শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

খালেদা জিয়ার কারাবরণের পাঁচ বছর, কোনো কর্মসূচি নেই বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

খালেদা জিয়ার কারাবরণের পাঁচ বছর, কোনো কর্মসূচি নেই বিএনপির

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের এইদিনে দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয়। খালেদা জিয়ার কারাবরণের ৫ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি)। তবে দলীয় প্রধানের পাঁচ বছর কারা দিবসে কোনো কর্মসূচি নেই বিএনপির।

বিএনপি নেতারা বলছে, খালেদা জিয়ার কারাবরণের দিবসে শুধু একদিনে বা দিবসের মধ্যে আবদ্ধ করতে চান না। বিএনপির ১০ দফার ভিত্তিতে চলমান আন্দোলনে রয়েছে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়। এ বিষয়ে কর্মসূচি সব সময় চলছে, আগামীতেও চলবে।


বিজ্ঞাপন


বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়ার) কারাবরণ দিবসে সেইভাবে কোনো কর্মসূচি নেই। তবে এ বিষয়ে মহাসচিবের বিবৃতি দেবেন।

তিনি আরও বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি ম্যাডামের কারাবরণ দিবসে কর্মসূচি দেওয়া হয় না। আগেও দেওয়া হয়নি, এবারও দেওয়া হয়নি। তবে সেনাসমর্থিত ফখরুদ্দীন আহমেদ সরকারের সময়ে তিনি গ্রেফতার হন। সে দিবসে কর্মসূচি দেওয়া হয়।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দণ্ডিত হওয়ার পর তাকে নেওয়া হয়েছিল পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে। কয়েক দফায় সেখান থেকে এনে তাকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ২০২০ সালে করোনার আবির্ভাব হলে ২৫ মার্চ নানান শর্তসাপেক্ষ সরকারের নির্বাহী আদেশে ৬ মাসের মুক্তি পান খালেদা জিয়া।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বর্তমান সরকারের অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী, দুঃশাসন নির্বিঘ্ন করতে, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য ফরমায়েশি রায়ে সাজা দিয়েছে। সেই রায়ে খালেদা জিয়াকে ২৫ মাস জেলে রেখেছে। শুধু জেলে রেখে ক্ষান্ত হয়নি, জামিনের যে অধিকার সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এটা
বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসাবে বিবেচিত হবে। সরকার কাছে মাথানত করেন নাই খালেদা জিয়া, আপোষ করেন নাই বলেই তাকে এই পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। 


বিজ্ঞাপন


খালেদা জিয়ার কারাবরণ দিবসে বিএনপির কোনো কর্মসূচি নেই কেনো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা দশ দফা দাবিতে আন্দোলন করছি। সেখানে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিটা আছে। এ দাবিতে প্রতিনিয়ত বিএনপি কর্মসূচি পালন করছে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় এই দাবিতে পদযাত্রা আছে। ১১ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে ইউনিয়নে পদযাত্রা আছে। ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় আবার পদযাত্রা আছে। খালেজা জিয়ার মুক্তির দাবি আমাদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত। তবে আজকে আলাদাভাবে কোনো কর্মসূচি নেই। শুধু দিবসের মধ্যে খালেদা জিয়া কারাবরণ ও মুক্তি শুধু দিবসের মধ্যে রাখার পক্ষে না বিএনপির এই নেতা।

২০২০ সালে ২৫ মার্চ মুক্তির পর থেকে গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সাজা স্থগিতের মেয়াদ ষষ্ঠবারের মত বাড়ানো হয়। প্রতিবার একই শর্তে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। শর্ত হলো, মুক্ত থাকার সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থাকবেন এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

৭৭ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর ২০২১ সালের এপ্রিলে খালেদাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর কয়েক দফা হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর বাসায় ফেরেন তিনি।

২০২১ নভেম্বরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা। গত জুনে ওই হাসপাতালেই খালেদা জিয়ার হৃৎপিণ্ডের ব্লক অপসারণ করে একটি ‘স্টেন্ট’ বসানো হয়। নানা জটিলতার উন্নত চিকিৎসার দাবি করে তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার। কিন্তু সাময়িক মুক্তির শর্তে কথা উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।

এমই/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর