তাহাজ্জুদ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। এই ইবাদত নেককার ও উত্তম বান্দাদের বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ প্রকৃত মুমিন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য গুরুত্বের সঙ্গে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। পবিত্র কোরআনে তাহাজ্জুদ আদায়কারীর প্রশংসায় ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা শয্যা ত্যাগ করে তাদের প্রতিপালককে ডাকে আশায় ও আশঙ্কায়..।’ (সুরা সাজদা: ১৬)
প্রিয়নবী (স.) জীবনে কখনও তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া থেকে বিরত থাকেননি। অসুস্থতা, ক্লান্তি বা অবসাদের সময়ও তিনি বসে তাহাজ্জুদ পড়তেন। (আবু দাউদ: ২/৩৩; আলবানি, সহিহুত তারগিব: ১/৩৩১) তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত, তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
বিজ্ঞাপন
কেউ তাহাজ্জুদের নিয়তে ঘুমালে তাহাজ্জুদ পড়তে না পারলেও তাহাজ্জুদের সওয়াব অর্জিত হবে এবং ঘুম হবে সদকা। এ প্রসঙ্গে এক হাদিসে আবু দারদা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যদি কেউ রাতে ওঠে তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত করে ঘুমায়, কিন্তু তার ঘুমের আধিক্যের কারণে ফজরের আগে উঠতে না পারে, তাহলে তার নিয়ত অনুসারে সওয়াব তার জন্যে লেখা হবে। আর তার ঘুম আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য দান বা সদকা হিসেবে গণ্য হবে।’ হাদিসটি সহিহ। (নাসায়ি: ২/২৮৭; ইবনে মাজাহ: ১/৪২৬-৪২৭; মুসতাদরাক হাকেম: ১/৪৫৫)
এ কারণে সাহাবিদের তাহাজ্জুদ পড়তে উৎসাহিত করতেন নবীজি (স.)। আবু উমামা বাহেলি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা অবশ্যই কিয়ামুল্লাইল পালন করবে। কারণ তা তোমাদের পূর্ববর্তী নেককার মানুষের অভ্যাস, তোমাদের জন্য তোমাদের প্রতিপালকের নৈকট্য, পাপের ক্ষমা, পাপ থেকে আত্মরক্ষার পথ (এবং দেহ থেকে রোগ-ব্যাধির বিতাড়ন)।’ (তিরমিজি: ৪৯; সহিহুল জামে: ২/৭৫২; আলবানি, সহিহুত তারগিব: ১/৩২৮)
আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘হে লোকসকল! তোমরা পরস্পর সালাম বিনিময় কর, অভুক্তকে খাবার আহার করাও এবং রাতের বেলা মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন নামাজ আদায় কর। তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।’ (ইবনে মাজাহ: ১৩৩৪) তাহাজ্জুদ নামাজের সূরা, মহিলাদের তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম Tahajjud namaj
হজরত বেলাল (রা.) বলেন, নবী কারিম (স.) বলেছেন, ‘তোমরা অবশ্যই রাতের ইবাদত করবে। কেননা তা তোমাদের পূর্ববর্তী সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের নিত্য আচরণ ও প্রথা। রাতের ইবাদত আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্য অর্জনের উপায়। পাপকর্মের প্রতিবন্ধক, গুনাহসমূহের কাফফারা এবং দেহের রোগ দূরকারী।’ (তিরমিজি: ৩৫৮৯) তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত, তাহাজ্জুদ নামাজের সময়, তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল
বিজ্ঞাপন
অন্য হাদিসে আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, নবী কারিম (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেন; কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আছে এমন, যে আমার নিকট চাইবে? আমি তাকে তা দেব। কে আছে এমন, যে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব।’ (বুখারি: ১১৪৫)
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাহাজ্জুদ পড়ার তাওফিক দান করুন। তাহাজ্জুদের নিয়তে ঘুমানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।

