বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তদানীন্তন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা বিচারের নামে নির্মম প্রহসনের শিকার হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী আবদুল কাদের মোল্লা শাহাদাতের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বাংলাদেশে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ, লেখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক, যিনি দেশ ও জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। নব্বইয়ের দশকে তিনি স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনে লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতি ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
বিবৃতিতে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, কলম সৈনিক হিসেবে কাদের মোল্লা তার লেখনীর মাধ্যমে মানুষের বিবেকবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ২০১০ সালের ১৩ জুলাই সরকার তাকে রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে এবং পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করা হয়। ট্রাইব্যুনালের রায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়, পরে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের দাবির প্রেক্ষিতে তাকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।
জামায়াত আমির বলেন, ফাঁসির আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগও তিনি পাননি, এমনকি রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পূর্বেই তড়িঘড়ি করে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টা ১ মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তার রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রায় দেড় বছর পরে প্রকাশিত হয়, যা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত করে যে তিনি বিচারের নামে এক নির্মম প্রহসনের শিকার হয়েছেন।
>> আরও পড়তে পারেন
ভিন্নমতকে অপমান করা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ: জামায়াত আমির
তিনি বলেন, শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা তার ফাঁসি কার্যকরের পূর্বে বলেছিলেন, ‘সরকার আমাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিচ্ছে। আমার শরীরের প্রতিটি ফোটা রক্ত এ দেশের ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে আরও অনুপ্রাণিত করবে।’ তিনি তার রক্তের বদলা নিতে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, আজ আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার অবদানের কথা স্মরণ করছি। আমরা মহান আল্লাহর কাছে তাঁর শাহাদাত কবুলের জন্য দোয়া করছি এবং তিনি যে ইসলামী সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন, তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দৃঢ়তার সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমি জামায়াতের সকল জনশক্তি, সুধী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
টিএই/এএস

