শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

জেল খেটে বের হয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সরব তারা

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০৭:৪৪ এএম

শেয়ার করুন:

জেল খেটে বের হয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সরব তারা

টানা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। এই দীর্ঘ সময়ে দলের মধ্যেই পাখা মেলে অনেক গডফাদার। অনেকেই হয়ে যান টাকার কুমির। তাদেরকে শায়েস্তা করতে ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগ 'শুদ্ধি অভিযান' হাতে নেয়। এই অভিযানে গ্রেফতার হন বেশ কয়েকজন নেতা। যাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং স্থানীয়ভাবে রাঘববোয়াল হয়ে যাওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা ছিল বেশ দীর্ঘ।

এরপর কেটে গেছে তিন বছর। এরমধ্যে জেল খেটে ছাড়া পেয়েছেন অভিযানে গ্রেফতার হওয়া অনেকেই। জামিনে এসে আবারও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সরব দেখা গেছে অনেককে। তবে গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন তারা।


বিজ্ঞাপন


তাদের একজন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সরকারের শুদ্ধি অভিযানের সময় গ্রেফতার হয়েছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি সম্রাট। তার কাকরাইলের কার্যালয় থেকে জব্দ করা হয়েছিল অস্ত্র ও মাদক। এরপর তার বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র ছাড়াও জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা হয়। এসব মামলায় কারাগার আর হাসপাতালে কেটেছে তিন বছরের বেশি সময়।

kazi-1এরপর জামিনে বেরিয়েই রাজনৈতিক কার্যক্রমে সক্রিয় হয়েছেন ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। গত ১১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের সমাবেশের আগে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন সম্রাট। সমাবেশের দিন নিজের অস্তিত্ব ও সক্ষমতার পরিচয় তুলে ধরেন সাবেক এই যুবনেতা।

বিভিন্ন সূত্র মতে, সম্রাটের নেতৃত্বে অন্তত ৫০ হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেয়, যাদের প্রত্যেকের শরীরে ছিল সম্রাটের নাম-ছবি সম্বলিত টি-শার্ট। নেতাকর্মীদের কণ্ঠে ছিল সম্রাটের পক্ষে নানা ধরনের স্লোগান।

জানা গেছে, স্থানীয় রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন সম্রাট। নেতাকর্মীদের নিয়ে নানা কার্যক্রমও চালিয়ে যাচ্ছেন।


বিজ্ঞাপন


সম্রাট গ্রেফতারের পাঁচ দিনের মাথায় গ্রেফতার হয়েছিলেন হাবিবুর রহমান মিজান। ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার সময় র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। মিজান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। পাশাপাশি মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।

মিজানের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, ভূমিদখল, চাঁদাবাজিসহ মোহাম্মদপুর বিহারি ক্যাম্পে মাদক ও চোরাই গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ বেশকিছু অভিযোগ ছিল।

kazi-2তিন বছরের বেশি সময় জেল খাটার পর গত অক্টোবরে জামিন পান মিজান। এরপর আবারও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।

স্থানীয়দের মতে, মিজান জেল থেকে বের হয়েই নেতাকর্মীদের সক্রিয় করতে ব্যস্ত সময় পার পারছেন। নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি। সম্প্রতি বিএনপির কর্মসূচির সময় রাজধানীর শ্যামলীতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে তাকে।

মিজানের ৯ দিন পর গ্রেফতার হয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আরেকজন কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব। তিনি ৩৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলদারির অভিযোগে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছিল র‍্যাব। পরে মোহাম্মদপুরে তার বাসা ও অফিসে রাতভর চলে অভিযান।

অস্ত্র, মাদক ও জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ বেশ কয়েকটি মামলা হয় রাজীবের বিরুদ্ধে। মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকও। সেসব মামলায় প্রায় সাড়ে তিন বছর জেল জেল খাটেন রাজীব।

kazi-3

গত অক্টোবরে জামিনে মুক্ত হয়েই আবারও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করেছেন রাজীব।

বিএনপির কর্মসূচির সময় আওয়ামী লীগের অবস্থান কর্মসূচিতে দেখা গেছে রাজীবকে। নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের ২২তম সম্মেলনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ব্যাপক শোডাউন করেছেন সাবেক এই যুবলীগ নেতা।

জেল থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করলেও গণমাধ্যমের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেই চলছেন এই নেতারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তারেকুজ্জামান রাজীব।

কারই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর