শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম

শেয়ার করুন:

জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আলোচনা

যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভারে ন্যাশনাল কমিউনিকেশন অ্যাসোসিয়েশনের (এনসিএ) বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক গবেষকদের একাধিক গবেষণা উপস্থাপন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সেমিনারে জেন-জি-নির্ভর আন্দোলন কীভাবে কঠোর সেন্সরশিপ ও রাষ্ট্রীয় সহিংসতার মধ্যেও রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করা হয়। ‘ফ্রম রাইটস মুভমেন্ট টু রেজিম চেঞ্জ’ শিরোনামের বিশেষ সেশনটি পরিচালনা করেন সেন্ট মেরিস কলেজ, ইন্ডিয়ানার সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলা উদ্দিন। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এতে অংশ নিয়ে আন্দোলনকে টিকিয়ে রাখার সাংস্কৃতিক ও যোগাযোগভিত্তিক উপাদানগুলো আলোচনা করেন।


বিজ্ঞাপন


যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইডি গবেষক শাহ জাহান শুভ দেখিয়েছেন, সরকারি টেলিযোগাযোগ বন্ধের পরও জুলাই আন্দোলনকারীরা অনলাইন কার্যক্রমকে অফলাইনে রূপ দিয়ে ‘পোস্ট-ডিজিটাল’ এ্যাক্টিভিজমের গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও সাদার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটি কার্বনডেলের ফুলব্রাইট স্কলার ড. মো. হারিছুর রহমান ব্যাখ্যা করেন, ‘শোনো মহাজন’ ও ‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’-র মতো প্রতিবাদী গান কীভাবে দমন-পীড়নের সময় আবেগকে প্রতিরোধের শক্তিতে রূপান্তরিত করেছে।

সেন্ট্রাল নিউ মেক্সিকো কমিউনিটি কলেজের ড. দিদারুল ইসলাম মানিক দেখান, গ্রাফিতি বা দেয়াল লিখন কীভাবে সহিংস রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের মধ্যে জনপরিসর পুনর্দখল করে প্রতীকী ও ব্যঙ্গাত্মক প্রতিবাদের ভাষা তৈরি করেছে এবং আন্দোলনকারীদের সংগঠিত করেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক সাইকা শাহজাদি বিশ্লেষণ করে বলেন, পাকিস্তানি গণমাধ্যম কীভাবে জুলাই আন্দোলনকে রাজনৈতিক অস্থিরতা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা উদ্বেগ ও নেতৃত্ব সংকটের ফ্রেমে উপস্থাপন করেছে, যেখানে তরুণদের ভূমিকা প্রায়শই আড়ালে থেকে গেছে।

সেশনের বাইরে আরও তিনটি গবেষণা উপস্থাপনা হয়। ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ার এ. কে. এম. জমির উদ্দিন দেখান, ১৪ জুলাই শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলন কীভাবে জনমত ভুলভাবে পড়ার ফলে সংকট আরও তীব্র করে। 


বিজ্ঞাপন


সাংহাই জিয়াও টং বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাতেমা আমিনের তথ্যচিত্র ’থার্টিসিক্স জুলাই’-এ দেখানো হয়, “জুলাই ৩৬”-এর প্রতীকী সময়বিস্তারণ কীভাবে আন্দোলনের গতিশীলতা ও স্মৃতিকে ধরে রাখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরও।

গবেষকেরা উল্লেখ করেন, জুলাই অভ্যুত্থান এখন বৈশ্বিকভাবে সমসাময়িক সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলন বোঝার এক রেফারেন্স পয়েন্টে পরিণত হচ্ছে। সংগীত, মিম, স্ট্রিট আর্ট এবং অফলাইন সংগঠনের সমন্বয়ে এটি নজিরবিহীন রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এই আন্তর্জাতিক মনোযোগ কেবল ইতিহাস পুনর্বিবেচনার সুযোগ নয়, বরং বিশ্বস্তরেই একাডেমিক বোঝাপড়া ও ব্যাখ্যা গঠনে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করেছে।

জুলাই প্যানেলের সংশোধিত গবেষণাগুলো ব্লুমসবারি থেকে শিগগির প্রকাশিত ‘প্রকাশিতব্য ক্রিটিক্যাল মিডিয়া পারস্পেকটিভ অন দ্য ২০২৪ বাংলাদেশ আপরাইজিং’ শীর্ষক গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হবে।

এম/ক.ম 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর