বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

মোটা লাঠি নিয়ে রাস্তায় থাকবেন, নেতাকর্মীদের গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:১২ পিএম

শেয়ার করুন:

মোটা লাঠি নিয়ে রাস্তায় থাকবেন, নেতাকর্মীদের গয়েশ্বর

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, যদি চিকন লাঠিতে না পোষায় এরপরে মোটা লাঠি নিয়ে রাস্তায় থাকবেন। কোনো কন্সেশন (ছাড়) কাউকে দেওয়ার নাই। সুতরাং আমার ভাই মরেছে, মরতে হয় আমিও মরবো। তবে রক্তের ঋণ পরিশোধ করব বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। 

তিনি বলেন, প্রত্যেকের হাতে লাঠি থাকবে, কেন থাকবে? আমাদের আন্দোলন সংগ্রামে নেতাকর্মীদের আত্মরক্ষার জন্য। কাউকে আঘাত করার জন্য নয়। তবে আঘাত আসলে পাল্টা আঘাত করতে হবে। সেখানে তো ছাড় দেওয়ার কোন সুযোগ নেই।


বিজ্ঞাপন


বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মিরপুর ৬ নং সেকশন- বি ব্লক বায়তুল মোশাররফ মসজিদের সামনের রাস্তায় এক সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির মিরপুর জোনের উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

গয়েশ্বর বলেন, আমাদের আন্দোলন দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে, আমাদের আন্দোলন জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে। এই সরকার কোনো কিছুর দাম কমাবে না। তাই আমাদের প্রথম দায়িত্বে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো। আগামীতে যারা সরকারে আসবে তারা এসে জিনিসপত্রের দাম কমাবে। তারা এসে আইনের শাসন কায়েম করবে, তারা এসে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে। সুতরাং যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় তাদের কাছে কোন কিছুর দাবি নেই। 

তিনি বলেন, ‘জনগণের দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। জনগণের দাবি এক, ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ। জনগণের দাবি এক, খুনি সরকারের পদত্যাগ।’

ইভিএম এর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ইভিএম পদ্ধতি হলো নির্বাচনের আগে কিছু টাকা লুট করা। ৫০০ শতাংশ অতিরিক্ত দামে ইভিএম মেশিন কেনা কিছু লোককে সুবিধা দেওয়া। কিছু লোকেরে লুটপাট করার সুযোগ করে দেওয়া। 


বিজ্ঞাপন


‘আমরা যখন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না তাই ইভিএম নিয়ে কোন কথা নয়। আমরা নির্বাচন করব কখন? এই সরকারের পতন নিশ্চিত করে। আমরা কখন নির্বাচন করব, যখন পার্লামেন্ট উন্মুক্ত হবে। আমরা কখন নির্বাচন করব যখন নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর বলেন, এই সরকারকে টিকানোর জন্য যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে প্রতিরোধ করার জন্য আপনারা প্রস্তুত থাকেন। সে যদি বিএনপিরও হয় অথবা অন্য দলের হয় তাকে প্রতিরোধ করার জন্য আপনারা প্রস্তুত থাকেন।

তিনি বলেন, প্রশাসনে যারা রয়েছেন তারা জনগণের পক্ষে থাকেন, আমাদের সাথে মিছিল করার দরকার নেই। অবৈধ লুটেরা খুনি সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য অতি উৎসাহিত হলে সমুচিত জবাব জনগণ দেবে।

বিএনপির এই নীতি নির্ধারক বলেন, যারা রক্ত দিয়েছে তাদের রক্ত বৃথা যাবে না, অতীতে কারো রক্ত বৃথা যায়নি। রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা কিনেছি রক্ত দিয়েই আমরা স্বাধীনতা রক্ষা করব। রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র এনেছি এবং রক্ত দিয়েই গণতন্ত্র উদ্ধার করব। এটা পরিষ্কার কথা এর মধ্যে শর্টকাট হওয়ার কিছু নেই। 

সমাবেশে যোগ দেওয়া প্রতিটি নেতাকর্মীদের হাতে হাতে পতাকা বাধা লাঠি এবং স্টাম্প দেখা যায়। 

এছাড়া সমাবেশ স্থল ও এর আশপাশে ঘুরে দেখা যায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। 

গত বৃহস্পতিবার মিরপুরে সমাবেশের পূর্ব আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং বনানীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর হামলার পর দলের সিনিয়র নেতারা ঘোষণা দিয়েছে প্রতিরোধ গড়ে তুলার। তার পটার থেকে যেসকল সমাবেশ হচ্ছে সেখানে নেতাকর্মীদের লাঠিসোঁটা হাতে অংশ নিতে দেখা যায়। 

সমাবেশ শেষে বিএনপি নেতাকর্মীদের ফেলে যাওয়া লাঠি পুলিশ সদস্যরা এক জায়গায় মিলিত করে। পরে সেই লাঠিগুলো পুলিশ এবং আনসার সদস্য গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যায়। 

ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপি নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, নাজিম উদ্দীন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মীর সরাফত আলী সপু, তাবিথ আউয়াল, যুব দলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 

এমই/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর