তিন বছরের কমিটি প্রায় পাঁচ বছর পার করেছে। তবুও ঠিক হয়নি সম্মেলনের দিনক্ষণ। সামনে যৌথসভার পর যেকোনো সময় অনুষ্ঠিত হবে সংগঠনের সম্মেলন। আর সেই সম্মেলনে নেতৃত্ব পরিবর্তন হতে পারে এমন আশায় বুক বেঁধে আছেন যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা। সম্মেলনে সংগঠনের প্রায় অর্ধেক পদেই পরিবর্তন আসতে পারে বলে সংগঠনটি সূত্রে জানা গেছে।
দুই বছর আগে মেয়াদ শেষ হওয়া যুব মহিলা লীগের সম্মেলন কবে হবে তার চূড়ান্ত দিনক্ষণ বলতে পারছেন না কেন্দ্রীয় নেত্রীরা। তবে যখনই সম্মেলন হবে তখন একটা বড় পরিবর্তন আসছে এমনটা জানিয়েছেন সংগঠনের সংশ্লিষ্ট অনেকেই।
বিজ্ঞাপন
চলতি মাসের ১১ তারিখ কমিটির বয়স পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। তবুও এখনো সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। দুই মেয়াদে দায়িত্ব নিয়ে নাজমা আক্তার আর অপু উকিল কাটিয়েছেন ২০ বছর। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকায় সংগঠনের ভেতরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে বলে জানা গেছে।
২০০২ সালের ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী যুব মহিলা লীগ। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এর নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন নাজমা আক্তার ও অধ্যাপিকা অপু।
২০০৪ সালে প্রথম সম্মেলনে সভাপতি হন নাজমা আক্তার। আর সাধারণ সম্পাদক হন অপু উকিল।
দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের ১১ মার্চ। ওই সম্মেলনে নাজমা আক্তারকে সভাপতি ও অধ্যাপিকা অপু উকিলকে সাধারণ সম্পাদক পদে পুনরায় বহাল থাকেন। তিন বছরের জন্য কমিটি দায়িত্ব পেলেও এখন কমিটির বয়স পাঁচ বছর পূর্ণ হতে চলেছে।
বিজ্ঞাপন
চলতি মাসের ১১ তারিখ কমিটির বয়স পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। তবুও এখনো সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। দুই মেয়াদে দায়িত্ব নিয়ে নাজমা আক্তার আর অপু উকিল কাটিয়েছেন ২০ বছর। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকায় সংগঠনের ভেতরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে বলে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে পাওয়া তথ্যমতে, মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সম্মেলনের জন্য অনেকটা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তবে করোনা আসায় সেই প্রস্তুতি ভেস্তে যায়। এরপর আর সম্মেলনের দিকে আগায়নি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনটি।
কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাজমা আক্তার ঢাকা মেইলকে জানিয়েছে, সম্মেলনের জন্য তাদের প্রস্তুতি আছে। কিছুদিনের মধ্যেই তারা সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক করার জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দারস্ত হবেন।
এদিকে আসন্ন সম্মেলনের মধ্য দিয়ে যুব মহিলা লীগে বড় ধরণের পরিবর্তন আসতে পারে বলে অনেকটা আভাস পাওয়া গেছে। প্রায় ২০ বছর ধরে সভাপতির পদে থাকা নাজমা আক্তার যুব মহিলা লীগ থেকে সরতে পারেন। জায়গায় সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা অধ্যাপিকা অপু উকিল সংগঠনের সভাপতির পদ পেতে পারেন। সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজী, সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলির নাম আলোচনায় আছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদের জন্য আলোচনায় আছেন- বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা অপু উকিল, বর্তমান সহসভাপতি শিরিনা নাহার লিপি, বর্তমান সহসভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজী, আফরোজা মনসুর লিপি, বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ পারভীন ডলি, শারমীন আক্তার নিপা, বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি, মাহফুজা রিনা।
সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেইলকে যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা অপু উকিল জানান, সম্মেলনের কোনো দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। কবে নাগাদ সম্মেলন হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে অপু উকিল বলেন, ‘যখন আমরা নির্দেশনা পাবো, তখনই করব। আমাদের প্রস্তুতি আছে।’
নিয়মমতো সম্মেলন না হওয়া নিয়ে আফসোসের সুরে কথা বলেছেন অনেকেই। সংগঠনের একাধিক নেত্রী ঢাকা মেইলকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সংগঠনে দুই মেয়াদে কমিটি ২০টি বছর কাটিয়ে দিল। নতুন নেতৃত্ব আসতে দিলো না, যোগ্যদের এভাবে মাইনাস করার প্রক্রিয়া থাকলে ভবিষ্যতে নেতৃত্ব সংকট হয়। সংগঠনে সবসময় নিয়মমতো সম্মেলন জরুরি।
জানা গেছে, যারা কমিটি থেকে যুব মহিলা লীগ থেকে বাদ যাবে তাদের অনেকেরই জায়গা হবে মহিলা আওয়ামী লীগে।
মেয়াদ শেষ হওয়া সংগঠনটির সম্মেলন চান বর্তমান সভাপতি নাজমা আক্তার। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ‘আমাদের যখন কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, আমি যৌথসভায় সম্মেলনের তারিখ চেয়েছিলাম। তখন বলা হয়েছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে আমাদেরকে একটা তারিখ দিবেন। পরে করোনা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় এটা আর আগায়নি।’
নাজমা আক্তার জানান, আসন্ন সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির অর্ধেক পদে পরিবর্তন আসতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা পুরনো, আমাদের কারও থাকা উচিত না। আমরা যারা ২০ বছর ধরে আছি, তাদের অন্যত্র চলে যাওয়া উচিত। নতুনদের জন্য জায়গাটা ছেড়ে দিতে হবে।’
সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সভাপতি পদ ছাড়তে পারেন নাজমা। এমন আভাসের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে যেখানে দায়িত্ব দিতে চান, সেখানেই থাকব।’
কারই/এমআর