শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

আলোচনায় ওবায়দুল কাদেরের ‘খেলা হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২২, ০৯:৩৭ পিএম

শেয়ার করুন:

আলোচনায় ওবায়দুল কাদেরের ‘খেলা হবে’

বেশ কয়েক মাস ধরেই রাজনীতির মঞ্চে আলোচিত দুই শব্দ ‘খেলা হবে’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিয়মিতই এই বাক্যটি ব্যবহার করছেন। তার এই বাক্য নিয়ে বিএনপির মধ্যেও আলোচনার কমতি নেই।

সর্বশেষ শুক্রবার যুবলীগের সমাবেশ এবং শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যেও ‘খেলা হবে’ স্লোগান ব্যবহার করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।


বিজ্ঞাপন


গত কয়েক মাসে তিনি যতগুলো সমাবেশ বা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তার প্রতিটিতেই এই স্লোগান (খেলা হবে) বলতে শোনা গেছে। আর তার এই স্লোগানকে ঘিরেই চলছে তোলপাড়। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তার এই স্লোগানের ইস্যু নিয়ে নানা রকম বক্তব্য দিয়েছে।

ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্য নিয়ে পাল্টা বক্তব্যও দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গত ২৭ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে ফখরুল বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা বলে, খেলা হবে। কিসের খেলা হবে? খেলা তখনই হয় যখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, খেলা তখন হবে যখন সরকার থেকে পদত্যাগ করে রাজপথে আসবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন দায়িত্ব নেবে তখন নির্বাচনে খেলা হবে। এ ছাড়া কোনো খেলা খেলতে দেওয়া হবে না।


বিজ্ঞাপন


এ ছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিএনপির অন্যান্য নেতারাও ‘খেলা হবে’ নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ‘খেলা হবে’ শ্লোগানের যে ব্যাখ্যা দিলেন কাদের

বৃহস্পতিবার বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু রাজশাহীর এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাদ দিয়ে মাঠে আসেন, আমরা নিরপেক্ষ রেফারিতে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে খেলতে প্রস্তুত। আমরাও খেলতে চাই, খেলা হবে।

সর্বশেষ ওবায়দুল কাদেরের ‘খেলা হবে’ বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য করেছে জাতীয় পার্টিও।

শনিবার (১২ নভেম্বর) শ্যামপুর-কদমতলীর ৫২নং ওয়ার্ড জাতীয় পার্টি আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, গত ২-৩ মাস ধরে রাজনৈতিক মঞ্চে শোনা যাচ্ছে খেলা হবে, খেলা হবে। কিন্তু কী নিয়ে খেলা হবে, কোন মাঠেই বা খেলা হবে তা কিন্তু জনগণ জানে না।

আরও পড়ুন: আসুন খেলা হবে, ফখরুলকে কাদের

তিনি বলেছেন, তবে কেউ যদি খেলতে গিয়ে ফাউল করে জনগণ কিন্তু তাদের লাল কার্ড দেখাতে ভুল করবে না।

এদিকে এই ‘খেলা হবে’ বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

গত বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজ বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটা একটা পলিটিক্যাল হিউমার, এটা পাবলিক অ্যাকসেপ্ট করেছে। ওই ফুল বিক্রি করে বাচ্চা, আমার গাড়ি দেখেই বলে- খেলা হবে। এটা মানুষ অ্যাকসেপ্ট করে ফেলেছে।

তিনি আরও বলেছেন, খেলা হবে কথাটা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে সবচেয়ে জনপ্রিয় স্লোগান ছিল। খেলা হবে মমতা ব্যানার্জি বলছেন। নরেন্দ্র মোদিও বক্তব্যের শুরুতে বলেছেন খেলা হবে, একটু হিন্দি টোনে। কিন্তু সেখানে পুরো ইলেকশনটি ডমিনেট করেছে খেলা হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যে স্লোগানটা দিচ্ছি সেটা হচ্ছে বাংলাদেশে অতীতে যারা দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, হাওয়া ভবন- এসব যেন আর না হয়। খুনিদের পুরস্কৃত করা- এসবের বিরুদ্ধে আমরা বলছি ‘খেলা হবে’। এটা একটা মোরাল পোস্টারের স্লোগান এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেও আমাদের একটা অবস্থান আছে। এ কারণেও বলা হয়েছে। উইকিপিডিয়া আছে। সেখানে আপনারা একটু দেখুন, সেখানেও এই খেলা হবে আছে।

আরও পড়ুন: ‘ফাউল খেললে জনগণ লাল কার্ড দেখাতে ভুল করবে না’

তবে বাংলাদেশে ‘খেলা হবে’ শব্দ ‍দুটির প্রচলন শুরু করেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।

তিনি জানিয়েছেন, এ স্লোগানের ব্যবহার শুরু হয়েছিল ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ‘বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের’ পরিপ্রেক্ষিতে।

এরপর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকসহ রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট অনেকেই শব্দ দুটির ব্যবহার করেছেন। তবে এই স্লোগান আলোচনায় এসেছে বা আলোড়ন তৈরি করেছে ওবায়দুল কাদের ব্যবহারের পরই।

কারই/জেএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর