‘রাজাকার’ বয়ানই ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের অন্যতম কারণ—এ কথা ভুলে গেলে চলবে না বলে মন্তব্য করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটি বলেছে, বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ইসলামের বিধান ও মুসলমানদের প্রতীক দাড়ি-টুপিকে ‘রাজাকারের প্রতীক’ বানিয়ে ঘৃণা ছড়ানোর অপচেষ্টা আবারও শুরু হয়েছে, যা জাতিকে বিভাজনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বুধবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী এ ঘৃণাচর্চার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের দফতর সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ।
মাওলানা আজিজুল হক বলেন, বিজয় দিবসের প্রাক্কালে দেশের বিভিন্ন স্থানে দাড়ি-টুপিকে লক্ষ্য করে ঘৃণা উসকে দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের তৎপরতা সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অংশ।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে আজিজুল হক বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে মুসলমানি পরিচয় ও নাম-নিশানাকে ঘৃণার লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ইসলাম নির্মূলের রাজনীতি করা হয়েছিল। জুলাই বিপ্লবীরা শান্তি ও সহাবস্থানের পথ বেছে নেওয়ার সুযোগে হিন্দুত্ববাদী অপশক্তি ও বাম সেকুলার গোষ্ঠী আবারও উৎপাত শুরু করেছে। বিভাজন সৃষ্টির এ অপচেষ্টা প্রতিহত করা হবে।
হেফাজত নেতা বলেন, কথিত ‘রাজাকার’ বয়ান ধসে পড়ায় হাসিনার পতন ঘটেছিল। ভারতীয় বয়ানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রত্যাখ্যান করেছে জুলাইয়ের নতুন বিপ্লবী প্রজন্ম। একাত্তরের মহান জনযুদ্ধ কারও একার সম্পত্তি নয়। যারা একাত্তরকে আধিপত্যবাদী শক্তির হাতে তুলে দিয়েছিল, তারা ক্ষমতার স্বার্থে স্বজাতির সঙ্গে বেঈমানি করেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আজিজুল হক বলেন, সাতচল্লিশের উত্তরসূরি একাত্তর, আর একাত্তরের উত্তরসূরি চব্বিশ—সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশ আমাদের আজাদীর সিলসিলা। কোনো অধ্যায়ই অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এখন প্রয়োজন নির্মোহ ও সত্য ইতিহাসচর্চা এবং দীর্ঘদিনের ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী প্রপাগান্ডার মোকাবিলা। এ লক্ষ্যে একাত্তরের জনযুদ্ধ ও বিজয় নিয়ে প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে বিদগ্ধ ইতিহাসবিদদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
টিএই/ক.ম

