জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, দেশের মানুষ কাঙ্খিত মুক্তি পায়নি। যে মুক্তির জন্য দীর্ঘকাল ধরে সংগ্রাম করেছে সেই মুক্তি পায়নি। এখনও দুঃশাসন থেকে মুক্তি পায়নি দেশের মানুষ।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে নিজের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কেটে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
জি এম কাদের বলেন, দীর্ঘকাল দেশের সাধারণ মানুষ বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। জমিদার ও রাজারা সাধারণ মানুষকে মানুষ বলেই গণ্য করেনি। এমন বৈষম্য ছিল যে, সাধারণ মানুষকে জুতা পায়ে হাঁটতে দেয়নি। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ সড়কেও সাধারণ মানুষকে হাঁটতে দেওয়া হতো না।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, বিভিন্নভাবে মানুষ নিগৃহিত হয়েছেন, বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। পাকিস্তান আমলেও আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছিলাম। ভালো করলেও বাঙালিদের চাকরি দেওয়া হতো না, প্রমোশন দেওয়া হতো না বাঙালিদের। সেনাবাহিনীতে বাঙালিদের প্রমোশন দেওয়া হতো না। সুশাসন ছিল না, আইনের শাসন ছিল না। আমাদের হেয় করে দেখা হতো, অত্যাচার ও নিপিড়নের শিকার হতে হয়েছে আমাদের। দেশের মানুষ বিভিন্ন সময়ে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে।
তিনি আরও বলেন, সেই মুক্তি সংগ্রাম একাত্তরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে রুপ নিয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ স্বাধীন হয়েছে, একটি ভূখণ্ড ও পতাকা পেয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশের লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে। সেই স্বাধীনতার স্বপ্ন ও চেতনা কী বাস্তবায়ন হয়েছে? দেশের মানুষ কি বৈষম্য, নির্যাতন ও নিপিড়ন থেকে মুক্তি পেয়েছে? দেশের মানুষ কাঙ্খিত মুক্তি পায়নি। দেশের মানুষ যে মুক্তির জন্য দীর্ঘকাল ধরে সংগ্রাম করেছে সেই মুক্তি পায়নি সাধারণ মানুষ। এখনও দুঃশাসন থেকে মুক্তি পায়নি দেশের মানুষ।
জি এম কাদের বলেন, এখনও দেশের মানুষের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। যারা দল করে তাদের অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। সরকারি দলের উপজেলা পর্যায়ের নেতারা হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। তাদের দেশে টাকা রাখার জায়গা নেই, তারা বিদেশে টাকা পাচার করছে। সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার করছে, তাদের চাঁদাবাজি থেকে ভিক্ষুকও রেহাই পায় না।
বিজ্ঞাপন
দেশে আইনের শাসন নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের মানুষের ধারণা আইন নিজের গতিতে চলতে পারছে না। ভালো মানুষ সমাজে টিকতে পারছে না। ভালো মানুষেরা সন্তানদের বিদেশ পাঠিয়ে দিতে চেষ্টা করছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ ইউরোপ-আমেরিকায় যেতে আবেদন করেছে। সাধারণ মানুষ নিজ দেশকে নিরাপদ মনে করছে না। আইনশৃখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আমরা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছি না। বৈষম্যহীন ও ন্যায় বিচার ভিত্তিক একটি সমাজ গঠন হয়নি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু , কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা , এডভোকেট সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, এসএম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।
টিএই/এমএইচএম

