শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

সুযোগ পেলে আবার জনগণকে ছোবল মারবে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

সুযোগ পেলে আবার জনগণকে ছোবল মারবে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'বিএনপি এখন যদিওবা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের বাহানা করছে, কিন্তু সুযোগ পেলেই আবার নাশকতা করবে, জনগণকে ছোবল মারবে। তাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।'

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বন্দরনগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদের সঞ্চালনায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন।


বিজ্ঞাপন


হাছান মাহমুদ বলেন, 'বিএনপি জানে নির্বাচনে তাদের কোনো সম্ভাবনা নেই, তাই তারা অনেক ষড়যন্ত্র এঁকেছে। নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা করার ষড়যন্ত্র করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজপথের দল। আমরা রাজপথে নেমেছি, নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে থাকব। কাউকে দেশে বিশৃঙ্খলা করতে দেয়া হবে না। যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায় আওয়ামী লীগ জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের প্রতিহত করবে।’

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'দিয়াশলাইয়ের কাঠিতে যেমন খোঁচা দিলে জ্বলে ওঠে তেমনি আমাদের নেতাকর্মীদের একটা গুণ হলো খোঁচা দিলে তারা জ্বলে ওঠে। বিএনপি আমাদের খোঁচা দিয়েছে, আমরা জ্বলে উঠেছি, রাজপথে নেমেছি। আগামী নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনা ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আর ঘরে ফিরে যাবে না।'

অতীতের উদাহরণ দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, 'তারা ঘোষণা দিয়েছিল গত ১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় করে দেবে, ১০ লক্ষ মানুষের সমাবেশ করবে, ১০ তারিখের পর বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে না কি দেশ চলবে। তারা যাতে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ করতে পারে সেজন্য আমরা বললাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে না গেলেও বাণিজ্য মেলার মাঠ কিংবা বিশ্ব ইজতেমার মাঠে যান। তারা বলল, নয়াপল্টনের অফিসের সামনেই সমাবেশ করবেন। শেষ পর্যন্ত গরুর হাটের মাঠে সমাবেশ করল। আর তাদের অফিসে পাওয়া গেল তাজা বোমা, দুই লাখ পানির বোতল, কয়েক টন চাল। তার মানে, তাদের পরিকল্পনা ছিল ঢাকা শহরে বোমাবাজি করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।'

মন্ত্রী বলেন, 'এরপর বিএনপি দিল হাঁটা কর্মসূচি, পদযাত্রা। মানুষ বলে, বিএনপির মনে হয় দম ফুরিয়ে গেছে। দুর্মূখেরা এও বলছে যে বিএনপি ভবিষ্যতে হামাগুড়ি দেওয়া শুরু করবে। এখন তারা সমগ্র বাংলাদেশে আটটি জায়গায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।'


বিজ্ঞাপন


'বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না' সাফ জানিয়ে মন্ত্রী হাছান বলেন, 'দুনিয়ার কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই, আছে শুধু একমাত্র পাকিস্তানে। বাংলাদেশ পাকিস্তানকে অনুকরণ করে না, পাকিস্তান এখন বাংলাদেশকে অনুকরণ করে। সংসদীয় গণতান্ত্রিক সকল দেশে যেই সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশেও নির্বাচনকালীন  জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকবেন, তার সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। আর নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।'

সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য নঈম উদ্দিন চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, উপদেষ্টা শফর আলী, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ প্রমুখ।

উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা তথ্যমন্ত্রীর

এদিকে শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন তথ্যমন্ত্রী। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. হাছান বলেন, 'এটি নির্বাচনের বছর। সাংবাদিকরা জনমত গঠন করে, মানুষের মনন তৈরি করে। অবশ্যই সাংবাদিকরা সমালোচনাও করবেন, কিন্তু একটি কথা আমাদের মাথায় রাখতে হবে- দেশ কি এগুবে, না কি পশ্চাৎপদ হবে! দেশ কি পাকিস্তান হবে না কি মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর হবে!'

FF

দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে মন্ত্রী বলেন, 'আগামী নির্বাচন দেশের জন্য এবং জাতির জন্য অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। কারণ সেই নির্বাচনে ফয়সালা হবে দেশের যে উন্নয়ন অগ্রগতি চলমান সেটি অব্যাহত থাকবে না কি দেশ আবার পশ্চাৎপদ হবে। সে জন্য আমি তথ্যমন্ত্রী হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে আপনাদের সহযোগিতা চাই।'

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন সাংবাদিকবান্ধব নেত্রী। তার সরকার সাংবাদিকবান্ধব সরকার। সে কারণেই সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে দল-মত নির্বিশেষে সাংবাদিকদের সহায়তা করা হচ্ছে। এর বাইরেও প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব ঐচ্ছিক তহবিল থেকে মাঝেমধ্যেই সাংবাদিকদের সহায়তা করে থাকেন। ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় থাকলে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়ে সমাধান করা হবে।'

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি তপন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শামছুল ইসলামের সঞ্চালনয় সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ও মন্ত্রীর সাথে চেক বিতরণে অংশ নেন।

জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর