বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ইচ্ছেমতো ভাড়া হাঁকছেন রাইডাররা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০০ পিএম

শেয়ার করুন:

বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ইচ্ছেমতো ভাড়া হাঁকছেন রাইডারা

ঢাকার পূর্বাচলে তারেক রহমানকে একনজর দেখার জন্য শরীয়তপুর থেকে এসেছেন রমিজ আলী। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকার নর্দা এলাকায় এসে পূর্বাচল পর্যন্ত আর হেঁটে যেতে পারছিলেন না। এ সময় নর্দা ওভারব্রিজের নিচে একজন রাইড চালকের সঙ্গে কথা বলছিলেন।

নর্দা থেকে ৩০০ ফিট পূর্বাচল পর্যন্ত সেই চালক ভাড়া চাইলেন ৫০০ টাকা। রমিজ আলী এ ভাড়া শুনে মাথায় হাত দিলেন। আর বেশি কথা বাড়ালেন না। পরে খুঁজে নিলেন একটি ব্যাটারি চালিত রিকশা। তার সঙ্গে থাকা আরও দুজনকে সাথে নিয়ে রওনা হলেন সমাবেশ স্থলের পথে। 


বিজ্ঞাপন


বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে রাজধানীতে যানবাহন কমেছে। বিশেষ করে কুড়িল থেকে বাড্ডা লিং রোড এই সড়কে কোনো যানবাহন চলাচল করছে না। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর রাইড চালকরা লোকজনকে জিম্মি করে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায় করছেন। 

উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় রমজান আলী ও রফিকুল ইসলাম। আগারগাঁও পর্যন্ত আসার পর আর কোনো যানবাহন পাননি। বাধ্য হয়ে পাঠাও রাইড নিয়ে তারা নর্দা পর্যন্ত এসেছেন।

এটুকু পথের জন্য তাদের দু'জনকে গুনতে হয়েছে ৫০০ টাকা। যা অন্য সময়ে দুজনে ৩০০ টাকায় অনায়াসে আসা যায়। ঢাকায় নতুন হওয়ায় বিষয়টি বুঝতে পারেননি। কিন্তু মোটরসাইকেল থেকে নেমে জানতে পারলেন ভাড়া তাঁর কাছে দ্বিগুণ নেওয়া হয়েছে। 


বিজ্ঞাপন


thumbnail_1000089891দুপুর পৌনে একটার দিকে নর্দা থেকে পূর্বাচল যাওয়ার জন্য এক রাইড চালকের সাথে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ঢাকার বাইরে থেকে আসা বিএনপির এক কর্মী। এটুকু দূরত্বে ভাড়া ৫০০ টাকা চাওয়ায় প্রচণ্ড রেগে গেলেন তিনি। এরপর কথা না বাড়িয়ে আরেকটি রাইড চালকের সাথে কথা বলে ভাড়ায় বনিয়ে সেটিতে উঠলেন। 

এবার সেই রাইড চালককে উদ্দেশ্যে বলতে লাগলেন, ‘আল্লাহকে ভয় করেন মিয়া। মানুষকে জিম্মি করেন কেন! হালাল পথে টাকা উপার্জন করেন। বিএনপি কর্মীর সেই এমন কথা শুনে রাইড চালক বেশ ক্ষেপে গেলেন। কিছুক্ষণ বেশ উত্তপ্ত বাক্য হলো দুজনের মধ্যে। কিন্তু অন্য রাইড চালক সেই বিএনপি কর্মীকে নিয়ে দ্রুত রওনা হলেন। গাড়ি টান দিলেন গন্তব্যের উদ্দেশে ফলে সেটি আর বেশি দূর গড়ায়নি।’ 

এই এলাকায় প্রায় ঘণ্টা দুয়েক থেকে এমন কয়েকটি ঘটনার সাক্ষী হলো এই প্রতিবেদক।

ঢাকার সদরঘাট, যাত্রাবাড়ী, তেজগাঁও, বাড্ডা লিং রোড থেকে আগারগাঁও আসা লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাইড চালকরা আজকে দুই থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায় করছেন। ভুক্তভোগীরা উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে রাইডে চড়ছেন। 

বিশেষ করে কুড়িল, ৩০০ ফিট, মিরপুর, টঙ্গী ও বিমানবন্দর যাত্রীদের কাছে এই স্বল্প দূরত্বে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। 

thumbnail_1000089966

তবে যেমন ঢাকার বাইরে থেকে আসার লোকজন বিপাকে পড়েছেন। তেমনি বিপাকে পড়ছেন বিমানবন্দরগামী যাত্রীরা। ঢাকার নতুন বাজার থেকে বিমানবন্দর যাবেন এক দম্পতি। কিন্তু কোনো ব্যাটারি চালিত রিকশা বিমানবন্দর পর্যন্ত যেতে চাচ্ছেন না। রাইড চালকরা এই স্বল্প দূরত্বের ভাড়া চাচ্ছেন দুজনের জন্য ১০০০ টাকা। স্বামী স্ত্রী বাধ্য হয়ে কুড়িল পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রওনা হলেন। 

রাইড চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আজকের বাড্ডা লিং রোড, বিমানবন্দর সড়ক, উত্তরা, টঙ্গী এবং মিরপুর এলাকা পর্যন্ত লোকজনে ভরা। ফলে সড়কে যাত্রী টেনে নিয়ে যেতে তাদেরকে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে। বিকল্প সড়ক ব্যবহারের কারণে দূরত্ব বাড়ছে ও তেল খরচ বাড়ছে। এসব কারণে তারা ভাড়া দুই থেকে তিনগুণ আদায় করছেন যাত্রীদের কাছ থেকে। 

কিন্তু তাদের এই যুক্তিকে যাত্রীরা বলছেন, এটি জিম্মি ও অপরাধ। 

এমআইকে/এমআই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর