বিতর নামাজের ওয়াক্ত এশার নামাজ আদায়ের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত। এর মধ্যে যেকোনো সময় বিতর পড়া যায়। তবে, আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে—
রাসুলুল্লাহ (স.) রাতে নামাজ আদায় করতেন, তখন আমি তার বিছানায় আড়াআড়িভাবে ঘুমিয়ে থাকতাম। এরপর তিনি যখন বিতর পড়ার ইচ্ছা করতেন, তখন আমাকে জাগিয়ে দিতেন এবং আমিও বিতর আদায় করে নিতাম। (বুখারি: ৯৯৭)
সায়িদ ইবনে ইয়াসার (রা.) বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)-এর সঙ্গে মক্কার পথে সফর করছিলাম। সায়িদ (রহ) বলেন, আমি যখন ফজর হওয়ার আশঙ্কা করলাম, তখন সাওয়ারি থেকে নেমে পড়লাম এবং বিতরের নামাজ আদায় করলাম। এরপর তার সঙ্গে মিলিত হলাম। তখন আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোথায় ছিলে? আমি বললাম, ভোর হওয়ার আশঙ্কায় আমি নেমে বিতর আদায় করেছি। তখন তিনি বললেন, রাসুল (স.)-এর মধ্যে কি তোমার জন্য উত্তম আদর্শ নেই? আমি বললাম, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম! তিনি বললেন, রাসুল (স.) উঠের পিঠে (আরোহী অবস্থায়) বিতরের সালাত আদায় করতেন। (বুখারি: ৯৯৯)
উপরোল্লিখিত হাদিসসমূহ থেকে বিতর নামাজের গুরুত্ব বোঝা যায়। স্বাভাবিক নিয়মে বিতর শেষ রাতে পড়াই উত্তম, যদি কেউ শেষ রাতে জাগ্রত হওয়ার ব্যাপারে আস্থাশীল থাকেন। কেননা হাদিসে এসেছে, নবী (স.) বলেছেন, বিতরকে তোমাদের রাতের শেষ সালাত করবে। (সহিহ বুখারি: ৯৯৮)
এশাসহ বাকি পাঁচ ওয়াক্তের ফরজ নামাজ না পড়লে যেমন গুনাহ, বিতর না পড়লেও তেমন গুনাহ। কারণ এটি সর্বসম্মতভাবে স্থায়ী ওয়াজিব। এ নামাজেরও কাজা আছে। কেউ কাফফারা দিলেও বিতরসহ দিতে হয়।
কখন পড়া উত্তম
বিজ্ঞাপন
বিতর নামাজ কখন পড়া উত্তম এ ব্যাপারে ফেকাহবিদদের অভিমত হলো—
রমজান মাসে বিতর নামাজ একাকি শেষ রাতে আদায় করার চেয়ে তারাবির পর জামাতের সঙ্গে আদায় করা উত্তম। আর অন্য মাসে কেউ যদি শেষ রাতে ওঠার ব্যাপারে নিজের প্রতি আস্থাশীল হয়, তাহলে তার জন্য শেষ রাতে পড়াই উত্তম। শেষ রাতে ওঠার ব্যাপারে আস্থাশীল না হলে এশার নামাজের পর বিতর পড়ে নেওয়া উচিত।
(তথ্যসূত্র: আলমুহিতুল বুরহানি: ২/২৬৫; ফতোয়া খানিয়া: ১/২৪৪; ফাতহুল কাদির: ১/৪০৯; শরহুল মুনইয়া, পৃ-৪২১; মারাকিল ফালাহ, পৃ-২১১)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিতর নামাজ ও অন্যান্য নামাজসহ শরিয়তের নানা বিষয়ে সহিহ সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন যাপনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

