মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে আসেনি বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩০ পিএম

শেয়ার করুন:

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে আসেনি বিএনপি
হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে আসেনি বিএনপি। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইনকিলাব মঞ্চের সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অন্য দলগুলো উপস্থিত থাকলেও বৃহৎ দল বিএনপির কোনো প্রতিনিধি আসেনি। তাদের এই অনুপস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এই সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি, জনতার দল, জাতীয় ছাত্রশক্তি এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অন্যান্য সংগঠনের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছে।


বিজ্ঞাপন


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনরা বলছেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী সব রাজনৈতিক দল সমাবেশে অংশ নিয়েছে। তবে যারা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য ভারতীয় আধিপত্যবাদী শক্তির সঙ্গে সমঝোতা করতে চায়, তারা অনুপস্থিত ছিল। বিশেষ করে বিএনপির না আসা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপি শেষ পর্যন্ত উপস্থিত না হওয়া মানে কি তারা ভারতীয় আধিপত্যবাদী শক্তির সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটছে? তবে দলের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য আসেনি।

সমাবেশে অংশ নেওয়া নেতারা দাবি করেছেন, দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার প্রশ্নে সব দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকার গুরুত্ব অপরিসীম। তারা পুনরায় নিশ্চিত করেছেন, দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো দমনমূলক বা পরাধীনতামূলক রাজনৈতিক শক্তিকে সহ্য করা হবে না।

2

ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের জানান, সমাবেশে ভারতপন্থি কোনো দল বা সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। 


বিজ্ঞাপন


জুলাই ঐক্যের সংগঠক- কবি বোরহান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সংহতি প্রকাশ করেছে। তবে সরাসরি কেউ যোগদান করেননি।

সমাবেশে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামীকাল বিজয় দিবসে আমরা প্রতিরোধের র‌্যালি করব। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হব। আমরা উৎসব করতে রাস্তায় নামব না। আমরা প্রতিরোধের যাত্রায় রাস্তায় নামব।

এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু থেকেই ভিন্ন ভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে জাতির দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। একসময় যেসব সংস্থা ৪০ মিটার নিচ থেকেও নাকি শত্রু শনাক্ত করতে পারত, আজ সেই ‘মাইক্রোস্কোপ’ কোথায়—তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

ব্যারিস্টার ফুয়াদ আরও বলেন, একাত্তরের পরও বাংলাদেশে স্বাধীনতাকামী শক্তিকে ধ্বংস করার ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র চলেছে। কাউন্টার ক্যু, রাজনৈতিক অনৈক্য সৃষ্টি, সীমান্তে প্রশিক্ষণ দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের হত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এসব ইতিহাস ভুলে গেলে আবারও একই ফাঁদে পড়তে হবে। আজ যারা গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি, তারা যদি ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারায় বিভক্ত হয়, তাহলে পুরো জাতিকে সর্বগ্রাসী বিপদের দিকে ঠেলে দেবে। অতীতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের ফাঁসি ঠেকানো যায়নি—এই বাস্তবতা ভুলে গেলে চলবে না।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের তালিকা রয়েছে। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করুন। দেশবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের সময়ে একজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। এই সরকার পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। জুলাই বিপ্লব ও তার পরে যতগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয়েছে, তার একটিতেও আপনারা অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি। এই ব্যর্থতার জবাব আপনাদেরকে দিতে হবে। জুলাই বিপ্লবের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই ব্যর্থতা মেনে নেওয়া যায় না।

তিনি বলেন, ওসমান হাদী তার ওপরে গুলি চালানোর কয়েক দিন আগে থেকেই বলেছে, তার জীবন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। তিনি জুলাই বিপ্লবের একজন সক্রিয় যোদ্ধা। তা সত্ত্বেও কেন তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হলো না? হাদীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ার জবাব সরকারকে দিতে হবে। এই দায় সরকার কিছুতেই এড়িয়ে যেতে পারে না।

এএইচ/এআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর