নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনটি এককভাবে কোনো রাজনৈতিক দল দীর্ঘদিন দখলে রাখতে পারেনি। তবে এখানে বিএনপির আধিপত্যই বেশি। তবে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে। একাধিক গ্রুপে বিভক্ত বিএনপিতে অসংখ্য প্রার্থী তৎপর। মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত এক ডজন বিএনপি নেতা মাঠে রয়েছেন। মনোনয়ন লড়াইয়ে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। সবকটি আসনেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী এ আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেই জোর কদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরে পাওয়ায় প্রচারণায় ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ফলে বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২ আসনটিতে দলটির চ্যালেঞ্জ হবে জামায়াত।

বিজ্ঞাপন
সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে বেশ তৎপর হয়ে উঠেছেন। এলাকায় নানা কর্মসূচি পালন করছেন। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। নিজ নিজ দলের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলটির ৩১ দফা প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর তাদের অনুসারীরাও সরব সামাজিক মাধ্যমে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক এমপি মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছিলেন। এ ছাড়া মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আরও আছেন আব্দুস সালাম তুহিন, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সেন্টু, সাবেক মেয়র তারিক আহম্মেদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক মাসউদা আফরোজ হক শুচি, রুয়েট ছাত্রদলের সাবেক নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হল মাসুদ, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম আশরাফ। এ আসনে জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ড. মু. মিজানুর রহমানকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটি।
![]()
বিজ্ঞাপন
২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শপথ নেয়ায় আমিনুল ইসলামের ওপর ক্ষুব্ধ হন তৃণমূল বিএনপি। এদিকে জামায়াতের একক প্রার্থীও স্বস্তিতে নেই। কারণ বিএনপির ভোট ব্যাংক এ আসনে বেশ শক্তিশালী। সেখানে বিএনপি নেত্রী মাসউদা আফরোজ হক শুচি তৃণমূল থেকে দলীয় হাই কমান্ড পর্যন্ত জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এ আসনে বিগত দিনের তুলনায় জামায়াতে ইসলামীর ভোট ও জনপ্রিয়তা দুটোই বেড়েছে এমনটাই বলছেন দলটির নেতা কর্মীরা। এদিকে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য পলাতক থাকায় তাদের ভোট কোন পাত্রে যাবে এ নিয়েও চলছে নানান গুঞ্জন।
![]()
জামায়াতের প্রার্থী ড. মু. মিজানুর রহমান বলেন, জামায়াত একটি সুসংগঠিত দল। বিগত দিনের তুলনায় এখন জনপ্রিয়তা বেড়েছে দলটির। প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই তিনি মাঠে রয়েছে। দলমত নির্বিশেষে অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করার কথাও জানান তিনি। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে দাঁড়ি পাল্লার বিজয় হবে নিশ্চিত।
![]()
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক মাসউদা আফরোজ হক শুচি ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার তিন উপজেলার দলের নির্যাতিত, মামলা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নেতা কর্মীদের পাশে থেকে ফ্যাসিস্ট সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম। স্থানীয় তৃণমূল বিএনপি ও কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। এ ছাড়াও জনপ্রিয়তা বিবেচনার ক্ষেত্রে দল অবশ্যই আমাকে মনোনয়ন দেবেন ইনশাল্লাহ। মনোনয়ন পেলে আসনটিতে বিজয় উপহার দিতে পারবো ইনশাল্লাহ।
![]()
রহনপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র তারিক আহম্মেদ বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে বিএনপিকে সুসংগঠিত করে রেখেছি। নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের ৩১ দফা নিয়ে মাঠে কাজ করছি। মনোনয়ন পেলে আসনটিতে বিজয় উপহার দিতে পারব।
![]()
অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সেন্টু বলেন, হাসিনার আমলে বিএনপির নেতা কর্মীরা যখন মামলা, হামলায় ঘর বাড়ি ছাড়া, তখন সাধ্যমতো আইনি সহায়তা দিয়ে পাশে থেকেছি। দলের হায় কমান্ডের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ওয়ার্ড থেকে জেলা পর্যন্ত সব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এর প্রতিদান দল অবশ্যই দেবে।
![]()
রুয়েট ছাত্রদলের সাবেক নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হল মাসুদ বলেন, আমি শতভাগ আশাবাদী দল আমাকে যোগ্যতার ভিত্তিতে মনোনয়ন দেবেন ইনশাল্লাহ। দলের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ও সভা সমাবেশ, উঠান বৈঠকসহ তৃণমূল জনগণের দ্বারে দ্বারে কাজ করছি।
প্রতিনিধি/এসএস

