শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

এবার ইফতার আয়োজন থাকছে না আওয়ামী লীগের

ওয়াজেদ হীরা, কাজী রফিক
প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৩, ১২:৪১ পিএম

শেয়ার করুন:

এবার ইফতার আয়োজন থাকছে না আওয়ামী লীগের

সারা বিশ্বের চিত্র পাল্টে দেওয়া কোভিড-১৯ ভাইরাসের সময় ইফতার আয়োজন থেকে সরে এসেছিল রাজনৈতিক দলসহ সামাজিক সংগঠনগুলো। উপমহাদেশের অন্যতম বড় দল আওয়ামী লীগও সে সময় ইফতার আয়োজন করেনি। গত বছর করোনার প্রকোপ কমে আসলে কিছু ইফতার পার্টি ছিল। এবার নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের আরও বেশি ইফতার আয়োজন হতে পারে এমন প্রত্যাশা ছিল অনেকেরই। তবে এবার তা হচ্ছে না। বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কৃচ্ছ্বতা সাধনের লক্ষ্যে আসন্ন রমজানে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে কোনো ইফতার আয়োজন রাখছেন না। একইভাবে ক্ষমতাসীন দলের আয়োজনেও আনুষ্ঠানিক কোনো ইফতার অনুষ্ঠান এবারও হবে না।

প্রধানমন্ত্রী উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার ঢাকা মেইলকে নিশ্চিত করে বলেন, গণভবনে প্রধানমন্ত্রী এবার আনুষ্ঠানিক কোনো ইফতার আয়োজন রাখেননি। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর যে সাশ্রয়ী নীতি অবলম্বন করেছেন এবং ব্যক্তিগত জীবনে সেটারই অংশ হিসেবে তিনি এবার কোনো ধরনের ইফতার পার্টি করবেন না। ইফতারে সংযম এবং ব্যয় সংকোচন করবেন। 


বিজ্ঞাপন


হাসান জাহিদ তুষার জানান, আনুষ্ঠানিক আয়োজন না রাখার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ইফতারও হবে সাদামাটা। তিনি বলেন, 'তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এবার একদমই সাদামাটা ইফতার করবেন। ব্যক্তিগত ইফতারে তিনি কৃচ্ছতা সাধন করবেন।' 

ifter

তিনি আরও বলেন, গণভবনে সাধারণত ইফতার পার্টি করলে প্রচুর মানুষ আসত এবং এতে প্রচুর পরিমাণে টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ব্যয় হতো। সেটা তিনি কৃচ্ছতা সাধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ইতোমধ্যে প্রায় ২৫ কোটি টাকার মতো সাশ্রয় করেছে। এই সাশ্রয়ী নীতি তিনি পালন করছেন।

তুষার জানান, গণভবনে যেখানে আটটি লাইট ব্যবহার হতো সরকারপ্রধান এখন সেখানে দুটি লাইট ব্যবহার করেন। আবার এ বিষয়ে তিনি নিজেই খেয়াল রাখেন।


বিজ্ঞাপন


এদিকে, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানমালায় ইফতারের কোনো অনুষ্ঠান সংযোজন হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন দলটির উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ইফতার আয়োজনের বিষয়ে এ বছর এখনও কোনো সিডিউল হয়নি। এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সভাপতি। সাধারণত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আয়োজিত বিভিন্ন ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বা সভাপতি করা হতো তাকে। তবে এবার তা হচ্ছে না।

দলীয় একাধিক নেতা ঢাকা মেইলকে বলেন, অনেকেই এবারের ইফতারকে রাজনৈতিকভাবে বেশি প্রত্যাশা করবে। কারণ সামনে নির্বাচন। তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতিও দেখতে হবে। আওয়ামী লীগ দল গণমানুষের দল। তাই কৃচ্ছ্বতা সাধন করতে হবে পরিস্থিতি বুঝে। 

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে সেভাবে কোনো ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন হচ্ছে না। ক্ষমতাসীন দলের উপ-কমিটিগুলো অন্যান্য বছর যে ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবার তাও আয়োজিত হবে না।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কোনো ইফতার পার্টির আয়োজন না রাখলেও আসন্ন রমজান মাসে চারটি ইফতার মাহফিল আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পবিত্র রমজান মাসে আলেম-ওলামা ও এতিম, বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং কূটনীতিকদের সম্মানে চারটি ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া, ঢাকা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকেও একাধিক ইফতার পার্টির আয়োজন করা হবে। এসব ইফতার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

ডব্লিউএইচ/কারই/এমএইচএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর