শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘জঙ্গি ছিনতাই নাটকের উদ্দেশ্য জনগণের দৃষ্টি ডাইভার্ট করা’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২২, ০৩:২৭ পিএম

শেয়ার করুন:

‘জঙ্গি ছিনতাই নাটকের উদ্দেশ্য জনগণের দৃষ্টি ডাইভার্ট করা’

ঢাকায় আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই জঙ্গি আসামিকে ছিনতেই করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে ‘নাটক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর মাধ্যমে সরকার জনগণের দৃষ্টি আন্দোলন থেকে ফেরাতে চায় বলে দাবি তার।  

বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বহু নির্যাতন, গুম হয়ে যাওয়া, খুন হয়ে যাওয়া, মিথ্যা মামলা, গয়েবি মামলা এগুলো এখন সব দেখছি। আবার নতুন করে দেখছি তাদের মুখ দিয়ে আসছে অগ্নিসন্ত্রাস। আবার নতুন নাটক আদালতপাড়া থেকে জঙ্গি ছিনতাই। এসব নাটক তৈরি হচ্ছে, তার উদ্দেশ্যও আছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষ তাদের দাবি নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করেছে, সেটা ডাইভার্ট করার চেষ্টা করা।’

আওয়ামী লীগ আবার পুরোনো খেলা শুরু করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তাদের সেই পুরনো খেলা 'ঘটনা ঘটাবো আমরা, মামলা খাবে তোমরা’। মুন্সীগঞ্জের বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে, হঠাৎ করেই তার বিরুদ্ধে মামলা। কারণ মুন্সীগঞ্জে পুলিশ গুলি করে যুবদল নেতা শাওনকে হত্যা করেছে, মামলা দিয়েছে কামরুজ্জামান রতনসহ ৩০০ জনের বিরুদ্ধে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে পেপারে এসেছে, ককটেল ফাটাতে দেখেনি কেউ, তবে মামলা দিয়েছে পুলিশ। বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা, সাক্ষী কিছুই জানেন না। কারওয়ানবাজারে ককটেল ফাটেনি, কিছুই হয়নি, সেখানে দেড়শ জনের বিরুদ্ধ মামলা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ৯৬টি মামলা হয়েছে। সাড়ে চার হাজার আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দশ হাজার অজ্ঞাত আসামি। আমাদের মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক তাকে বরিশাল থেকে ফেরার পথে র‌্যাব তুলে নিয়ে গিয়ে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দিয়েছে।’

আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে একটি বড় দেউলিয়া দলে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি পুরনো রাজনৈতিক দল। তাদের জনপ্রিয়তা ছিল। এখনও হয়তো কিছু আছে। দেশের স্বাধীনতা তাদের ভূমিকা আছে। সেই দলটি আজকে ক্ষমতায় থাকার বাসনায় জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জনগণের যে দুঃখ-কষ্ট, তাদের যে ব্যথা-বেদনা, চাহিদা, তাদের যে চোখের ভাষা, এসব আওয়ামী লীগ এখন দেখতেও পারে না, বুঝতেও পারে না। ওরা এখন সিঙ্গাপুরের চটকটার আলোতে ঘুরে। কানাডার বেগমপাড়ার নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে। অথবা মালয়েশিয়াতে একটা সেকেন্ড হোম খুঁজে বেড়ায়।’


বিজ্ঞাপন


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সবসময় আওয়ামী লীগের  চোখের সামনে আতসবাজি জ্বলে। যার ফলে সাধারণ মানুষের চাল কিনতে না পারার বেদনা তাদের চোখে পড়ে না। একজন মা যখন সন্তানকে পুষ্টির জন্য একটা ডিমও খাওয়াতে পারে না, এসব তাদের চোখে পড়ে না।’

আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে দুর্ভিক্ষ নিয়ে আসে দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘আমরা ১৯৭৪ এর দুর্ভিক্ষ দেখেছি। এখানে অনেকেই দেখেছেন। সেই সময় সংগ্রাম করেছেন। সেই সময়কার সরকারের দুর্নীতি, তাদের লুটপাট সবাই দেখেছে। সেই সময় মওলানা ভাসানী বলেছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নাম বাদ দিয়ে এটাকে নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি রাখা হোক। শেখ মুজিব নিজেই বলেছেন, আমার চারদিকে এখন শুধু চাটার দল দেখছি। আজকে সেই দল সিস্টেমিটিক্যালি দেউলিয়াত্ব জারি করেছে। তারা নিজেরা এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। কারণ দেশ দেউলিয়া থাকলে, অর্থনীতি দেউলিয়া থাকলে তাদের শাসন করতে সুবিধা হয়।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

টিএই/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর