শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ঢাকা-১৩ আসন: সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে বহুজন

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০২২, ১১:০২ এএম

শেয়ার করুন:

ঢাকা-১৩ আসন: সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে বহুজন

ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খান। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক গত নির্বাচনে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের প্রার্থী হন এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে স্থানীয়ভাবে তিনি ‘নাম মাত্র সংসদ সদস্য’ হিসেবেই পরিচিত। রায়েরবাজার এলাকা ছাড়া অন্যত্র তাঁর তেমন কোনো চলাচল নেই। নেই চোখে পড়ার মতো উন্নয়ন কাজও। 

রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরে বাংলা নগরের একাংশ নিয়ে সংসদের ১৮৬ নং এ আসনটি। বিশালাকার এই আসনে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড রয়েছে সাতটি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৪নং ওয়ার্ড এই সংসদীয় আসনের অধিভুক্ত। 


বিজ্ঞাপন


২০০৮ সালের সীমানা পরিবর্তনের আগে এই আসনটি ছিল ঢাকা-৯। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত আসনটি ছিল জাতীয় পার্টির দখলে। ১৯৯১ সালে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির হাতে ছিল আসনটি। ১৯৯৬ সালের জুনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মকবুল হোসেন এ আসনের সংসদ সদস্য হন। ২০০১ সালে আবার আসনটি চলে যায় বিএনপির দখলে। সংসদ সদস্য হন খন্দকার মাহবুব উদ্দিন আহমাদ। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে আসনটির সংসদ সদস্য হিসেবে আসে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতিমণ্ডলির সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সংসদে আসনটির প্রতিনিধিত্ব করেন। 

২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাননি নানক। মনোনয়ন চলে যায় তৎকালীন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের কাছে। তবে সংসদ সদস্য হিসেবে নিজের কার্যক্রম তাকে তেমন কোনো জনপ্রিয়তা এনে দিতে পারেনি। 

স্থানীয়দের ভাষ্য, রায়েরবাজার এলাকায় সাদেক খানের পূর্বপুরুষের নিবাস। তার চলাচল ও কার্যক্রম সে এলাকা কেন্দ্রিক। অন্যান্য এলাকায় তার তেমন কোনো কার্যক্রম গত চার বছরে দেখা যায়নি। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরও জনগণের কাছাকাছি খুব একটা দেখা যায়নি তাকে। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আসেন তিনি। 


বিজ্ঞাপন


স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ভাষ্য, আগামী নির্বাচনে নৌকার টিকিট নাও পেতে পারেন সাদেক খান। তার জায়গায় নৌকার মাঝি হতে পারেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। 

জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে বেশ জনপ্রিয়তাও রয়েছে তার। তিনি কর্মীবান্ধবও বটে। 

আবার আসনটিতে টানা দুইবার সংসদ সদস্য হিসেবে থাকা জাহাঙ্গীর কবির নানকের অনুসারীও কম নয়। আসনের প্রতিটি ওয়ার্ডেই তার অনুসারী রয়েছে। তাদের প্রত্যাশা, আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকার মাঝি হয়ে ফিরবেন নানক। 

তবে নানকের স্থানীয় প্রতিনিধিদের একটি অংশ এখন রাজনীতির বাইরে। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্যের ছেলে হিসেবে পরিচিত ৩৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব ও ৩২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান এখন কারাগারে। ২৯নং ওয়ার্ডে নানক সমর্থিত কাউন্সিলর ছিলেন নুরুল ইসলাম রতন। তিনি গত সিটি নির্বাচনের পর মারা গেছেন। 

আবার ঢাকা-১৩ আসনে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ নির্বাচন করতে পারেন এমন একটি আলোচনা রয়েছে। তবে তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সাবেক সেনাপ্রধান নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। 

আসনটিতে বিএনপির অবস্থান বেশ শক্ত। গত নির্বাচনে সাদেক খানের বিপক্ষে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন আব্দুস সালাম। আগামী নির্বাচনে আসনটিতে তার জায়গায় জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হতে পারেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। 

আবার আলোচনা রয়েছে, ঢাকা-১৩ আসনে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম সেন্টু। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩১নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর। 

কারই/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর