শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বয়স সম্পর্কে যা বলছে ইসলাম

ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার বিষয়টিকে অনেক বড় করে দেখেন বাবা-মা। শিশু কথা বলতে শেখার পরই শুরু হয় তাকে পড়তে শেখানোর তোড়জোড়। কোনো কোনো দেশে চার বছর বয়সে বাচ্চাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়া শুরু হয়। আবার কোনো দেশে সাত বছরের আগে পড়ালেখা শুরু করা হয় না। কেউ বলেন অল্প বয়স থেকেই পড়তে শেখা শুরু করা উচিত, আবার কেউ বলেন ছয় বছর পূর্ণ হওয়ার আগে শিক্ষার চাপ শিশুর মেধার ক্ষেত্রে ক্ষতিকর। আসলে কোনটি সঠিক? এ ব্যাপারে ইসলামি সাজেশন জানতে চান অনেকে।

প্রিয়নবীজির একটি হাদিসের আলোকে বলা যায়, সাত বছর বয়স থেকে শিশুর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু করা যেতে পারে। নবীজি (স.) ইরশাদ করেন, তোমরা তোমাদের সন্তানদের সাত বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও। (আবু দাউদ: ৪৯৫)

এতে বোঝা যায়, নামাজ যদিও বালেগ হওয়ার পর ফরজ হবে; কিন্তু নামাজের শিক্ষাদান করতে হবে সাত বছর বয়স থেকেই। কাজেই সাত বছর বয়সই যথারীতি শিক্ষাদানের উপযুক্ত সময়।

এরপর বিলম্ব করা যেমন ঠিক নয়, তেমনি ৭ বছরের আগে চাপাচাপি করাও উচিত নয়। সেইসাথে শিক্ষার্থীর সক্ষমতার বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। শিশুর ব্রেইনের ধারণক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে এগোতে হবে। বেশি চাপ বর্জনীয়। নবীজি (স.) বলেন, ধীরস্থিরতা আল্লাহর পক্ষ হতে আর তাড়াহুড়া শয়তানের কাজ। (তিরমিজি: ২০১২)

তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে পবিত্র কোরআনের তেলাওয়াত শিক্ষা। আল্লাহ তাআলা স্বয়ং তা সহজ করে দিয়েছেন। শিশুর বয়স যত কমই হোক না কেন,  কোরআনের শিক্ষা তার ব্রেনে কোনোরূপ চাপ সৃষ্টি করে না।

মুখে বোল ফোটার সঙ্গে সঙ্গে যদি শিশুকে আল্লাহর নাম বা কালেমা—লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ শেখানো হয়, তবু সে তা সহজেই রপ্ত করতে পারে। এমন অভিজ্ঞতা কমবেশি সব মা-বাবারই আছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, সন্তানকে প্রথম কথা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ শেখাও এবং মৃত্যুর সময় তাদের ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তালকিন করো। (শুআবুল ঈমান: ৮৬৪৯)