এক মাসে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে তিনশ বক্তৃতা দেওয়ার দাবি করে কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত আলোচিত নেতা ফজলুর রহমান বলেছেন, কারাবন্দি অবস্থায় নেত্রীর ওপর চালানো অবিচার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে তিনি টানা এই বক্তৃতাগুলো করেছেন। তার ভাষায়, এটি শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায় হয়ে থাকবে, যা ভবিষ্যতে ইতিহাস হিসেবেই বিবেচিত হবে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ফজলুর রহমান বলেছেন, আমার জীবনের মানে অন্যতম দুঃখের দিন বললেও কম বলা হবে। আমি কিছুদিন আগে হাসপাতালে এসে উনাকে দেখতে এসে বলেছিলাম—হে আল্লাহ, আমার আয়ু থেকে কিছু আয়ু কেটে নিয়ে উনাকে তুমি বাঁচিয়ে রাখ। বাঁচিয়ে রাখা হোক। পৃথিবীতে জন্মের চেয়েও মৃত্যু অনেক বেশি সত্য। উনার মতো একজন মহিয়সী নারী বাংলাদেশে আর কবে জন্মগ্রহণ করবে আমি জানি না। তবে এইটা জানি, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাংলাদেশের ইতিহাস থাকবে, ততদিন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইতিহাস স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে মানুষ আসবে, চলে যাবে। কিন্তু ইতিহাস সবাই সৃষ্টি করতে পারে না। আমি মনে করি, এই বাংলাদেশে ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল শিখর—হিমালয়ের সবচেয়ে সর্বোত্তম শিখরে যিনি থাকবেন, এবার শিখরে যারা থাকবেন তার মধ্যে তিনি হবেন বাংলাদেশের একজন। উনি চলে গেলেন, বাংলাদেশ অনেক বেশি এতিম হয়ে গেল। আমরা এতিম হয়ে গেলাম।
ফজলুর রহমান আরও বলেন, আমি আজকে সান্ত্বনা জানাবো না। শুধু বলব, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব এবং তার পরিবার—আপনারা আল্লাহর কাছে সবর করেন। যতদিন আল্লাহ উনার আয়ু রেখেছিলেন, উনি বেঁচেছেন। উনার পথ ধরে আমরা বাংলাদেশে আগামী দিন চলবো এবং বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলবো। আমি বিশ্বাস করি, বেগম খালেদা জিয়া চিরদিন বাংলার ইতিহাসে মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। এটা আমি বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, একটা বিষয় একটুখানি আপনারা। আমরা দেখেছি, যখন যখন মামলাগুলো চলে, আপনি গেছেন বহুদিন। এই প্রসঙ্গটা আপনার—এই যে কারাভোগ। আটাশ সালের আট ফেব্রুয়ারি সাজা দিয়ে যে আপনাকে নাজিমুদ্দিন রোডের কারাগারে রাখা হয়েছিল, কী প্রসঙ্গে—আপনাদের রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তি আমার মতো কেউ বলতে পারবে না।
বিজ্ঞাপন
নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই কারণে বলছি—কারণ আমি যত বক্তৃতা উনার নামে জেলখানায় যাওয়ার পরে করেছি, আটই ফেব্রুয়ারি দুই হাজার আঠারো সালে আমার স্ত্রী প্রথম দিন, যিনি আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন, উম্মে কুলসুম ভাই—তার প্রথম দিন উনাকে জেলখানায় দেখতে গিয়েছিল। আমি যত বক্তৃতা উনার নামে করেছি, তিনশ বক্তৃতা করেছি। এটা ইতিহাস হবে, বিশ্ব রেকর্ড। উনার নামে এক মাসে তিনশ বক্তৃতা করেছি।
তিনি আরও বলেন,আমি বলেছি বিশেষ করে চৈত্র-বৈশাখ মাসের প্রচণ্ড দাবদাহে উনি একটি অন্ধকার প্রকোষ্ঠে যেভাবে ছিলেন, মধ্যযুগের বর্বরতাকেও সেখানে হার মানায়। সেখান থেকে তার জীবনের যে অধোগতি, জীবনের যে সময় কমে যাওয়া—সেই শুরু হয়েছে।
ফজলুর রহমান বলেন,আমি মনে করি, তার ওপর যে অবিচার করা হয়েছে, যারা অবিচার করেছে ইতিহাসে তাদের নাম লেখা থাকুক। আল্লাহ তাদেরকেও ক্ষমা করুক। আর আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে—এত অত্যাচার সহ্য করেও মাথা নত না করে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকার জন্য আল্লাহ তার নাম গৌরবান্বিত করুক। আমি এটা মনে করি।
এএইচ/এআর

