১০ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে বিএনপি আক্রমণাত্মক ছিল। তবে তারা এখন ডিফেন্সিভ মুডে (রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে) চলে গেছে। এর কারণ জানতে চান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের প্রথম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ওবায়দুল কাদের বলেন, '১০ তারিখে (১০ ডিসেম্বর) আপনারা ডিফেন্সিভ মুডে কেন? মনে হলো এই ক্ষমতা নিয়ে গেলেন। মনে হয় এই হাওয়া ভবন এসে গেল। এরকম একটা ভাব ছিল না? সেটা গেল কোথায়? এখন বলে কী? তাহলে লাল কার্ড দেখিয়েছে কারা? কারা লাল কার্ড দেখায়? বলে, ঢাকার রাজপথে বিজয় মিছিল হবে।'
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, 'এইসব অনেক কথা বিএনপি নেতারা অবিরাম তোতা পাখির মতো বলেছে। এখন ভিন্ন সুর! না জানি কী কৌশল! মুখে বলছে রক্ষণাত্মক অবস্থান, আর অন্তরে হচ্ছে আক্রমণাত্মক শোডাউন।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খেলা হবে। ডিসেম্বরে খেলা হবে। ভোটচুরির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, খেলা হবে। নির্বাচনে আসল খেলা, ফাইনাল খেলা। নির্বাচনে আসুন। নির্বাচনে আসুন, তখন দেখা যাবে জনগণ কার সঙ্গে আছে। শেখ হাসিনার কত জনপ্রিয় নির্বাচনে আবারও টের পাবেন।'
জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'এদেশে বীরও জন্মায়, বিশ্বাসঘাতকও জন্মায়।'
বিজ্ঞাপন
বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ বিএনপি মতো নয়। যাদের বছরের পর বছর সম্মেলন হয় না, যাদের ঘরে বসে কমিটি হয়, এমন পার্টি আওয়ামী লীগ না। এখানে দাবি করলেই নেতা হয়ে যাওয়া যায় না।’
কাদের বলেন, 'আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করে? প্রতিহিংসার রাজনীতির জনক বিএনপি। জিয়াউর রহমান প্রতিহিংসার রাজনীতির সূচনা করেছে।'
প্রতিহিংসার রাজনীতির অংশ হিসেবে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। তবে মীর জাফর আলী খান তিন মাস ক্ষমতায় থাকতে পারেননি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'তেমনি খন্দকার মোশতাক তিন মাস ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। ইতিহাস কোনো প্রভুর রক্তচক্ষুকে ভয় পায় না। ইতিহাস কোনো স্বৈরশাসকের দাসত্ব করে না।'
পদ্মা সেতু নির্মাণ থেকে বিএনপির প্ররোচনায় বিশ্বব্যাংক সরে গিয়েছিল বলে দাবি করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
সরকার পদ্মা সেতুর পরেও নানা উন্নয়ন কাজ চলছে। বিএনপি উন্নয়ন দেখে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ' তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখেন। ফখরুল, ফখরুল সাহেব, চোখে চশমা পরেছেন। কালো চশমা। দেখতে পাচ্ছেন না। নিজেদের কিছু নেই। শেখ হাসিনা কেন এত কিছু করলেন, এই জ্বালা অন্তরে। জ্বালায় জ্বলে বিএনপি।'
বিএনপির অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, 'বাংলাদেশ অনিশ্চয়তার দিকে কোনোদিনও যাবে না। যতই ষড়যন্ত্র হোক, যতই চক্রান্ত করুন।'
বিএনপির বিরুদ্ধে আগুন সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, 'ফখরুল বলেন, আগুন সন্ত্রাস নাকি আওয়ামী লীগ করছে। ফখরুল সাহেব, মিথ্যা কথা আপনি বলতে পারেন? এত মিথ্যাচার করতে পারেন! আগুন সন্ত্রাস কে করেছে, এদেশের বাচ্চা শিশুও জানে। তখন যে বাচ্চা শিশু ছিল সেও জানে কারা এই আগুন সন্ত্রাস করেছে। হাওয়া ভবন, বেগম জিয়ার নির্দেশ, কীভাবে চট্টগ্রামে এক নেতাকে হত্যা করা হলো। অডিওটা এখনও আছে। বোম মারো, বেগম জিয়ার নিজে বলেছে, ভুলে গেছেন মির্জা ফখরুল?'
আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে না, ষড়যন্ত্রের শিকার হয় বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের আহ্বায়ক শিরিন আহমেদ, সদস্য সচিব মো. হারুন-উর-রশীদসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কারই/জেবি
