সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘হাদি, মুগ্ধ, সাঈদের মতো দেশপ্রেমিকদের দেশের শত্রুরা হত্যা করছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম

শেয়ার করুন:

‘হাদি, মুগ্ধ, সাঈদের মতো দেশপ্রেমিকদের দেশের শত্রুরা হত্যা করছে’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের শত্রুরা হত্যা করেছে। সেই শত্রুরা আজও থেমে নেই, তারা ওসমান হাদির মতো, মুগ্ধের মতো, আবু সাঈদের মতো দেশপ্রেমিক ছেলেদের হত্যার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের সবাইকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে হবে। আমারা কেউ যেন কখনই অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করি। দেশের জন্য আমাদের অটুট সম্পর্ক রাখতে হবে।’

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) আয়োজিত জিয়াউর রহমানের উন্নয়ন উদ্যোগ, ফারাক্কা চুক্তি স্বাক্ষরে ভূমিকা এবং পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ে দুর্লভ সংকলনের পুনঃপ্রকাশ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জিয়াউর রহমান সবসময় দেশের জন্য নিয়োজিত ছিলেন। তিনি সেনাবাহিনীতে গিয়েছিলেন দেশের জন্যই,  তিনি বিদ্রোহ করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন দেশের জন্যই, পরবর্তীতে তিনি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে রাষ্ট্র নির্মাণের কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষকে সম্মান করতেন। তার চিন্তা, মেধা, প্রজ্ঞা দিয়ে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছেন।’

সভাপ্রধান ইতিহাসবিদ, গবেষক, শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ এবং আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম যোদ্ধা ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ নির্মাণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখেছিল। জিয়াউর রহমানকে অসময়ে হারিয়ে আমরা জাতি হিসেবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের উন্নতির জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। জিয়াউর রহমান আন্তরিকভাবে মুসলিম উম্মাহ’র ঐক্যে বিশ্বাস করতেন।’

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে ভিলেন বানানো হয়েছিল। তিনি একজন সফল রাষ্ট্র নায়ক। তিনি সেনাবাহিনী থেকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় চলে গেছিলেন। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের মহানায়ক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের সর্বোত্তম মঙ্গল কামনা করতেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা যিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়েছিলেন।’


বিজ্ঞাপন


বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন বলেন, ‘মুজিবের বাকশালের সময় মাত্র চারটি সংবাদপত্র কাজ করতে পেরেছে। পরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসন আমলে অনেক সংবাদপত্র কাজ করতে পেরেছে। জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়ার আমলে সংবাদপত্রের পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল। নিরক্ষরতা থেকে মুক্তির জন্য তিনি নানা রকম ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। আমরা সবাই মিলে আবারও একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।’

দৈনিক দিনকাল ডিজিটালের নির্বাহী সম্পাদক আতিকুর রহমান রুমন বলেন, ‘এখন বাংলাদেশে নানা রকম মব ভায়োলেন্স তৈরি হয়েছে। শহীদ জিয়াউর রহমান ক্ষণজন্মা মানুষ। বাংলাদেশের ক্রান্তিলগ্নে তিনি বাংলাদেশের হাল ধরেছিলেন। যখন আমাদের বাংলাদেশে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল; তখন তিনি সেটা করেছেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সম্মুখ যোদ্ধা। আমি একজনের নাম নেব না, একজন নেতা ছিলেন সে সময় যার পিছনে রেডিও কর্মীরা ঘুরেছে একটি স্বাধীনতার ঘোষণা নেওয়ার জন্য। নির্বাচনে বহু ষড়যন্ত্র হবে, সেসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

ড. শফিকুর রহমান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান শুধু বাংলাদেশের রাষ্ট্র নায়কই নয়, শুধু বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালকই নয়, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্র নির্মাতা। পররাষ্ট্র নীতি, সংস্কৃতি এবং বাংলাদেশের সকল নীতিকেই তিনি নির্মাণ করেছিলেন। যুদ্ধ পরবর্তী বাকশালের পরেই তিনি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়েই রাষ্ট্র নির্মাণ শুরু করেন।’

আলোচকবৃন্দ বলেন, জিয়াউর রহমানের বিএনপি বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। ৯০ এর অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে বিএনপি। বিএনপি যাতে জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বজায় রেখে, খালেদা জিয়ার আদর্শকে বজায় রেখে আপসহীনভাবে নিজেদের স্বার্থ বজায় রেখে সবার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে। বাকশালের পরে তিনি যখন ক্ষমতায় আসলেন তখন সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতার পাশাপাশি সকলের বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশের সাংবাদিকরা কখনই জিয়াউর রহমানের ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মুক্তিযোদ্ধা ড. মাহবুব উল্লাহ, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, দৈনিক দিনকাল ডিজিটালের নির্বাহী সম্পাদক আতিকুর রহমান রুমন, ড. শফিকুর রহমান প্রমুখ।


এম/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর