বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তলে তলে বন্ধুত্ব: টুকু

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:৫৫ পিএম

শেয়ার করুন:

জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তলে তলে বন্ধুত্ব: টুকু

বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নাম উচ্চারণ করার সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের মুখের বুলি হয়ে গেছে, সব সময় বলে বিএনপি-জামায়াত। এখন মানুষ বলবে আওয়ামী-জামায়াত। জামায়াতও উর্দু শব্দ, আওয়ামীও উর্দু শব্দ। দুটোর সাথে মিলবে ভালো। কেননা ওনারা জামায়াতের নিবন্ধন ক্যান্সেল করে, কিন্তু বেআইনি ঘোষণা করেনি। তাহলে কি আমি বলব উনাদের পরকীয়া প্রেম চলছে। জামায়াতের নিবন্ধন ক্যান্সেল করেন, বেআইনি ঘোষণা করেন না। তার অর্থ আওয়ামী লীগ জামায়াতের সাথে তলে তলে বন্ধুত্ব করে। এজন্য বেআইনি ঘোষণা করেনি। সামনে থেকে আওয়ামী জামায়াত হবে বিএনপি-জামায়াত আর হবে না।’

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হাজারীবাগে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যা ও হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জোন-৪ নিউমার্কেট, হাজারীবাগ, কলাবাগান ও ধানমন্ডি থানার উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।


বিজ্ঞাপন


ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আজকে আমি হঠাৎ করে দেখলাম আমার ছেলেদের হাতে হাতে লাঠি, এতে একটু শঙ্কিত হলাম। কিছুক্ষণ আগে শাজাহান ওমর বলে গেছেন, আমাদের দেশে একটি গোষ্ঠী আছে কালা, অন্ধ, বোবা; কিছু দেখে না, কথা বলে। তারা বলবে বিএনপি সহিংসু হয়ে গেছে, বিএনপি লাঠি নিয়ে মিছিল করছে। বিএনপি যে কোন দুঃখে লাঠি নিয়ে এসেছে সেটা বলবে না। বিএনপির কর্মীদের মারতে মারতে এমন এক জায়গা নিয়ে এসেছে, আজকে তাদের আত্মরক্ষার্থে লাঠি হাতে নিয়ে আসতে হয়। সুতরাং আজকে আত্মরক্ষা করছে আর একদিন আক্রমণ করলে প্রতিহত করবে। বিএনপির কর্মীরা নিজ ইচ্ছায় হাতে লাঠি তুলেনি, লাঠি আপনারা (আওয়ামী লীগ) তুলতে বাধ্য করেছেন।’

বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা যে সমাবেশ করছি এটা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য করছি না। আমরা এই সমাবেশ করছি জনগণের যে জন্মগত অধিকার, যে অধিকারের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। সেটা ছিল একটি কারণ জনগণের মূল্য দেয়নি ইয়াহিয়া খান তাই আমরা জনগণের দাবি আদায়ের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য, দেশ স্বাধীন করেছিলাম। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। সেই গণতন্ত্র তোমরা (আওয়ামী লীগ) লুট করে নিয়ে গেছো। আর আমরা কিছু বললেই নাকি হয়ে যাই পাকিস্তানি দালাল।’

সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানি আমলে আমরা রাজনীতি করেছি, তখন ওসির কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে আমাদের মিটিং করতে হয়নি। সুতরাং আপনারা তাদের থেকেও খারাপ হয়ে গেছেন।’

tuku2


বিজ্ঞাপন


আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করতে করতে বাংলাদেশকে একটি শ্মশানে পরিণত করেছে। আমরা সেই শ্মশান থেকে বাংলাদেশের সুজলা-সুফলা বাংলাদেশের রূপান্তরিত করতে চাই।’

পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়ে টুকু বলেন, ‘আজকে অলিগলি থেকে যে চোরাগুপ্তা হামলা করেছিল, পুলিশ যদি আমাদের বেতনভুক্ত না হয়ে ওদের দলীয় কর্মী হয়ে কাজ করতো, হয়তো আজকে সমাবেশ করতে পারতাম না। এজন্য পুলিশ ভাইদের ধন্যবাদ দিই। তারা ইচ্ছে করে আমাদের ওপর গুলি চালায় না, তারা পেটের দায়ে গুলি চালায়। আমাদের কাছে অনেক পুলিশ কর্মী এসে কান্না করে যে, স্যার যখন একটা কর্মী চলে যায় তখন আমাদের হৃদয়ও কাঁদে। আমাদের সন্তানেরা স্কুল কলেজে লেখাপড়া করে, তারাও গুলি খেতে পারে।’

পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা জনগণের কাতারে চলে আসুন। আবার এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনুন এবং বাংলাদেশের মানুষকে একটি সুন্দর দেশ উপহার দিন। যাতে মুক্তিযুদ্ধের মত আপনাদের কেউ যুগ যুগ ধরে মনে রাখবে।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সরকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবি, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইসরাক হোসেন প্রমুখ।

এমই/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর