভ্রু-কুটি ও ঝড়-ঝঞ্জা উপেক্ষা করে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। 

আর আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসুলের আদেশ অমান্যকারীর শাস্তির ব্যাপারে বলেন, ‘অতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সাবধান হোক যে, ফেতনা তাদেরকে গ্রাস করবে অথবা মর্মন্তুদ শাস্তি তাদের উপর আপতিত হবে (সুরা নূর: ২৪/৬৩)।

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, ‘আর রাসুল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ করো এবং যা নিষেধ করেন, তা হতে বিরত থাকো। আর আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা’ (হাশর ৫৯/৭)।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নবী-রাসুল ও সাহাবিদের সুন্নত অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। মা-বাবা কিংবা স্ত্রী-সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ইসলামের কোনো বিধানকে অবজ্ঞা করা থেকে হেফাজত করুন। একইসঙ্গে পারিবারিকভাবে বিশুদ্ধ ইসলাম চর্চার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর