শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে: ফখরুল

বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে ৮ ফেব্রুয়ারি এক কলঙ্কজনক দিন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০১৮ সালের এই দিনে প্রতিহিংসাপরায়ণ আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে দেশের জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ১/১১’র জরুরি অবস্থায় সরকারের বিরাজনীতিকরণের মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি সাজা দিয়ে অন্যায়ভাবে আটক রেখেছে। 

তিনি বলেন, শুধু ফরমায়েশি সাজা দিয়ে তাকে আটক রাখা হয় নাই, তার প্রাপ্য জামিনের অধিকার কেড়ে নিয়ে ২৫ মাস অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি রেখেছিল। বন্দি থাকা অবস্থায় সু-চিকিৎসার অভাবে তার অসুস্থতা আরও তীব্র হয় এবং তার জীবন হুমকির মুখে পড়ে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে উঠে। এই আন্দোলনকেও দমন করতে সরকার নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়। দেশ-বিদেশে সর্বত্র বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি সোচ্চার হয়।


বিজ্ঞাপন


বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারী) বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৫ম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনগতভাবে বারবার তার জামিনের আবেদন করা হলেও সরকারের হস্তক্ষেপে জামিন দেওয়া হয়নি। আইনি লড়াই করতে বিদেশ থেকে আইনজীবী আসতে চাইলেও সরকারের আপত্তির কারণে তাকে আসতে দেওয়া হয় নাই। পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে শর্ত সাপেক্ষে সরকার তার সাজা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে তাকে প্রকারান্তরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তার উন্নত, উপযুক্ত সু-চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে উন্নত বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর সুপারিশ করলেও, সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয়নি। 

মির্জা ফখরুল বলেন, এসব ঘটনায় দিবালোকের মত সত্য প্রমাণিত হয় যে, সরকারের অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী, আইন পরিপন্থী কার্যকলাপ, দুর্নীতি, লুটপাট, ভোটের নামে প্রহসন নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে ফ্যাসিবাদী সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যই ফরমায়েশি সাজা দিয়ে, তার সকল আইনগত অধিকার কেড়ে নিয়ে তাকে আটক করে রেখেছে। অপরাধ না করেও ফ্যাসিবাদী সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে হেয় প্রতিপন্ন ও জনমতকে বিভ্রান্ত করতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে, প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। কিন্তু জনগণ জানেন ও বিশ্বাস করেন তাদের প্রিয় নেত্রী কোনো অপরাধ করেন নাই। শুধুমাত্র সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়ার উপর নির্মম, নিষ্ঠুর জুলুম নেমে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া জনগণের কল্যাণে, অধিকার আদায়ে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নিরন্তরভাবে লড়াই করে চলেছেন। এজন্য জনগণ তাকে ‘দেশনেত্রী’, ‘আপোষহীন নেত্রী’, ‘গণতন্ত্রের মাতা’ বলে অবিহিত করেন। বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বের কারণেই ৯০ দশকে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি, রূপকারও ছিলেন তিনি। স্বৈরাচারের পতনের পর তার হাত ধরেই দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের নবযাত্রা শুরু হয়েছে। ৯০ পরবর্তী অবাধ-সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণের বিপুল রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে তিনি স্বৈরাচারের ধ্বংস স্তুপের উপর আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের যাত্রা শুরু করেছিলেন। তার নেতৃত্বেই সে সময় বিশ্বে বাংলাদেশ “ইমার্জিং টাইগার” অর্থাৎ উদীয়মান বাঘ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়েছিল। 


বিজ্ঞাপন


মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে বন্দি রাখা মানে গণতন্ত্রকে বন্দি রাখা। সরকার খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে গণতন্ত্রকে বন্দি রেখেছে। বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র আজ যেন সমার্থক। বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি হলে গণতন্ত্রের মুক্তি হবে। গণতন্ত্রের মুক্তি হলেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে। জনগণ আজ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে অবতীর্ণ। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্র বিরোধী সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি সন্নিবেশিত করে ১০ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ওপর জেল-জুলুম, নির্মম-নির্যাতন হয়েছে, তার অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। আমি সমগ্র দেশবাসীর পক্ষ থেকে সরকারের এই নির্মম নির্যাতনের তীব্র ধিক্কার জানাই। সরকারের অন্যায় চাপ ও অগণতান্ত্রিক কাজের প্রতি মাথা নত করেন নাই, আপোষ করেন নাই বেগম খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে জনবিচ্ছিন্ন সরকার ভয় পায়। এজন্যই তার ওপর এত জুলুম নির্যাতন নেমে এসেছে। তিনি বাংলাদেশের মানুষের সাহসের বাতিঘর। 

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এবং তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।

এমই/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর