ইসলামি শরিয়তের মূলনীতি হলো মুমিনের প্রতি সুধারণা পোষণ করতে হবে। এই সুধারণার অংশ হিসেবেই মুসলিম রেস্টুরেন্ট থেকে যাচাই-বাছাই ছাড়াই গোশত খাওয়া বৈধ। জবাইয়ের সময় বিসমিল্লাহ না বলার ধারণা করা অর্থহীন। তাই সচরাচর মুসলিম হোটেলগুলো থেকে গরু, খাসি বা মুরগির গোশত কিনে খেতে কোনো সমস্যা নেই।
তবে কোনো হোটেলের ব্যাপারে যদি নিশ্চিতভাবে জানা থাকে যে, সেখানে স্বেচ্ছায় বিসমিল্লাহ ছাড়াই জবাই করা হয় বা অমুসলিম কর্তৃক জবাই করা হয়, তাহলে সেখানকার গোশত খাওয়া কোনোক্রমেই বৈধ হবে না। (রদ্দুল মুহতার : ৬/২৯৯, ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া: ১৭/৪০১, আহসানুল ফতোয়া: ৮/১০৬)
বিজ্ঞাপন
কিন্তু সমসাময়িককালে এমন কিছু সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, যাতে আল্লাহভীরু মানুষের জন্য উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। যেমন বিরানির দোকানে গণ্ডারের পচা মাংস পাওয়া, হোটেলে মরা মুরগির মাংস, খাসির মাংস বলে কুকুর ও শিয়ালের মাংস খাওয়ানো ইত্যাদি। এমন ঘটনা দেশে বারবার ঘটছে। অথচ শরিয়তের দৃষ্টিতে মৃত প্রাণী ও কুকুর-শিয়ালের মাংস খাওয়া হারাম বা অবৈধ।’ (সুরা মায়েদা: ৩)
এ অবস্থায় হোটেলে গোশত খাওয়ার ব্যাপারে কোন মূলনীতি গ্রহণ করতে হবে? অবস্থা এমন হলে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং এটাই সর্বোত্তম সমাধান। গোশতের পরিবর্তে প্রয়োজনে শাক-সবজি খাওয়া উচিত হবে, যা হারাম হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বস্তুত সতর্কতার মাধ্যমেই ব্যক্তির ঈমান ও আমল রক্ষা পায়। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে সন্দেহজনক জিনিস থেকে বেঁচে থাকবে সে নিজের দ্বীন ও সম্মানকে রক্ষা করবে।’ (বুখারি: ৫২)
অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘কোনো বান্দা ততক্ষণ আল্লাহভীরুদের অন্তর্ভুক্ত হয় না, যতক্ষণ না সে হারামে লিপ্ত হওয়ার ভয়ে বৈধ জিনিসও পরিহার করে।’ (ইবনে মাজাহ: ৪২১৫)
উল্লেখ্য, জেনে-বুঝে কাস্টমারদের হারাম খাবার পরিবেশন করা ‘হারামকে হালাল ঘোষণা’র নামান্তর। ওসব অপরাধীদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কঠোর হওয়ার আদেশ করেছেন। অবশ্যই এ কাজ করবেন দায়িত্বশীলরা। অমুসলিম হলে জিজিয়া না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। (সুরা তাওবা: ২৯)
বিজ্ঞাপন
এছাড়া এটা প্রতারণা, যা ইসলামে নিষিদ্ধ। নবীজি (স.) ব্যবসায় প্রতারণাকারীদেরকে উম্মত নয় বলে ঘোষণা দিয়েছেন। (সহিহ মুসলিম: ১০২) আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক বিষয়ে ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

