মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

অনেক উত্থান পতনের সাক্ষী ছিলেন সাজেদা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০১:০৭ এএম

শেয়ার করুন:

অনেক উত্থান পতনের সাক্ষী ছিলেন সাজেদা

চলে গেলেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। ব্যক্তি নন, দলীয় নেতাকর্মী থেকে সুশীল সমাজ তাকে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবেই দেখেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দেশের এবং রাজনীতির অনেক উত্থান-পতনের সাক্ষী এই বর্ষীয়ান নেতা। 

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ৪০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। 


বিজ্ঞাপন


সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা ছিলেন। একাত্তরের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা দীর্ঘদিন ধরেই ছিলেন অসুস্থ। বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে স্মৃতিশক্তিও হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। এর মধ্যে ৬৬ বছরই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। তবে অসুস্থতার জন্য দীর্ঘদিন দলের কোনো কার্যক্রমেই দেখা যায়নি আওয়ামী লীগের নানা উত্থান-পতনের সাক্ষী এই নেত্রীকে।

sajeda-hasina
দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী 

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা, সালতা ও সদরপুর) আসন থেকে নির্বাচিত হন সাজেদা চৌধুরী। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও একই আসন থেকে নির্বাচিত হন তিনি। এর মধ্যে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি জাতীয় সংসদের উপনেতা হন। আমৃত্যু তিনি সে পদে বহাল ছিলেন। 


বিজ্ঞাপন


সাজেদা চৌধুরীর স্বামী রাজনীতিবিদ এবং সমাজকর্মী গোলাম আকবর চৌধুরী। তিনি ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর মারা যান।

sajeda

স্বামীর মৃত্যুর কিছুদিন পরই অসুস্থতা ঘিরে ধরে তাকে। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর পুরোপুরি অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। গত প্রায় চার বছরে সংসদেও যাওয়া হয়নি। নির্বাচনের পর মাত্র একবার যেতে পেরেছেন নিজ নির্বাচনি এলাকায়।

১৯৩৫ সালের ৮ মে জন্মগ্রহণ করেন এই রাজনীতিবিদ। তার পিতার নাম সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ এবং মাতা সৈয়দা আছিয়া খাতুন। শিক্ষাজীবনে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

sajeda

১৯৫৬ সালে সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন তিনি।

১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সময়কালে বাংলাদেশ গার্ল গাইডের ন্যাশনাল কমিশনার এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

sajeda
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর দুই ছেলে

১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্বও পালন করছেন এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ।

তিনি ১৯৭৪ সালে গ্রামীণ উন্নয়ন ও শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য ইউনেস্কো ফেলোশিপ পান। একই সময়ে তিনি বাংলাদেশ গার্ল-গাইড এসোসিয়েশনের জাতীয় কমিশনার হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মানসূচক সনদ সিলভার এলিফ্যান্ট পদক লাভ করেন। তিনি ২০০০ সালে আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক ওমেন অব দি ইয়ার নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।

কারই/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর