সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ছিলেন যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:১৫ এএম

শেয়ার করুন:

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ছিলেন যারা

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন আজ। আওয়ামী লীগ সৃষ্টির এক বছর আগে জন্ম নেওয়া উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনটি ইতোমধ্যে ৭৪টি বসন্ত পার করেছে। দীর্ঘ এই সময়ে সংগঠনটির সম্মেলন হয়েছে ২৯ বার, নেতৃত্ব দিয়েছেন মোট ৫৭ জন।

বাঙালি জাতির মুক্তির মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে জন্ম নেওয়া সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি হলে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


প্রতিষ্ঠাকালীন সংগঠনটির নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’। সব ধর্ম, বর্ণের মানুষের জন্য পাকিস্তান আমলেই সংগঠনটির নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। আর স্বাধীনতার পর নাম হয় ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’।

বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের প্রেরণা ও পৃষ্ঠপোষকতায় একঝাঁক সূর্যবিজয়ী স্বাধীনতাপ্রেমী তারুণ্যের উদ্যোগে গঠিত ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে মানুষের অধিকার আদায়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদের জন্য দৌড়ঝাঁপ

জন্মের প্রথম লগ্ন থেকেই ভাষার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের সাত দশকের সবচেয়ে সফল সাহসী সারথি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এজন্য ত্যাগ কম করেনি সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে জীবন দিতে হয়েছে সংগঠনটির অনেক নেতাকর্মীকে। তারপরেও পিছপা হয়নি সংগঠনটি। দেশকে এগিয়ে নিয়ে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।


বিজ্ঞাপন


ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে ছিলেন যারা

ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ কমিটি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সংক্ষেপে নির্বাহী সংসদ নামে অভিহিত হয়। সংগঠনের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক ফোরামের নাম কেন্দ্রীয় কমিটি।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে সুদীর্ঘ পথচলায় সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হয়েছেন ৫৭ জন। তাদের মধ্যে খালেক নেওয়াজ খান ও কামরুজ্জামান একবার সাধারণ সম্পাদক ও একবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া এম এ আউয়াল দুইবার সাধারণ সম্পাদক, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ও মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন একবার সাধারণ সম্পাদক, একবার সভাপতি এবং আব্দুর রাজ্জাক দুইবার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়কের ভূমিকা পালন করেন নাঈমউদ্দিন আহমেদ এবং পরবর্তীতে সাংগঠনিকভাবে ছাত্রলীগের সভাপতি মনোনীত হন দবিরুল ইসলাম। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খালেক নেওয়াজ খান।

১৯৪৮ নাইমউদ্দিন আহমেদ (আহ্বায়ক), ১৯৪৮-১৯৫০ দবিরুল ইসলাম সভাপতি ও খালেক নেওয়াজ খান সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৫০-১৯৫২ খালেক নেওয়াজ খান সভাপতি ও কামরুজ্জামান সাধারণ সম্পাদক, ১৯৫২-১৯৫৩ কামরুজ্জামান সভাপতি ও এম এ ওয়াদুদ সাধারণ সম্পাদক হন।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের সম্মেলন ঘিরে জমজমাট আ.লীগ সভাপতির কার্যালয়

১৯৫৩-১৯৫৭ আব্দুল মোমিন তালুকদার সভাপতি, এম এ আউয়াল সাধারণ সম্পাদক; ১৯৫৭-১৯৬০ রফিকুল্লাহ চৌধুরী সভাপতি, আযহার আলী (বিদেশে গমন) শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন (ভারপ্রাপ্ত) সম্পাদক হন।

১৯৬০-১৯৬৩ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন সভাপতি ও শেখ ফজলুল হক মনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

১৯৬৩-১৯৬৫ কে এম ওবায়েদুর রহমান সভাপতি, সিরাজুল আলম খান সাধারণ সম্পাদক, ১৯৬৫-১৯৬৭ সৈয়দ মাজহারুল হক বাকী সভাপতি, আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদ, ১৯৬৭-১৯৬৮ ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী সভাপতি, আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক হন।

১৯৬৮-১৯৬৯ আব্দুর রউফ (বহিষ্কৃত) সভাপতি, খালেদ মোহাম্মাদ আলী সম্পাদক; ১৯৬৯-১৯৭০ তোফায়েল আহমেদ সভাপতি, আ স ম আব্দুর রব সম্পাদক, ১৯৭০-১৯৭২ নূরে আলম সিদ্দিকী সভাপতি, শাহজাহান সিরাজ (বহিষ্কৃত), ইসমত কাদির গামা সম্পাদক হন।

১৯৭২-১৯৭৩ শেখ শহিদুল ইসলাম সভাপতি, এম এ রশিদ সম্পাদক, ১৯৭৩-১৯৭৪ মনিরুল হক চৌধুরী সভাপতি, শফিউল আলম প্রধান (বহিষ্কৃত), মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন সম্পাদক, ১৯৭৬-১৯৭৭ এম এ আউয়াল (আহ্বায়ক) হন।

১৯৭৭-১৯৮১ ওবায়দুল কাদের সভাপতি, বাহালুল মজনুন চুন্নু সম্পাদক, ১৯৮১-১৯৮৩ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন সভাপতি, খ ম জাহাঙ্গীর সম্পাদক, ১৯৮৩-১৯৮৫ আব্দুল মান্নান সভাপতি, জাহাঙ্গীর কবির নানক সম্পাদক, ১৯৮৬-১৯৮৮ সুলতান মোহাম্মাদ মনসুর সভাপতি, মো. আব্দুর রহমান সাধারণ সম্পাদক, ১৯৮৮-১৯৯২ হাবিবুর রহমান (বহিষ্কৃত), শাহে আলম (কার্যকরী)– আসীম কুমার উকিল, ১৯৯২-১৯৯৪ মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী সভাপতি, ইকবালুর রহিম সাধারণ সম্পাদক হন।

১৯৯৪-১৯৯৮ এ কে এম এনামুল হক শামীম সভাপতি, ইসহাক আলী খাঁ পান্না সম্পাদক, ১৯৯৮-২০০২ বাহাদুর বেপারী সভাপতি, অজয় কর খোকন সম্পাদক, ২০০২-২০০৬ লিয়াকত সিকদার সভাপতি, নজরুল ইসলাম বাবু সম্পাদক, ২০০৬-২০১১ মাহমুদ হাসান রিপন সভাপতি, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

২০১১-২০১৫ এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ সভাপতি, সিদ্দিকী নাজমুল আলম সাধারণ সম্পাদক, ২০১৫-২০১৮ মো. সাইফুর রহমান সোহাগ সভাপতি ও এস এম জাকির হোসাইন সাধারণ সম্পাদক হন।

২০১৮ সালের ৩১ জুলাই ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে সংগঠনটির নেতৃত্বে আসেন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

কিন্তু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তাদের বাদ দিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় আল নাহিয়ান খান জয় এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পদের দায়িত্বে আসেন লেখক ভট্টাচার্য। পরে ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

আজ সকাল সাড়ে দশটায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংগঠনটির ৩০তম সম্মেলন শুরু হবে।

দুই বছর পরপর নিয়মিত সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় চার বছর পর উপমহাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ছাত্র সংগঠনটির সম্মেলন হচ্ছে আজ।

সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটির নতুন নেতৃত্বে কে আসছেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা।

এমআর

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর